২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
একই ঘাট দুই সংস্থার ইজারায়

সঙ্ঘাতের পরিবেশ চাই না

-

একটি জাতীয় দৈনিকের কুড়িগ্রাম জেলা বার্তা পরিবেশক এবার এক রিপোর্টে জানালেন, এ জেলার চিলমারী, রাজীবপুর ও রৌমারী- এ তিনটি উপজেলার বিভিন্ন ঘাট নিয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থা বা বিআইডব্লিউটিএ এবং কুড়িগ্রাম জেলা পরিষদের মাঝে দ্বন্দ্বের শঙ্কা বিদ্যমান! সরকারের এই দুই সংস্থার রশি টানাটানির আপাতত অবসানের আশা থাকলেও তাদের মধ্যে টানাহেঁচড়া অব্যাহত আছে। তাই এ নিয়ে সেখানকার নৌঘাটে উত্তেজনা টানটান। কারণ, হয়তো রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বেঁধে যাবে এ দু’টি সংস্থার মাঝে।
উভয়পক্ষ থেকে জানা যায়, সম্প্রতি মহামান্য হাইকোর্ট তিন উপজেলার ২২টি খেয়াঘাটের মধ্যে চিলমারীর রমনা শ্যালো ও জোড়গাছ ঘাট দু’টি বিআইডব্লিউএ-কে দিয়েছেন এক আদেশে। অন্য ঘাটগুলো আগের মতো কুড়িগ্রাম জেলা পরিষদই চালাবে। এ জেলার চিলমারী, রৌমারী ও রাজীবপুরের ঘাটগুলোর মালিকানা নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ সংশ্লিষ্ট দুই পক্ষের চরম দ্বন্দ্ব ও উত্তেজনা ছিল। অভিন্ন ঘাটকে ভিন্ন ভিন্ন কর্তৃপক্ষ ইজারা দেয়ায় স্থানীয় জনগণ বিভ্রান্ত হয় এর মালিক কে, তা নিয়ে। তা ছাড়া দুই পক্ষের লোকেরাই বিভিন্ন সময়ে দ্বন্দ্ব-সঙ্ঘাতে জড়িয়ে পড়েছিল। এ কারণে ঘাটে পারাপারে স্বভাবতই যাত্রী সাধারণ আতঙ্কে ছিল। সর্বশেষ, মহামান্য হাইকোর্টের রায় এবং বিআইডব্লিউটিএ’র গেজেট অনুসারে দ্বন্দ্ব মিটে যায়; তবে তা সাময়িকভাবে। কারণ বিআইডব্লিউটিএ আজও রৌমারী ও রাজীবপুর নৌঘাট নিজেদের বলে দাবি করছে। এ নিয়ে দুই পক্ষেই মাঝে টানটান উত্তেজনা রয়েছে।


কুড়িগ্রাম জেলা পরিষদের সহকারী প্রকৌশলী মো: মিজানুর রহমান বলেছেন, দীর্ঘকালীন দ্বন্দ্বের অবসানে মহামান্য হাইকোর্ট গত ১০ নভেম্বর তাদের এক রায়ে চিলমারী উপজেলার রমনা শ্যালোঘাট এবং জোড়গাছ ঘাট বিআইডব্লিউটিএ-কে প্রদান করেছেন সত্য; তবে এর বাইরে এই তিন উপজেলার ঘাটগুলো- ফকিরের হাট, খেয়ারচর, গোয়ালের চর, ভেলামারী, নটারকান্দি, বাগুয়ার চর (খঞ্জনমারা), ফুলুয়ারচর, কুটিরচর, মদাব্যাপারি ঘাট, কোদালকাটি, খারুভাজ, তারাবর, আজিজ মাস্টার ঘাট, মদনের চর, বলদমারা, কর্ত্তিমারী, খেওয়ার ফাঁড়ি, পালের চর, চাক্তাবাড়ী, প্রভৃতি খেয়াঘাট কুড়িগ্রাম জেলা পরিষদ কর্তৃক পরিচালনার্থে মহামান্য হাইকোর্টে রায় দেয়া হয়েছে। কিন্তু এর বিরুদ্ধে বিআইডব্লিউটিএ আপিল করলে মহামান্য হাইকোর্টের আপিল বিভাগ রায় দিয়েছেন, ‘ঘাটগুলো যে অবস্থায় যাদের নিয়ন্ত্রণে আছে সেগুলো তাদের কাছেই থাকবে এবং এ নিয়ে পরে হবে শুনানি।’ এ দিকে, বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ রায়ের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে যাচ্ছে। তাই এ বিষয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে যাচ্ছে। কুড়িগ্রাম জেলা পরিষদের বিরুদ্ধে এবং মহামান্য হাইকোর্টের রায় নিয়ে মামলা এখনো প্রক্রিয়াধীন রয়েছে মহামান্য হাইকোর্টের আপিল বিভাগে।’ বিআইডব্লিউটিএ’র বাঘাবাড়ী নৌবন্দর সহকারী বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা মো: আসাদুজ্জামান জানিয়েছেন, চিলমারী উপজেলার রমনা ঘাট ও জোড়গাছ ঘাট আমাদের কর্তৃপক্ষের প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণে থাকবে। রাজীবপুর ও রৌমারী নিয়ে হাইকোর্টে মামলা চলছে। এ ব্যাপারে গেজেট হয়ে গেলে সেগুলোও আমরা পাবো।’ রৌমারীর ইউএনও পবনকুমার বলেন, ‘এ ব্যাপারে আগে জানতে হবে। তারপর বলব।’ তিনি কোনো তথ্য দেননি এ বিষয়ে।
এ নিয়ে সঙ্ঘাতের আশঙ্কা অবিলম্বে তিরোহিত করতে এখন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সচেতনতাই সবার কাম্য। অন্যথায়, উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা কর্তৃপক্ষের সম্ভব নাও হতে পারে।

 


আরো সংবাদ



premium cement