বাজার অব্যবস্থাপনা সঙ্কট বাড়াচ্ছে
- ০৩ ডিসেম্বর ২০২২, ০০:০০
দেশে নিত্যপণ্যের দাম বেশ কয়েক মাস ধরে চড়া। এর মধ্যে খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে আগের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি। বিশেষ করে চাল, আটা, চিনি ও ভোজ্যতেলের দাম এখন লাগামছাড়া। ফলে অসহনীয় হয়ে উঠেছে সাধারণ মানুষের জীবন।
বাজারে আমন চাল চলে এসেছে। আমাদের প্রধান খাদ্যপণ্য চালের মজুদ পরিস্থিতিও ভালো। বাজারে সরবরাহের কমতি নেই। অবাক করা বিষয় হলো- তার পরও কমছে না চালের দাম। বাড়তি দামে এখনো বিক্রি হচ্ছে। বাজারে নতুন চাল এলেও মোটা চাল ব্রি-২৮ এখনো ৬২ থেকে ৬৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মিনিকেট ৭৫ থেকে ৮০ টাকা ও নাজিরশাইল ৮০ থেকে ৮৫ টাকা কেজি।
এ ব্যাপারে খুচরা বিক্রেতাদের বক্তব্য, গত মাসের মাঝামাঝি থেকে বাজারে নতুন চাল এসেছে। পাইকারি বাজারে দাম না কমায় খুচরা পর্যায়ে আগের দামে বিক্রি হচ্ছে। তারা বলছেন, আমনের নতুন চালের প্রভাব এখনো পড়েনি। দাম না কমার কারণ হিসেবে পাইকারি চাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবার ধানের দাম বাড়তি থাকায় বাজারে চালের দাম কমছে না। কিছু দিনের মধ্যে নতুন চাল ব্যাপকভাবে প্রবেশ করলে তখন চালের দাম কিছুটা কমতে পারে।
শুধু যে চালের বাজারের অবস্থাই এমন তা কিন্তু নয়, আটা ও চিনির দামও বেশ কিছু দিন ধরে চড়া। সম্প্রতি চিনির দাম কেজিতে ১২ টাকা বাড়িয়ে খোলা চিনি ১০২ টাকা করা হয়েছে। প্যাকেটজাত চিনি প্রতি কেজি ১০৭ টাকা। চিনির দাম বাড়ানোর পরও বাজারে এ নিত্যপণ্যটির সরবরাহ স্বাভাবিক হয়নি। কোম্পানিগুলো প্যাকেট চিনি সরবরাহ কমিয়ে দেয়ায় বাজারে এর সঙ্কট দেখা দিয়েছে। বাজারে খোলা চিনি পাওয়া গেলেও সরকারনির্ধারিত দামের চেয়ে কেজিতে ১৩-২০ টাকা বাড়তি ১১৫-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, সরকার যে হারে চিনির দাম নির্ধারণ করেছে, সেই হারে তারা পাইকারি পর্যায়েও কিনতে পারছেন না। এতে তাদের বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এদিকে আটার দাম বেড়ে এখন এক কেজির প্যাকেট ৭৫ টাকা ও দুই কেজির প্যাকেট ১৫০ টাকা। খোলা আটা ৬৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। খোলা ময়দা ৭৫ টাকা কেজি।
দেশের বাজারে খাদ্যদ্রব্যের দাম সহনীয় করতে হলে শুধু পর্যাপ্ত মজুদ বা সরবরাহ থাকলেই হবে না; বাজার ব্যবস্থাপনায় সরকারি সংস্থাগুলোর তীক্ষè নজরদারি থাকতে হবে। যেহেতু আমাদের সমাজবাস্তবতায় ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর অতি মোনাফার মানসিকতা প্রবল- এ কারণে যেকোনো অজুহাতে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয় ব্যবসায়ী সম্প্রদায়। সিন্ডিকেট করে কারসাজির মাধ্যমে বাজারে পণ্যের দাম বাড়ানোর প্রবণতা অতীতের চেয়ে এখন আরো তীব্র হয়েছে; কিন্তু সেই তুলনায় বাজারে নজরদারি করতে দেখা যায় না। এর অবশ্য কারণও বিদ্যমান রয়েছে। যারা ব্যবসায় নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন, তারা সরকারের ছত্রছায়ায় এই অপকর্ম করেন। এই বাস্তবতা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। তাই সর্ষের মধ্যেই ভূত লুকিয়ে রয়েছে; তা আগে ছাড়াতে হবে।
সঙ্গত কারণে বাজার বিশ্লেষকদের মতো আমরাও মনে করি, সম্ভাব্য বিশ্বমন্দাকে পুঁজি করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ধান-চাল, আটা-ময়দা ও চিনি মজুদ করছেন। এতে বাজারে নতুন চাল এলেও দাম কমছে না। এ জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট তদারকি সংস্থাগুলোকে এখন থেকে নজরদারি বাড়াতে হবে। তা না হলে সাধারণ মানুষের পকেট কেটে টাকা বের করে নেয়ার অপকর্ম বন্ধ হবে না। আর পণ্যের দাম কমার আশা করাও হবে দুরাশা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা