সর্বোচ্চ মনোযোগ দিন
- ২৮ নভেম্বর ২০২২, ০০:০০
দেশে প্রবাসী আয় ক্রমেই নিম্নগামী। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ২০৯ কোটি ডলার। আগস্টে ২০৩ কোটি ডলার। পঞ্চম মাসে এসে আয় কমেছে রকেট গতিতে। এরপর নিয়মিত কমতে থাকে। সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্স কমে যায় এক ধাক্কায় ৫০ কোটি ডলার। আগের মাসে আসা ২০৩ কোটি ডলারের তুলনায় সেপ্টেম্বরে আসে ১৫৩ কোটি ডলার। এভাবে প্রতি মাসে রেমিট্যান্স কমছে।
সার্বিকভাবে রেমিট্যান্স কম আসার কারণ নিয়ে নানা মত দেয়া হয়েছে। মহামারী, যুদ্ধ পরিস্থিতি ইত্যাদি নানা ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এক রিপোর্টে জানা গেল, বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশী নারীশ্রমিকদের বেশির ভাগই বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠান না। তারা অবৈধ পথে হুন্ডি করে টাকা পাঠান। সংযুক্ত আরব আমিরাতে কর্মরত বাংলাদেশী নারীশ্রমিকরা কেন বৈধ উপায়ে টাকা না পাঠিয়ে হুন্ডির মাধ্যমে পাঠান সে বিষয়টি দেখতে মন্ত্রণালয়ের একটি দল দেশটি সফর করে।
নয়া দিগন্তের এক রিপোর্টে মন্ত্রণালয়ের ওই রিপোর্টের বরাত দিয়ে জানানো হয়, দেশটিতে প্রবাসী নারীশ্রমিকরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করেন। টাকা পাঠাতে তারা ব্যাংক বা এক্সচেঞ্জ হাউজে যাওয়ার সুযোগ পান না। ব্যাংক বা এক্সচেঞ্জ হাউজের এমন কোনো ব্যবস্থা নেই যাতে তাদের লোক গিয়ে শ্রমিকদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে দেশে পাঠাবেন। অন্য দিকে হুন্ডিওয়ালারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে শ্রমিকদের অর্থ সংগ্রহ করে অবৈধ উপায়ে দেশে পাঠান।
এ তথ্য জানতে জনগণের অর্থ ব্যয় করে মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের কেন বিদেশ সফর করতে হবে তা বোধগম্য নয়। এ জন্য দূতাবাস আছে। অর্থনৈতিক কূটনীতির বিষয়গুলো দেখাও দূতাবাসের দায়িত্ব। এর বাইরে রয়েছে শ্রম বিভাগ। নারীশ্রমিকরা কেন অবৈধ পথে দেশে টাকা পাঠান বিষয়টি যদি সেই বিভাগ না জানে তাহলে তারা কী দায়িত্ব পালন করে সে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। বোঝাই যাচ্ছে, দূতাবাসের সংশ্লিষ্ট বিভাগ দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেনি। অথবা কিছু লোকের বিদেশ সফরের আয়োজন করে দেয়াই ছিল এ তথ্য অনুসন্ধানের উদ্দেশ্য।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, অপেক্ষাকৃত সহজ ও স্বল্পতম সময়ে দেশে অর্থ পাঠানোর সুযোগ থাকায় প্রবাসীরা অবৈধ পথ তথা হুন্ডির মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠাতে স্বচ্ছন্দ্যবোধ করেন। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠালে দেশে সুবিধাভোগীদের অর্থ সংগ্রহ করতে সময় ও অর্থ ব্যয় করে ব্যাংকে যেতে হয়। অন্য দিকে, হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠালে গ্রাহককে কোনো ঝামেলা পোহাতে হয় না। হুন্ডিকারীর লোকেরা টাকা পৌঁছে দেয় গ্রাহকের ঘরে। এ ছাড়া বাংলাদেশে শুক্র-শনিবার এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে শনি-রোববার সাপ্তাহিক বন্ধের কারণে সপ্তাহে মাত্র চার দিন বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানো যায়। অন্য দিকে, হুন্ডির মাধ্যমে সপ্তাহে সাত দিনই টাকা পাঠানো যায়।
এটিও একটি বিস্ময়কর বিষয়, ব্যাংক ব্যবস্থায় এমন কোনো নিয়ম বা বিশেষ ব্যবস্থা উদ্ভাবন করা যায়নি যাতে সাত দিনই রেমিট্যান্স লেনদেন করা সম্ভব হয়। একটি দেশের সাথে সপ্তাহে তিন দিন আর্থিক লেনদেন বন্ধ থাকবে- এটি অভাবনীয় বিষয়। ব্যাংকগুলোর নিজ দায়িত্বে এমন ব্যবস্থা নেয়ার কথা যাতে সপ্তাহের সাত দিনই রেমিট্যান্স লেনদের করা সম্ভব হয়।
মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে কিছু সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- ব্যাংকে অ্যাপস/এমএফএসভিত্তিক ব্যবস্থা চালু; কর্মরত শ্রমিকদের ক্যাম্পে গিয়ে মোবাইল অ্যাপস ব্যবহারে সহায়তা করা; রেমিট্যান্স পাঠানোর সার্ভিস চার্জ সুবিধাভোগীদের পুনর্ভরণ করা; রেমিট্যান্স পাঠাতে এখন যে ২ দশমিক ৫ শতাংশ নগদ প্রণোদনা দেয়া হয় তা আরো বাড়ানো ইত্যাদি।
দেশে যে সময় বৈদেশিক মুদ্রার অভাবে আমদানি বন্ধের উপক্রম সে সময় এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সর্বোচ্চ মনোযোগ দেয়া দরকার।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা