২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
মধ্যবিত্ত-নিম্ন মধ্যবিত্তদের অসহায়ত্ব

উত্তরণে সামাজিক সুরক্ষা প্রয়োজন

-

সাম্প্রতিক সময়ে সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় জীবনযাপনের ব্যয় বেড়ে গেছে। এতে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণী অসহায় হয়ে পড়েছে। অভাব-অনটনে দিন কাটলেও তাদের সহায়তায় সামাজিক সুরক্ষার তেমন কোনো উদ্যোগ নেই। ফলে এ দুই শ্রেণীর অনেকে আবার দরিদ্রের কাতারে নেমে যাচ্ছেন।
এই বাস্তবতায় দেশের মধ্যবিত্তদের জন্যও সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি প্রয়োজন বলে মনে করে অর্থনৈতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সানেম। গত বৃহস্পতিবার এক ওয়েবিনারে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক বজলুল হক খন্দকার বলেন, মালয়েশিয়ার মতো দেশে দেখা গেছে, কোভিডের অভিঘাতে সে দেশের দরিদ্রদের তুলনায় মধ্যবিত্তরাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমাদের দেশেও মধ্যবিত্তরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সানেম যেখানে মনে করে মধ্যবিত্তদের জন্যও সামাজিক সুরক্ষা প্রয়োজন, সেখানে নিম্নবিত্তদের বিষয়টি না বলাই ভালো।
সবার জানা, মধ্যবিত্ত-নিম্ন মধ্যবিত্তদের আয় সীমিত। দুর্যোগ বা উচ্চ মূল্যস্ফীতির সময় এ মানুষগুলো সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, দুর্যোগের সময় কারো কাছে হাত পাততে পারে না, আবার লাইনে দাঁড়িয়ে স্বল্পমূল্যের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতেও আত্মসম্মানে লাগে। ফলে তাদের কষ্ট কারো চোখে পড়ে না। তাই সরকারের উচিত এ দুই শ্রেণীর জন্য প্রথমত, সামাজিক নিরাপত্তা খাতের আওতা বাড়িয়ে দেশের অন্তত ৫৫-৬০ শতাংশ মানুষকে এর আওতায় নিয়ে আসার পদক্ষেপ নেয়া। এটি সত্যি যে, সরকারের সীমাবদ্ধতা আছে, সরকারের একার পক্ষে এটি করা সম্ভব না-ও হতে পারে। দ্বিতীয়ত, মানুষের যখন অবস্থা ভালো থাকে, তখন পেনশন, বেকারত্ব বীমা বা স্বাস্থ্যবীমার মতো সুরক্ষা মানুষ নিতে পারে। দুর্যোগের সময় মানুষ যেন সেখান থেকে ঋণ নিতে পারে, সে রকম ব্যবস্থা থাকতে হবে। এ দু’টি মাধ্যমে দেশে সামাজিক নিরাপত্তাব্যবস্থা দাঁড়িয়ে যেতে পারে।
পরিসংখ্যান বলছে, সরকার সামাজিক নিরাপত্তা খাতে জিডিপির ২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ৩ শতাংশ বরাদ্দ দিয়েছে। তবে সরকারি কর্মচারীদের পেনশন বাদ দিলে তা ১ দশমিক ৫ থেকে ১ দশমিক ৭ শতাংশে নেমে আসে। আবার সুবিধাভোগী নির্বাচনেও নানা ধরনের সমস্যা আছে। যত মানুষ সরকারের সামাজিক সুরক্ষার আওতায় আছে, তাদের মধ্যে ৭১ শতাংশ ভুল মানুষকে দেয়া হয়। আবার ৪৬ দশমিক ৫ শতাংশ আছেন, প্রয়োজন না থাকলেও যারা ভাতা পাচ্ছে। অন্য দিকে, দেশের শহরাঞ্চলে দরিদ্রের সংখ্যা ১৮ দশমিক ৯ শতাংশ হলেও সুরক্ষা পাচ্ছে ১০ দশমিক ৯ শতাংশ মানুষ। কিন্তু গ্রামাঞ্চলে দরিদ্রের সংখ্যা ২৬ দশমিক ৪ শতাংশ হলেও সুরক্ষা পাচ্ছে ৩৫ দশমিক ৭ শতাংশ মানুষ। সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি বাস্তবায়নে দক্ষতা ও সততার অভাবটি একেবারে স্পষ্ট। তাই এ কর্মসূচির সফলতা পাওয়া যাচ্ছে না।
অর্থনীতিবিদদের মতো আমরাও মনে করি, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিকে সামাজিক সহায়তা, সামাজিক বীমা, শ্রমবাজার-বিষয়ক কর্মসূচি ও সামাজিক সেবা- এই চার ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। এটিও স্মরণ রাখা প্রয়োজন, অনানুষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদেরও সামাজিক সুরক্ষা খাতের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
সামাজিক সুরক্ষা সেক্টরে বেসরকারি খাতের ভূমিকা পালনের সুযোগ আছে। এ ক্ষেত্রে সরকারকে একটি শক্তিশালী নিয়ন্ত্রণ কাঠামো তৈরি করতে হবে। এমন প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে হবে, যাতে বড় বড় তহবিল ব্যবস্থাপনা করা যায়। এমন পদক্ষেপ নিলে আশা করা যায়, দুর্যোগ-দুর্বিপাকে আত্মসম্মনবোধ সম্পন্ন মধ্যবিত্ত ও নি¤œবিত্ত সম্মান নিয়ে বেঁচে থাকার পথ পাবে।


আরো সংবাদ



premium cement
কুমিল্লা সীমান্তে মাদকসহ ভারতীয় নাগরিক আটক এশিয়ায় মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন নিয়ে রাশিয়ার পাল্টা হুমকি ফিলিস্তিনের প্রতি বাংলাদেশের দৃঢ় সমর্থন পুনর্ব্যক্ত বিক্ষোভে উত্তাল পাকিস্তানে নিহত আরো ৬, সেনা মোতায়েন রাষ্ট্রদ্রোহের ঘটনায় যুক্ত থাকলে ছাড় দেয়া হবে না : আসিফ মাহমুদ বিয়ের প্রলোভনে আ’লীগ নেতার বিরুদ্ধে নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ ট্রাম্প দায়িত্ব নেয়ার প্রথম দিনই চীন-মেক্সিকো-কানাডার ওপর শুল্ক আরোপ করবেন আ’লীগ ইসলামী আদর্শকে জঙ্গিবাদ বলে এখন জঙ্গি ও সন্ত্রাসী হয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে : আলাউদ্দিন সিকদার শিক্ষার্থীদের আন্দোলন কঠোর হয়ে দমন করতে চাই না : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা শরণখোলা প্রেসক্লাবের নির্বাচনে আলী সভাপতি-আনোয়ার সম্পাদক রিমান্ড শেষে কামরুল-জ্যাকবকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ

সকল