২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
সমুদ্রসৈকতে প্লাস্টিক দানব

সচেতনতা গড়ে উঠুক এ নিয়ে সারা দেশে

-

পলিথিন বা প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহারের ক্ষতিকর দিক আমাদের গ্রাস করছে। এটি জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে তৈরি হয়। এর উৎপাদন থেকে বিনাশ পুরোটাই উদ্ভিদ ও প্রাণিজগতের জন্য বিপুল ক্ষতি বয়ে আনে। পরিবেশের প্রধান তিনটি উপাদান- মাটি, পানি ও বায়ুর বিষম ক্ষতি করছে এটি। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, এর সাথে আমাদের মাখামাখি এখন এতটাই বেশি যে, খাদ্যের মাধ্যমে তা শরীরে অবাধে মিশে যাচ্ছে। ভাতের মধ্যে ক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণার অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। এর পরও এবিষয়ক সচেতনতা আমাদের নেই। আমরা প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার ও উৎপাদন বহুগুণ বাড়িয়ে চলেছি। কোনো কর্তৃপক্ষ যেন নেই, যে আমাদের জন্য এর উৎপাদন ও ব্যবহারের ওপর একটি নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে পারে। তবে কিছু ব্যক্তি ও বেসরকারি প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ আশাজাগানিয়া। কক্সবাজারে সমুদ্রসৈকতে বানানো একটি মূর্তি এ ধরনের একটি উদ্যোগ।
একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন দেশের সবচেয়ে ব্যস্ত পর্যটন এলাকায় একটি প্লাস্টিক দানব বানিয়েছে। উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে জানানো হচ্ছে- প্লাস্টিক উচ্ছিষ্ট দিয়ে বানানো এটি এশিয়া মহাদেশের সর্বোচ্চ দানব। ওই এলাকায় এখন পর্যটনের মৌসুম চলছে। সারা দেশ থেকে হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমাচ্ছে সৈকতে। ঘুরতে আসা পর্যটক ও স্থানীয়দের প্লাস্টিক বর্জ্যরে দূষণ সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করতে মূর্তিটি বানানো হয়েছে। সর্বসাধারণের প্রদর্শনের জন্য এটি ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকবে। নয়া দিগন্তের খবরে জানা যাচ্ছে, দৈত্যাকৃতির অবয়বটি দূর থেকে দেখে ভয় জাগবে। কাছে গেলে দর্শকদের আর ভয় থাকবে না। ভাস্কর্যটি বানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল তরুণ। এর জন্য ব্যবহার করা হয়েছে পর্যটকদের ব্যবহৃত ও পরিত্যক্ত প্লাস্টিক পণ্য। গত দুই মাস ধরে এটি সংগ্রহ করা হয়েছে সেন্টমার্টিন দ্বীপ, টেকনাফ ও কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত থেকে।
বর্জ্যরে পাশাপাশি এতে ব্যবহার করা হয়েছে কাঠ, পেরেক, আঠাসহ আরো কয়েকটি উপকরণ। প্রতীকী এ দৈত্য রক্ত-মাংসহীন হলেও এর মাধ্যমে প্রাণবৈচিত্র্যের যে ক্ষতি হচ্ছে তাকেই গুরুত্ব দিয়ে দেখানো হয়েছে। মানব দেহকে প্লাস্টিক ক্ষতবিক্ষত করছে। এ বিষয়টি এর মূল উপজীব্য। বেড়াতে আসা পর্যটকরা এ অঞ্চলে সৈকতের বালিয়াড়ি ও সাগরের পানিতে প্রতিদিন লাখ লাখ প্লাস্টিক বর্জ্য ফেলছে। এতে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে দূষণ। হুমকির মধ্যে পড়ছে সামুদ্রিক জীব ও মানবজীবন। এই দূষণ রোধ ও সচেতনতা বৃদ্ধি দানব মূর্তি বা ভাস্কর্যটি তৈরির প্রধান লক্ষ্য। জানা যায়, স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানটি এই সচেতনতাকে আরো বেগবান করতে ১৩ ডিসেম্বর চালু করেছে একটি এক্সচেঞ্জ স্টোর। সেখানে যে কেউ প্লাস্টিক বর্জ্য হিসেবে ফেলে দেয়া খালি পাত্র, বোতল ও পলিথিনের প্যাকেটের বিনিময়ে নিতে পারবেন চাল, ডাল, তেল, চিনি ও লবণসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যদ্রব্য।
তরুণদের এ প্রদশর্নীকে স্বাগত জানাতে হয়। এটি এমন এক সময় তারা সামনে পেল যখন প্লাস্টিক দূষণে আমাদের জাতীয় বিপর্যয় ঘটছে। গত ১৫ বছরে দেশে পলিথিনের ব্যবহার বেড়েছে তিনগুণ। এর বর্জ্য যত্রতত্র ফেলায় ভরাট হচ্ছে নদী, খাল ও পয়ঃনিষ্কাশনের নালা। এতে ভেঙে পড়ছে ঢাকাসহ সব শহরের ড্রেনেজ ব্যবস্থা। ইদানীং ওয়ানটাইম প্লাস্টিকের কাপের বিপুল ব্যবহার শুরু হয়েছে। কাঁচাবাজার, দোকান, রেস্তোরাঁয় ব্যবহার হচ্ছে পলিথিন ব্যাগ। একবার ব্যবহারের পর এগুলো আমরা যত্রতত্র ফেলে দিচ্ছি। বৈশ্বিক প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহারের মাত্রাও বর্ধমান। প্রতি ১১ বছরে বিশ্বে সমুদ্রে প্লাস্টিক জমা হওয়ার পরিমাণ দ্বিগুণ হচ্ছে। সেখান থেকে সামুদ্রিক প্রাণী ও পাখিদের পেটে যাচ্ছে। এতে আমাদের খাদ্য শৃঙ্খলে ঢুকে পড়ছে প্লাস্টিক। জানা যায়, আমাদের দেশে ক্যান্সার আক্রান্তের হার বহু বেড়েছে। এর অন্যতম কারণ, খাদ্যচক্রে প্লাস্টিক কণা প্রবেশ বলে উল্লেখ করছেন বিশেষজ্ঞরা। কৃত্রিম তন্তু থেকে তৈরী স্বল্পসময়ে ব্যবহারের পণ্য নিয়ে এখনই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া দরকার। এখনই এই ক্ষতিকর প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদন ও ব্যবহারের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement
৭ উইকেট তুলে নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে চেপে ধরেছে বাংলাদেশ লাখ টাকার প্রলোভনে শাহবাগে এত লোক কিভাবে এলো? কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগারে কয়েদির মৃত্যু হিজবুল্লাহ কমান্ড সেন্টারে ইসরাইলি হামলা রাজশাহীতে প্রথম আলো পত্রিকায় আগুন ও সাইনবোর্ড ভাঙচুর রোহিঙ্গাদের আশ্রয়স্থলের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে : পররাষ্ট্র সচিব আড়াইহাজারে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, আহত ১৬ শ্রম সংস্কারে অন্তর্বর্তী সরকারের অগ্রগতিতে মার্কিন প্রতিনিধিদলের প্রশংসা আইপিএলে রেকর্ড গড়লেন ১৩ বছর বয়সী বৈভব সিলেটে ট্রাক ও বাসচাপায় নিহত ২ মানিকগঞ্জে প্রলোভন দেখিয়ে শাহাবাগে লোক নেয়ার মূলহোতা দবিরসহ আটক ৫

সকল