২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
নগরাঞ্চলে তাপমাত্রা বাড়ছে

এখনই মনোযোগ দিতে হবে

-

ক্রমে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে রাজধানী ঢাকা। গত ২০ বছরে ঢাকার তাপমাত্রা বেড়েছে প্রায় তিন ডিগ্রি। ফলে গ্রীষ্মকালে অসহনীয় গরমে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে। এমনকি শীতের মৌসুমেও আগের মতো শীতলতা মেলে না। জলবায়ু পরিবর্তনে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি এ জন্য যতটা না দায়ী তারও চেয়ে বেশি দায়ী মানুষের অবিবেচনাপ্রসূত কর্মকাণ্ড। এমনটি বলছেন এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ও গবেষকরা।
গণমাধ্যমের সাম্প্রতিক রিপোর্টে জানা যায়, শুধু শীতাতপ যন্ত্রের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় ঢাকার তাপমাত্রায় উল্লেøখযোগ্য পরিমাণে বাড়ছে। এ যন্ত্রের ব্যবহার দিন দিন বাড়তেই থাকবে। ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি) নামে একটি প্রতিষ্ঠানের গবেষণায় বলা হয়েছে, ঢাকায় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের ব্যবহার প্রতি বছর বাড়ছে ২০ শতাংশ হারে। এতে বিদ্যুতের চাহিদা যেমন বাড়ছে, তেমনি বেড়ে যাচ্ছে শহরের তাপমাত্রাও। গবেষণা থেকে জানা গেছে, শুধু ঢাকা শহরে যত এসি ব্যবহার হয় তার মোট ধারণক্ষমতা ১৮ লাখ টনের বেশি। সারা দেশে আছে ২৮ লাখ টন ক্যাপাসিটির সমপরিমাণ এসি।
গত সপ্তাহে এ বিষয়ক এক সংলাপে বিশেষজ্ঞরা বলেন, বাস্তব কারণে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র বা এসির ব্যবহার বন্ধ করা সম্ভব নয়। কিন্তু যন্ত্রগুলোর তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে বিদ্যুতের চাহিদা কমানো সম্ভব; আর ভবনে প্রাকৃতিক আলো-বাতাস ঢোকার ব্যবস্থা রাখতে পারলে এসির চাহিদাও কমানো সম্ভব।
২০২১ সালের এক আন্তর্জাতিক গবেষণায় বলা হয়, বাংলাদেশের বিভিন্ন শহরে যে হারে তাপমাত্রা বাড়ছে সে ধারা চলতে থাকলে রাজধানী ঢাকাসহ পাঁচটি বড় শহর আগামী কয়েক বছরে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে উঠবে। গবেষণা বলছে, সারা বিশ্বে যখন তাপমাত্রা দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখতে লড়াই চলছে তখন গত ২০ বছরে রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা বেড়েছে প্রায় তিন ডিগ্রি। এ অত্যধিক গরম আগামী দিনগুলোতে বড় সব শহরের জন্য পরিবেশগত বাড়তি সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে। গবেষকরা বলছেন, তাপমাত্রা বৃদ্ধির বর্তমান প্রবণতা নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও রাজশাহী- এ চারটি বিভাগীয় শহরে রাত ও দিনের তাপমাত্রার পার্থক্য বা তারতম্য কমে আসবে, ফলে সবসময় গরম অনুভূত হবে। গবেষণাটি করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা। তাতে যুক্ত ছিলেন কানাডা ও বাংলাদেশের গবেষকরাও।
দেশে দুর্যোগ মোকাবেলা সংক্রান্ত সরকারি নীতিমালায় প্রাধান্য পেয়েছে মূলত ঘূর্ণিঝড় ও বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ। কারণ এ দুটোই ছিল আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এখন চ্যালেঞ্জ হিসেবে যোগ হচ্ছে নগরাঞ্চলে তাপমাত্রা বৃদ্ধির মতো সমস্যা। এটি সবার জানা, পরিবেশগত সঙ্কট বা জলবায়ু পরিবর্তনে বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়ছে। তাই নগরাঞ্চলের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া শুধু বাংলাদেশের সমস্যা নয়; এটি বৈশ্বিক সমস্যা। আগামী ৩০ বছরে অর্থাৎ ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের বেশির ভাগ মানুষ নগরে বসবাস করবে। ততদিনে বাংলাদেশও একটি নগররাষ্ট্রে পরিণত হবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা, যার কারণে এ সমস্যার মোকাবেলায় এখনই মনোযোগ দেয়া জরুরি। কারণ উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে জনস্বাস্থ্যের ওপর যে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়বে, তা সামাল দেয়া আরো বেশি কঠিন হবে।
কিন্তু কিভাবে সেটি সম্ভব? অস্ট্রেলিয়ায় যে গবেষণার তথ্য আমরা উল্লেখ করেছি; তাতে বলা হয়- বাংলাদেশের নগরগুলোতে উষ্ণতা বৃদ্ধিতে জলবায়ুর পরিবর্তন যতটা না দায়ী, তার চেয়েও বেশি দায়ী অপরিকল্পিত নগরায়ন এবং নগরের বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে সমন্বয়ের অভাব ও দুর্বল পরিবেশ ব্যবস্থাপনা।
আইপিডির সংলাপেও বলা হয়েছে, কার্যকর নগর-পরিকল্পনা, ইমারত বিধিমালা এবং এসি ব্যবহারের যথাযথ নীতিমালা থাকলে এর ব্যবহার বহুলাংশে কমানো যেত। একটি এসির ১০ মিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে পাঁচ থেকে ছয় ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি হয়। লাখ লাখ ইউনিট এসি ব্যবহারের কারণে সামগ্রিকভাবে নগরের তাপমাত্রা বাড়ে।
সরকারি কর্তৃপক্ষ ও নগর পরিকল্পনাবিদরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনায় নেবে এটিই প্রত্যাশিত।

 


আরো সংবাদ



premium cement
গণমাধ্যমের ওপর হামলা সহ্য করা হবে না : প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব জাপানে রকেট পরীক্ষাস্থলে ভয়াবহ আগুন সিলেটে ইউপি চেয়ারম্যানসহ আটক ৩ আদানির সাথে বিদ্যুৎ চুক্তি : হাইকোর্টের লিখিত আদেশ প্রকাশ কুমিল্লা সীমান্তে মাদকসহ ভারতীয় নাগরিক আটক এশিয়ায় মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন নিয়ে রাশিয়ার পাল্টা হুমকি ফিলিস্তিনের প্রতি বাংলাদেশের দৃঢ় সমর্থন পুনর্ব্যক্ত বিক্ষোভে উত্তাল পাকিস্তানে নিহত আরো ৬, সেনা মোতায়েন রাষ্ট্রদ্রোহের ঘটনায় যুক্ত থাকলে ছাড় দেয়া হবে না : আসিফ মাহমুদ বিয়ের প্রলোভনে আ’লীগ নেতার বিরুদ্ধে নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ ট্রাম্প দায়িত্ব নেয়ার প্রথম দিনই চীন-মেক্সিকো-কানাডার ওপর শুল্ক আরোপ করবেন

সকল