এ প্রবণতা দেশের জন্য ক্ষতিকর
- ০৪ নভেম্বর ২০২২, ০০:০০
বিএনপির সমাবেশে লোকসমাগম ঠেকাতে ক্ষমতাসীন দলের শিষ্টাচারবহির্ভূত কার্যক্রম বরিশালে নতুন মাত্রা পেয়েছে। সড়ক ও নৌপথে ধর্মঘট ডাকার পাশাপাশি এবার অপ্রচলিত ছোটখাটো নছিমন-করিমনসহ সব ধরনের থ্রি-হুইলারও বন্ধের ঘোষণা দেয়া হয়েছে সেখানে। এখানেই তাদের এই অন্যায় অপচেষ্টা থেমে থাকছে না, হামলা ভাঙচুর সন্ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে কয়েক দিন আগে থেকে জনস্রোত থামিয়ে দিতে চাইছে। সাথে সাথে পুলিশ প্রশাসনের একটি অংশকে এ অন্যায়ে অতিমাত্রায় সক্রিয় দেখা যাচ্ছে। তারাও দলীয় ক্যাডারদের মতো বিভিন্নভাবে সমাবেশগামী মানুষের যাত্রায় বাধা দিতে নানাভাবে কার্যক্রম চালাচ্ছে। বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা প্রতিবাদ কর্মসূচি থেকে কিছু ক্ষেত্রে তাদের সীমালঙ্ঘন অস্বাভাবিক নয়। এ অবস্থায় দেখা যাচ্ছে, তারাই সেখানে সর্বোচ্চ ধৈর্য প্রদর্শন করছে। অন্য দিকে সরকারি দল হয়েও আওয়ামী লীগ ও তাদের বিভিন্ন অঙ্গ-সংগঠন আইন অমান্য করে নানা অশোভন অযাচিত আচরণের তীব্রতা বাড়িয়েই চলেছে।
৫ নভেম্বর বরিশালে সমাবেশকে কেন্দ্র করে আশপাশের জেলাগুলোতে বিএনপি নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে হামলা ভাঙচুর ভয়ভীতি প্রদর্শনের খবর আসছে। বুধবার সন্ধ্যায় পটুয়াখালী জেলা বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়েছে। তালা ভেঙে দুর্বৃত্তরা জিয়াউর রহমানসহ দলটির শীর্ষ নেতাদের টাঙানো ছবি গুঁড়িয়ে দিয়েছে। কার্যালয়ের ভেতরে রক্ষিত আসবাবপত্র ও মালামাল তছনছ করেছে। হামলার সময় তিন পথচারী আহত হন। তার কিছুক্ষণ আগে বিএনপির জেলা সদস্য সচিব স্নেহাংশু সরকার কুট্টির ব্যবসায়িক দফতরে হামলা চালানো হয়। তারা সেখানে থাকা আট-দশটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। পুলিশ এই দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নিতে না পারলেও এর ন্যক্কারজনক ঘটনার প্রতিবাদে সেখানে জড়ো হওয়া বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
এদিকে সমাবেশ উপলক্ষে অন্যান্য জেলার তৃণমূলে চালানো বিএনপির প্রচারণা কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে ক্ষমতাসীন দল। তাদের মাঠপর্যায়ের কর্মীদের যুবলীগ-ছাত্রলীগ মারধর ও অপমান লাঞ্ছনা করে তাড়িয়ে দিতে অপতৎপরতা চালাচ্ছে। হুমকি ধমকি দিয়ে ভীতি ছড়িয়ে দেয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলা দিয়ে গ্রেফতার ও এলাকা ছাড়া করার কাজ আরো আগে থেকেই করা হয়েছে। অন্য দিকে, বরিশাল শহরজুড়ে ছাত্রলীগ উসকানিমূলক ও আক্রমণাত্মক শোডাউন করছে। বুধবার বিকেলে শতাধিক মোটরসাইকেল নিয়ে বিএনপি কার্যালয়ে সামনে মহড়া দেয় তারা। সেখান থেকে বিএনপিকে লক্ষ্য করে অবমাননাকর স্লোগান দিতে থাকে।
বৃহত্তর বরিশালজুড়ে পুলিশও আওয়ামী লীগের পাশাপাশি বিএনপির ওপর নিপীড়নমূলক অভিযান চালাচ্ছে- এমন খবর আসছে। পিরোজপুরের বিভিন্ন উপজেলায় বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের পরিবারের সদস্যদের সাথে দুর্ব্যবহার ও নাজেহাল করছে। বরগুনার পাথরঘাটা থেকে জানা যায়, পুলিশ বিএনপির নেতাকর্মীদের বাড়িতে ঢুকে গভীর রাতে দরজার কড়া ও বেড়ার টিন পিটিয়ে সজাগ করে তাদের সমাবেশে অংশ না নিতে হুমকি দিচ্ছে। বরিশাল শহরে সমাবেশ উপলক্ষে আসা বিএনপি নেতাকর্মীদের বিপদে ফেলতে আবাসিক হোটেলে অভিযানের নামে হয়রানি করা হচ্ছে। সমাবেশের আগে কেন তাদের এমন অভিযান তার জবাবে এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, অনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে এটি তাদের রুটিন কাজ।
গণতান্ত্রিক দেশে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন মানুষের স্বীকৃত অধিকার। সরকারের কাজ হচ্ছে এ ধরনের কার্যক্রমকে সহায়তা করা। আমরা দেখতে পাচ্ছি, বিএনপির দেশজুড়ে সিরিজ সমাবেশের প্রত্যকটিতে সরকার ছলেবলে অপকৌশলে এতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। শেষ পর্যন্ত সরকারি দলের পক্ষ থেকে নগ্নভাবে বাধা দেয়া হচ্ছে। এ কাজে তারা অন্যায়ভাবে পুলিশকেও ব্যবহার করছে। এমন মারমুখী রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তন করা না গেলে বাংলাদেশের চলমান বিপর্যয় আরো গভীর হবে। কোনোভাবেই আমাদের মুক্তি মিলবে না। তাই যারা এসব অন্যায় করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। বোধোদয় হতে যত বিলম্ব ঘটবে সঙ্কট তত জটিল হবে। তাই সব ধরনের অপকৌশল এখনই বন্ধ করে সঙ্কট উত্তরণে সরকারের ইতিবাচক মানসিকতা গ্রহণ করাই একমাত্র পথ হতে পারে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা