বেকারত্ব বাড়ছেই
- ১৭ অক্টোবর ২০২২, ০০:০৫
দেশে নানা কারণে বেকারত্বের হার বাড়ছে। অর্থনীতির হাল-হকিকত ভালো নয়। জ্বালানি খাতে সঙ্কট দিন দিন ঘনীভূত হচ্ছে। বিদ্যুতের অভাবে শিল্প-কারখানার বিকাশ প্রায় রুদ্ধ। প্রতি বছর শ্রমশক্তিতে যোগ হচ্ছে ২০ লাখের বেশি তরুণ, যাদের মধ্যে সরকারি খাতে কাজ পাচ্ছে মাত্র ৫ শতাংশের মতো। বাকি ৯৫ শতাংশ যোগ হচ্ছে বেকারের তালিকায়। তারা বেসরকারি উৎসে কাজ পাওয়ার প্রতিযোগিতায় ঝাঁপিয়ে পড়ছে; কিন্তু তাদের কত শতাংশ বাস্তবে কাজ পাচ্ছে তার কোনো পরিসংখ্যান নেই।
গ্রামীণ অর্থনীতি এ মুহূর্তে মন্দাক্রান্ত। বছরের এ সময় গ্রামে কৃষিকাজের সুযোগ থাকে না। বিপুলসংখ্যক বেকার তরুণ তাই শহরমুখী। বেশির ভাগ কাজের সন্ধানে রাজধানীতে আসছে।
একটি জাতীয় দৈনিকের রিপোর্টে এমন তথ্য উঠে এসেছে। বলা হয়েছে, কাজের সন্ধানে ঢাকামুখী মানুষের ঢল নেমেছে। রাজধানীর রেলস্টেশন, বাস টার্মিনাল, লঞ্চঘাটে প্রতিদিন নামছে শত শত মানুষ। বোরো মৌসুম শেষ হওয়ার পর গ্রামে কাজ নেই বলে এ সময় দিনমজুররা বেকার। শুধু দিনমজুর শ্রেণীর তরুণরাই নয়, গ্রাম থেকে ঢাকায় ছুটে আসছে শিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত বেকার যুবকও। তারা একটি কাজ পাওয়ার জন্য দিন-রাত হন্যে হয়ে ঘুরছে।
লেখাপড়ার খরচ বহন করতে না পেরেও অনেকে ঢাকায় আসছে। পড়ালেখার স্বপ্ন মাটিচাপা দিয়েই তারা সংসারের হাল ধরছে। কিন্তু গ্রামে কাজ না থাকা এবং পরিচিত মানুষের সামনে কায়িক শ্রমে নিয়োজিত হওয়ার লজ্জার কারণে অর্ধশিক্ষিত বেকাররা ঢাকামুখী। এখানে নির্মাণকাজের জোগালি, রিকশা চালনা, মিস্ত্রির সহকারী থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের অনিশ্চিত কাজে তারা জড়িত হচ্ছে। এতে নিজের খাওয়া পরার খরচ চালিয়ে বাড়িতে পরিবারের জন্য কিছু অর্থ পাঠানোর সুযোগ মিলছে।
কিন্তু এগুলো স্থায়ীভাবে সমস্যার সমাধান করছে না; বরং সমস্যা আরো গভীর হয়ে উঠছে। বিদ্যুৎ সরবরাহে ঘাটতি ও শিল্পে ব্যাংক ঋণের সুযোগ সীমিত হয়ে আসায় শিল্পের বিকাশ থমকে গেছে। গড়ে উঠছে না নতুন শিল্পপ্রতিষ্ঠান। ফলে শিল্প খাতে নতুন করে কর্মসংস্থান একরকম বন্ধ। শুধু তাই নয়, অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে এবং অনেকগুলোতে কর্মী ছাঁটাই হচ্ছে। নতুন করে বেকার হয়ে পড়ছে শ্রমিকদের একটি অংশ। মহামারীর সময় নতুন করে কয়েক কোটি মানুষ গরিব হয়ে পড়েছে। এসব পরিবারে গরিবীর প্রধান কারণ বেকারত্ব।
বাজারে সব জিনিসপত্রের দাম আকাশছোঁয়া। আগের বছরের এ সময়ের চেয়ে মাছ-গোশতের দাম দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। শাকসবজিসহ সব নিত্যপণ্যের দামও চড়া।
চাল, ডাল, তেল থেকে শুরু করে সব কিছুর দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। এ পরিস্থিতিতে উচ্চবিত্ত ছাড়া সবাই সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে।
বেকারত্বের অভিশাপ কেবল অশিক্ষিত-অর্ধশিক্ষিতের মধ্যে সীমিত নেই। অনেক উচ্চশিক্ষিত তরুণও কাজ খুঁজে পাচ্ছে না। দেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা কত জানার উপায় নেই। কারণ এ বিষয়ে হালনাগাদ পরিসংখ্যান মেলে না। তবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে জনবল নিয়োগের সময় কোনো একটি পদে যখন হাজার হাজার প্রার্থী তীব্র প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয় তখন পরিস্থিতি কিছুটা আঁচ করা যায়। তার পরও সন্তোষজনক চাকরি সবাই পাচ্ছে না। এ নিয়ে শিক্ষিত তরুণদের মধ্যে হতাশা ক্রমেই বাড়ছে। বিদেশে পাড়ি জমানোর প্রবণতা সেই হতাশার প্রকাশ। জীবনের চরম ঝুঁকি নিয়েও যে অনেক তরুণ বৈধ, অবৈধ নানা পথে বিদেশে যাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠছে তার কারণ দেশে কর্মসংস্থানের সীমিত সুযোগ।
বর্তমান সরকারের উন্নয়নের বিপুল বাগাড়ম্বর সত্ত্বেও বাস্তবে সার্বিকভাবে দেশের গতি যে নিম্নমুখী তা এখন স্পষ্ট। তাই খুব সহসা পরিস্থিতির উন্নতির সম্ভাবনা কমই।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা