পরিস্থিতি অনুকূল নয়
- ১৫ নভেম্বর ২০২২, ০০:০০
বাংলাদেশে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জন নিঃসন্দেহে দুরূহ একটি কাজ। এসডিজি হলো গোটা বিশ্ববাসীর শান্তি-সমৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে জাতিসঙ্ঘের একটি কর্মপরিকল্পনা। এর ১৭টি অভীষ্ট রয়েছে। রয়েছে ১৬৯টি নির্দিষ্ট লক্ষ্য ও ২৩০টি সূচক। লক্ষ্যগুলো ২০৩০ সালের মধ্যে বাস্তবায়নের কথা।
এসডিজির মূল বিষয় হলো- একটি দেশের সব মানুষের জন্য টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা। এ জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেসব উপাদান চিহ্নিত করা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে দারিদ্র্য নির্মূল, সুস্বাস্থ্য, গুণগত শিক্ষা, জেন্ডার সমতা, নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন, সাশ্রয়ী ও দূষণমুক্ত জ্বালানি, কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, শিল্প, উদ্ভাবন ও অবকাঠামো, অসমতা হ্রাস, টেকসই নগর ও জনপদ, পরিমিত ভোগ ও টেকসই উৎপাদন, জলবায়ু কার্যক্রম, শান্তি ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা।
এসব লক্ষ্য পূরণে জাতিসঙ্ঘসহ নানা অংশীজনদের সাথে মিলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, সুশাসন, পুলিশ সংস্কার, মানবাধিকার, পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন, প্রজনন স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা, জনসংখ্যা, শিশু ও মাতৃ উন্নয়ন, টিকা কর্মসূচি, মাতৃ ও শিশুপুষ্টি, খাদ্যনিরাপত্তা, কিশোর ও তরুণ উন্নয়ন, শিক্ষা, সাক্ষরতা, সংস্কৃতি, যোগাযোগ, ঐতিহ্য, শ্রম মানদণ্ড ও কর্মসংস্থান, অভিবাসন, শরণার্থী, মাদক ও অপরাধ, শিল্পোন্নয়ন, সক্ষমতা উন্নয়ন, প্রকল্প সেবা, স্বেচ্ছাশ্রম, সন্ত্রাস দমন, কৃষি উন্নয়ন, স্বাস্থ্যসেবা ও গবেষণা, এইচআইভি-এইডস, বাণিজ্য, আণবিক শক্তি, অন্তর্ভুক্তিমূলক আর্থিক রূপান্তর, অবকাঠামো ও পুনরুদ্ধার ইত্যাদি নানা ক্ষেত্রে কার্যক্রম চলছে।
তবে এসডিজির এ লক্ষ্যগুলো করতে হবে কাউকে পেছনে না ফেলে। অর্থাৎ ধর্ম-বর্ণ, রাজনীতি বা অন্য কোনো মতাদর্শগত কারণে বিভেদ না করে সবাইকে সাথে নিয়ে এগোতে হবে।
গত রোববার রাজধানীতে ‘বাংলাদেশে এসডিজি স্থানীয়করণ’ বিষয়ে এক আলোচনায় বক্তারা বলেছেন, এসডিজি স্থানীয়করণ অধিকারবোধ, মালিকানাবোধ ও সক্রিয় নাগরিকত্ববোধের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এখানে জবাবদিহি নিশ্চিত করা একটি বড় বিষয়। তারা বলেন, স্থানীয় সরকারে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করা ছিল একটি বড় ধরনের ভুল। কারণ এর মাধ্যমে স্থানীয় সরকার আগে যতটুকু অবদান রাখতে পারত এখন তা-ও পারছে না। এখানেই আসে দেশে বিদ্যমান সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নেয়ার প্রশ্ন। বর্তমান সময়ে দেশের রাজনীতি, অর্থনীতিসহ রাষ্ট্র পরিচালনার অনেক ক্ষেত্রে জবাবদিহির ঘাটতি রয়েছে।
উল্লিøখিত আলোচনায় স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, আমাদের স্থানীয় সরকারব্যবস্থা দিন দিন অকার্যকর হয়ে পড়ছে। স্থানীয় পর্যায়ে প্রচুর টাকা যাচ্ছে; কিন্তু টাকাগুলো সঠিকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে না। এ বক্তব্যের নিহিতার্থ হলো- সব অর্থ লোপাট হয়ে যাচ্ছে। কিভাবে কারা অর্থ লোপাট করছেন তা সবার জানা। এ লোপাট করার ধারা কেবল স্থানীয় সরকারে নয়, রাষ্ট্রীয় সব পর্যায়ে যে মরাত্মক আকারে বিদ্যমান, গত এক যুগে বিদেশে পাচার হওয়া অর্থের যে হিসাব নানা সূত্রে গণমাধ্যমে আসছে- তা থেকে সেটি স্পষ্ট।
এ সূত্র ধরে বলা যায়, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে আসলে জনস্বার্থে অর্থ ব্যয় হচ্ছে না। নারী নেতৃত্ব, বাল্যবিয়ে রোধ, স্যানিটেশনের মতো কিছু ক্ষেত্রে দেশ অনেকটা এগিয়েছে এটি ঠিক; তবে এগুলো এক যুগ আগের সাফল্য। গত ১৪ বছরের হালনাগাদ তথ্য কমই পাওয়া যায়।
দেশে বর্তমান সময়ে যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিদ্যমান তা শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ প্রতিষ্ঠায় কতটা অনুকূল, দেশের সব নাগরিকের জন্য ন্যায়বিচার কতটা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে সে প্রশ্ন প্রতিনিয়ত উঠছে। নির্বিচার দলীয়করণ, মানবাধিকার হরণ, নাগরিক অধিকারে হস্তক্ষেপ, গণমানুষের কণ্ঠরোধ ইত্যাদি ঘটনা অপ্রকাশ্য নয়। এসব প্রবণতা কোনোভাবে এসডিজি বাস্তবায়নের অনুকূল নয়। আর অনুকূল পরিবেশ ছাড়া লক্ষ্য অর্জন কখনো সম্ভব নয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা