এই অতিবিলম্ব যেন আর না হয়
- ১৬ অক্টোবর ২০২২, ০০:০০
নয়া দিগন্তের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, ঢাকার অদূরবর্তী মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় ছয় মাসের উন্নয়নকাজের ছয়গুণ সময় অর্থাৎ তিন বছরেও শেষ হয়নি। ফলে চার কোটি টাকার এ উন্নয়নমূলক কাজ বর্তমানে জনগণের ‘গলার কাঁটা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাটুরিয়া সংবাদদাতার পাঠানো সচিত্র প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়, সেখানে বিভিন্ন অনিয়ম ভর করেছে চার কোটি টাকা ব্যয়সাপেক্ষ সদর বাজার উন্নয়নে। তিন বছর আগে শুরু করা হলেও এখনো কচ্ছপগতিতে উন্নয়নকাজ চলছে।
জানা গেছে, যতটা কাজ হয়েছে, এতে ব্যবহৃত হয়েছে নিম্নমানের নির্মাণ উপকরণ। আর কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি ফাঁকি দিতে এ কাজ চলে রাতের আঁধারে। আরসিসি ঢালাইয়ের ইটের গাইডওয়াল নির্মাণ করে ছয় মাস ধরে রাস্তা বন্ধ করে রাখা হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অবহেলার দরুন দীর্ঘ দিন দুর্ভোগের অভিযোগ সাটুরিয়া সদর বাজারের ব্যবসায়ী, পথচারী ও স্থানীয় ছোট ছোট যানবাহনের চালকদের। কাজ শেষ হলো না; যদিও তিনবার নির্মাণকাজের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে। এ দিকে মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। স্থানীয় বাসিন্দাদের মনে এসব ব্যাপারে তীব্র ক্ষোভ রয়েছে। সূত্র জানিয়েছে, উত্তরবঙ্গের নাটোরের জনৈক ঠিকাদার সাটুরিয়া সদর বাজার উন্নয়নের আরসিসি ঢালাই নির্মাণকাজের দায়িত্ব লাভ করেন। তিন কোটি ৯৩ লাখ ৭৫ হাজার ২০০ টাকা ব্যয়ের নির্মাণকাজটি শুরু হয়েছিল ২০২০ সালের ৬ সেপ্টেম্বর। গত বছর ২০২১ সালে ৬ মার্চ এ কাজ শেষ হওয়ার কথা। তবে এতে ঠিকাদার ব্যর্থ হওয়ায় তিন তিন দফা কাজের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল। প্রথম দফায় রাস্তার মাটি খুঁড়ে ফেলে রাখা হয় দীর্ঘ দিন। এতে ঠিকাদারের উদাসীনতার প্রমাণ মেলে। নির্মাণকাজ কচ্ছপগতিতে চলায় ফেলে রাখা রডের খাঁচায় মরিচা ধরে যায়। এরপর খাঁচাগুলোর ব্যবহারে ফাঁকি দিতে রাতের অন্ধকারে ঢালাই দেয়া হয়। স্থানীয় স্বর্ণকারপট্টিতে কয়েকটি রাস্তা গর্ত করে দীর্ঘকাল ফেলে রাখা হয়েছে। ফলে গর্তে বৃষ্টির পানি জমে আবর্জনা আর কাদামাটির দৌরাত্ম্যে দিশেহারা এলাকার লোকজন। কখন এ নির্মাণকাজের ঢালাই শেষ হবে, তা কেউ জানে না। দীর্ঘদিন মাটি খুঁড়ে ফেলে রাখা হয়েছে স্থানীয় সরকারি হাইস্কুলের পেছনে। ফলে স্কুলের কচি কিশোর শিক্ষার্থীরা এতে প্রতিনিয়ত হোঁচট খায় ও ব্যথা পায়। এমনকি তাদের অনেকে এখানে আছড়েও পড়ছে। প্রতিবন্ধকতা থাকায় জরুরি দরকারেও গাড়ি ব্যবহার করা যায় না বলে জানা যায়। সূত্রধরপট্টিতে নির্মাণকাজ কয়েক মাস যাবৎ স্থগিত। ঢালাইয়ের দোহাই দিয়ে দেয়াল তুলে পথ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এ দিকে বেচাকেনা বন্ধ হওয়ায় ব্যবসায়ীদের পথে বসার উপক্রম। অথচ কয়েক মাস চলে গেলেও ঠিকাদারের কোনো উদ্যোগ নেই এ ব্যাপারে।
সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্ররা ও একটি এনজিওর কর্মকর্তা বলেছেন, স্কুলের পেছনে রাস্তা খুঁড়ে ফেলে রাখায় বৃষ্টির পানি জমছে। হেঁটে চলাচলের সময় কাদায় নিদারুণ বিড়ম্বনা পোহাতে হয়। আগত পরিদর্শক ও কর্মকর্তাসহ সবাই দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। এখানকার কাঠ ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ছয় মাস ধরে পড়ে আছে গাইডওয়াল। এ দিকে সপরিবারে অর্থকষ্টে দিন কাটছে আমাদের। সদর ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, ঠিকাদারের গাফিলতিতে ব্যবসায়ীদের দুর্ভোগ নিয়ে যথাস্থানে অবহিত করেছি। কর্মকর্তারা ‘দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন’ বলেছেন। অন্য দিকে ঠিকাদারের ম্যানেজার বলেন, ‘অন্য কাজে ব্যস্ত থাকায় আমাদের সময় বেশি লাগছে। এখন কাজ শেষ করা হবে দ্রুত।’ সাটুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান বলেছেন, ‘এলাকার মানুষ ও ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থেই সরকার এত বিপুল উন্নয়ন বাজেট দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের অবহেলা আশা করা যায় না। তার অনিয়মের ব্যাপারে তদন্ত করে, উপরে জানিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
সাটুরিয়ার অনিয়মের ঘটনার উপযুক্ত তদন্ত করে এর অন্যত্র পুনরাবৃত্তি রোধ করা হবে বলে আমরা আশা করছি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা