২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
জাতিসঙ্ঘ র‌্যাপোর্টিয়ারের প্রতিবেদন

জলবায়ু বিষয়েও অসহিষ্ণুতার প্রশ্ন

-

জলবায়ু পরিবর্তন বাংলাদেশের জন্য গুরুতর সমস্যা, কিন্তু এর মোকাবেলায় সরকারের কার্যক্রম অনেক ক্ষেত্রে ইতিবাচক নয়। পরিবেশগত সব উদ্বেগ, প্রতিবাদ উপেক্ষা করে এমন সব প্রকল্প নেয়া হয়েছে যা পরিবেশ ধ্বংস করবে বলে বিশেষজ্ঞরা বারবার সতর্ক করেছেন। তাতে কর্ণপাত করা হয়নি। প্রতিবাদ বিক্ষোভ করতে গেলে গ্রেফতার-নির্যাতনের মাধ্যমে স্তব্ধ করা হয়েছে। এমনকি গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বিষয়গুলো আন্তর্জাতিক বিশে^র দৃষ্টি এড়িয়ে যায়নি।
গত রোববার ঢাকায় প্রকাশ করা হয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে সহযোগিতাবিষয়ক জাতিসঙ্ঘের বিশেষ র‌্যাপোর্টিয়ার ইয়ান ফ্রাইয়ের প্রতিবেদন। তাতে উঠে এসেছে বাংলাদেশে পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কাজ করা অধিকারকর্মীদের হয়রানির প্রসঙ্গ। বলা হয়েছে মানুষের কথা বলার অধিকার কিভাবে সঙ্কুুচিত হচ্ছে। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মতো পরিবেশবিধ্বংসী প্রকল্পের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় কিভাবে প্রতিবাদকারীদের গ্রেফতার ও হয়রানি করা হয়েছে, এসেছে সেই দৃষ্টান্তও। প্রতিবেদনে বলা হয়, পরিবেশ সুরক্ষা ও জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য ক্ষতিকর কাজের বিরোধিতা করায় অনেকেই ‘অজানা ব্যক্তির’ মাধ্যমে হত্যার হুমকি পাচ্ছেন।
প্রতিবেদনে জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের বাংলাদেশ সফরের প্রসঙ্গও এসেছে। সরকার পরিবেশ ও জলবায়ু অধিকারকর্মীদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রয়োগের বিষয়টি অস্বীকার করলেও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে জাতিসঙ্ঘ হাইকমিশনারের তদন্তের আহ্বানে সরকার যে সাড়া দেয়নি প্রসঙ্গক্রমে সেটি উল্লেখ করা হয় ইয়ান ফ্রাইয়ের প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদন প্রকাশের অনুষ্ঠানে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি, কর্মকর্তা ও নাগরিক সমাজের মতামত নেয়া হয়। অনুষ্ঠানে মতামত তুলে ধরে পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় ১২ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ওই বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরুদ্ধে মন্তব্য করায় এক তরুণকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার করে কারাগারে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া সিরাজগঞ্জ ও নেত্রকোনার মতো এলাকায় খেলার মাঠ দখল করে আশ্রয়ণ প্রকল্প করা হয়েছে। প্রতিবাদ করায় অনেককে গ্রেফতার করা হয়।
ইয়ান ফ্রাই জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি আসন্ন বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে তুলে ধরা এবং এর জন্য একটি স্বতন্ত্র তহবিল তৈরির কথা বলেছেন। অধিকারকর্মীদের হয়রানি ও মামলা দেয়া বন্ধ করা, এ বিষয়ে জনসমক্ষে কথা বলার অধিকার নিশ্চিত করা এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধন করে পরিবেশকর্মীদের এর আওতার বাইরে রাখার সুপারিশ করেছেন।
বাংলাদেশে উপকূলের কয়েক কোটি মানুষ লবণাক্ততাসহ নানা সমস্যার মধ্যে আছে। জলবায়ু পরিবর্তনে উদ্বাস্তু হতে পারে দুই কোটি মানুষ এমন তথ্য সবাই জানে; কিন্তু কার্যকর পদক্ষেপ নেই। এক হিসাবে জানা যায়, বছরে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতির এ পরিমাণ ২০৩০ সাল নাগাদ জিডিপির ২ শতাংশ এবং ২০৫০ সালে ৯ শতাংশে পৌঁছাতে পারে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ তীব্র হয়েছে সারা দেশে। সম্প্রতি উত্তরাঞ্চলে উপর্যুপরি ভয়াবহ বন্যা তার আলামত। নিজস্ব অর্থে এসব সমস্যার সমাধান বাংলাদেশের সামর্থ্যরে বাইরে। এ জন্য জাতিসঙ্ঘসহ উন্নত দেশগুলোর তহবিল রয়েছে; কিন্তু সরকার সেগুলোর অর্থ আনতে পারেনি। এমনকি জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশে বার্ষিক ক্ষতির পরিমাণ কত সে বিষয়েও সমন্বিত কোনো গবেষণাভিত্তিক তথ্য-উপাত্ত নেই সরকারের কাছে। অথচ বিশ^ জলবায়ু সম্মেলন আসন্ন।
মূলত রাষ্ট্র পরিচালনার পুরো বিষয়টিই যে রাজনৈতিক অঙ্গীকার ও সুশাসনের সাথে জড়িত বর্তমান সরকারের অবস্থান তা থেকে যোজন যোজন দূরে।


আরো সংবাদ



premium cement
বিয়ের প্রলোভনে আ’লীগ নেতার বিরুদ্ধে নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ ট্রাম্প দায়িত্ব নেয়ার প্রথম দিনই চীন-মেক্সিকো-কানাডার ওপর শুল্ক আরোপ করবেন আ’লীগ ইসলামী আদর্শকে জঙ্গিবাদ বলে এখন জঙ্গি ও সন্ত্রাসী হয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে : আলাউদ্দিন সিকদার শিক্ষার্থীদের আন্দোলন কঠোর হয়ে দমন করতে চাই না : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা শরণখোলা প্রেসক্লাবের নির্বাচনে আলী সভাপতি-আনোয়ার সম্পাদক রিমান্ড শেষে কামরুল-জ্যাকবকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ সংবিধানে যেসব সংস্কার প্রস্তাব দিলো বিএনপি যমুনা রেল সেতু উদ্বোধন জানুয়ারিতে, ট্রায়াল ট্রেনের যাত্রা শুরু চিন্ময়ের মুক্তি নিয়ে বাংলাদেশের সাথে আলোচনা করতে ভারতকে অনুরোধ ইসকনের শেখ হাসিনাসহ ৪৪ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে হেফাজতের অভিযোগ চিন্ময় কৃষ্ণের জামিন নামঞ্জুর

সকল