মিলছে না আটা চিনি তেল
- ১০ নভেম্বর ২০২২, ০০:০৫
নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির প্রবণতা চলছে বছরের পর বছর ধরে। তবে বাজারে জিনিসপত্র পাওয়া গেলে কম হোক বেশি হোক, সাধ্যমতো সংগ্রহ করে খেয়ে বাঁচা যাবে- এমন একটি নিশ্চয়তা ছিল। সম্প্রতি সেই স্বস্তিটুকুও মুছে যাচ্ছে। বাজারে পণ্য সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিতে শুরু করেছে।
রাজধানীর অনেক জায়গায় টাকা নিয়ে বাজারে গেলেও মিলছে না নির্দিষ্ট পণ্য। বিশেষ করে আটা, চিনি ও বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ নেই, কোথাও তেল পাওয়া যায় তো চিনি নেই, কোথাও চিনি পাওয়া যাচ্ছে তো তেল পাওয়া যাচ্ছে না। পাশাপাশি দামও বাড়ছে আটা চিনি তেলের। সরবরাহে ঘাটতি হলে দাম বাড়বে, এটি অর্থনীতির প্রাথমিক সূত্র। সেটিই ঘটছে। কিছু দিন আগে সরকারিভাবে চিনি ও সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। এখন নতুন করে বেড়েছে আটার দাম।
পত্র-পত্রিকার রিপোর্ট থেকে বাজার পরিস্থিতির এ চিত্র উঠে আসছে জনসমক্ষে। কিন্তু ভুক্তভোগী মানুষ যেটি চাক্ষুষ করেন এবং প্রতিদিন বাজারে গিয়ে যে তিক্ত অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হন তা জানার জন্য গণমাধ্যমের খবর দেখার দরকার পড়ে না।
মাত্র এক বছরের ব্যবধানে আটা-ময়দার দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। কমেছে আমদানির পরিমাণও। স্বাভাবিকভাবে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে আটা-ময়দার বাজারে। পাড়া-মহল্লøার ছোট দোকানিরা চিনি বিক্রি করছেন বেশি দামে। বলছেন, বেশি দামে সংগ্রহ করে সরকারি রেটে বিক্রির উপায় নেই। এ জন্য অনেক দোকানি মজুদ থাকার পরও পুলিশের হয়রানির ভয়ে গ্রাহকদের ফিরিয়ে দিচ্ছেন। বাজারে সরবরাহ যে কম সেটিও মিথ্যা নয়। বেশির ভাগ কোম্পানির সরবরাহ কমেছে।
সরবরাহের এ পরিস্থিতি অকারণে তৈরি হয়নি। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে অজুহাত হিসেবে দেখানোর একটি সুবিধা মন্ত্রীরা নিচ্ছেন বটে; কিন্তু বাস্তবে আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যমূল্য কমতির দিকে। আসল সঙ্কট আমাদের বিশৃঙ্খল অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার মধ্যে। ভোগ্যপণ্য আমদানিকারক ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানের নেতারা বলছেন, ডলার সঙ্কটে ব্যাংকে এলসি খুলতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এ সঙ্কটে গত দু’মাস ধরে বেশির ভাগ ব্যাংক এলসি খুলছে না। ফলে আমদানি কমে গেছে। অন্য দিকে, এখনো শিল্পে গ্যাস-বিদ্যুতের সরবরাহ কম- তাই উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।
একই সাথে ব্যবসায়ীদের কিছু সিন্ডিকেটের কারসাজিও যে নেই তা বলা যায় না। মাত্র কদিন আগে ভোজ্যতেলের দাম দুই দফা বাড়ানো হয়েছে। এখন আবার আরেক দফা দাম বাড়াতে চান ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীরা। তারা এ দাবি জানিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছেন। দাম বাড়ানোর পর বাড়তি মুনাফার সুযোগ নিতে তারা সরবরাহে কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করেছেন কি না এমনও জল্পনা আছে সাধারণের মধ্যে।
আটা-ময়দা কোনো বিলাসপণ্য নয়। চালের দাম নাগালের প্রায় বাইরে চলে যাওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষের শেষ ভরসা হলো আটা-ময়দা। এর আমদানি হওয়ার কথা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে; কিন্তু তা হচ্ছে না। এখন সেখানেও টান পড়তে শুরু করেছে। মানুষ কোন ভরসায় বাঁচবে সেটিই প্রশ্ন হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
যেকোনো পরিস্থিতিতে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, চাল, ডাল, মাছ, মুরগি, সবজির আমদানি ও উৎপাদনে সব ধরনের সহায়তা দেয়া হবে। কৃষি উৎপাদন বাড়াতে হবে। তবে বাস্তব পরিস্থিতি ভিন্ন। আমদানি হচ্ছে না। কবে উৎপাদন বাড়বে আর মানুষ পেটপুরে খাবে, এই মুহূর্তের ক্ষুধা কিভাবে মিটবে তা-ই এখন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে সাধারণ মানুষের কাছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা