২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
ভয়াবহ হচ্ছে ডেঙ্গু পরিস্থিতি

সতর্কতার বিকল্প নেই

-

ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। ক্রমেই ভয়াবহ আকার ধারণ করছে রোগটি। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বেশির ভাগ হাসপাতালে রোগী ভর্তি বেড়েছে দেড় গুণের বেশি। সারা বছরে যত ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে তার এক-চতুর্থাংশ হয়েছে চলতি অক্টোবরের গত আট দিনে। মাসের প্রথম আট দিনে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হন সাড়ে চার হাজার রোগী। গত শনিবার সারা দেশে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এ মৌসুমের সর্বোচ্চ ৭১২ জন।
গণমাধ্যমে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে যেসব খবর প্রকাশ পাচ্ছে তা রীতিমতো উদ্বেগজনক। রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে এক সপ্তাহর ব্যবধানে ভর্তি রোগী বেড়েছে ৬০ শতাংশ। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে শনিবার পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২০ হাজার ২৩৫ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ১৭ হাজার ৭৫২ জন। গত ৬ সেপ্টেম্বর মারা যান পাঁচজন ডেঙ্গু রোগী। পরিস্থিতি ২০১৯ সালের চেয়েও মারাত্মক হয়ে উঠতে যাচ্ছে আশঙ্কা করা হচ্ছে। রাজধানীতে ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়ছে ডেঙ্গু। পরিস্থিতি জটিলতর হয়ে উঠছে। রাজধানীতে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। এ বছর ডেঙ্গুতে এখন পর্যন্ত প্রায় ৭০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে গণমাধ্যমের খবরে জানা যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেঙ্গু কেবল একটি মৌসুমের মধ্যে সীমিত থাকছে না। এটি এখন সারা বছরের রোগ হয়ে উঠছে। আগে মে থেকে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাস পর্যন্ত ডেঙ্গুর মৌসুম ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, চলতি অক্টোবর মাসটি হতে যাচ্ছে ডেঙ্গু সংক্রমণের মাস। তবে এখন সারা বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। এ ছাড়া আগে এটি ছিল শহরকেন্দ্রিক, এখন তা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। আর এটি কোনো বিশেষ বয়সের মানুষকে নয়; বরং সব বয়সীদের আক্রমণ করছে। কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের একজন চিকিৎসকের বরাত দিয়ে একটি দৈনিকের খবরে বলা হয়, এবার তরুণরাও সহজে কাবু হচ্ছেন ডেঙ্গুতে। অনেকে শুরুতে গুরুত্ব না দেয়ায় রোগের অবস্থা জটিল হয়ে উঠছে।
ডেঙ্গু সাধারণত দুই ধরনের। ক্ল্যাসিকাল ও হেমোরেজিক। ক্ল্যাসিকাল ডেঙ্গুতে জ্বর সাধারণত দুই থেকে সাত দিনের মধ্যে সেরে যায়। তবে হেমোরেজিক ডেঙ্গুতে পাঁচ থেকে সাত দিন পর সঙ্কটাপন্ন অবস্থা দেখা দেয়। অনেকসময় নাক, মুখ, দাঁতের মাড়ি থেকে রক্তপাত, এমনকি পায়খানার সাথেও রক্ত যেতে পারে। নারীদের ক্ষেত্রে মাসিকের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হতে পারে। রক্তের প্লাটিলেট বা অণুচক্রিকা কমে গিয়ে শরীরের চামড়ার নিচে ইন্টারনাল ব্লিডিং বা রক্তক্ষরণ হয়। রোগ ধরা পড়ার আগে জ্বর দেখা দিলে ডেঙ্গুর পরীক্ষা করাতে হবে।
ডেঙ্গু প্রতিরোধের মূলমন্ত্র এডিস মশার বিস্তার রোধ করা। কিন্তু খোদ রাজধানীতেও মশক নিধন কার্যক্রমের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। সিটি করপোরেশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রোগী ও স্বজনরা। স্বাস্থ্য দফতরের খবরদারি নেই। পরিস্থিতি এমন যে, নিজেরা সচেতন না হলে ডেঙ্গু থেকে বাঁচার উপায় নেই। ঘরে ঘরে এডিস মশার জন্মস্থল ধ্বংস করা, বাড়ির আশপাশে পানি জমে এমন জায়গা, বদ্ধ জলাশয় পরিষ্কার রাখা ইত্যাদি নিজেদের দায়িত্বে করতে হবে।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা ডেঙ্গু হলে প্যারাসিটামল ছাড়া অন্য কোনো ওষুধ না খাওয়ার পরামর্শ দেন। দিনের বেলায় মশারি টাঙানো, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের ফুলহাতা জামা ও হাত-পায়ে মোজা পরারও পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।
দিনে ঘুমালে মশারি ব্যবহার করা বা অ্যারোসল স্প্রে করতে হবে। ডেঙ্গু মৌসুমে বাইরে গেলে হাত-পা ঢাকে এমন পোশাক পরতে হবে। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীকে সব সময় মশারির ভেতরে রাখতে হবে। দেশীয় পদ্ধতিতে পেঁপে পাতার রস ডেঙ্গুতে বিশেষ উপকারী বলে আন্তর্জাতিক গবেষণায় দেখা গেছে। সম্ভব ক্ষেত্রে পেঁপে পাতার রস সেবন করা যেতে পারে।
চলতি মাসে ডেঙ্গু পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা কম। বৃষ্টির ধরন দেখে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, থেমে থেমে বৃষ্টির কারণে রেকর্ড পরিমাণ ডেঙ্গু শনাক্ত হতে পারে এ মাসে।


আরো সংবাদ



premium cement
বিপুল পরিমাণে বিদেশী মুদ্রাসহ শাহ আমানতে যাত্রী আটক রাখাইনে গণহত্যা ও চলমান সহিংসতার বিচারের দাবি রোহিঙ্গাদের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ৪র্থ বর্ষের সমন্বিত ফলাফল প্রকাশ রাষ্ট্রপতির কাছে সুপ্রিম কোর্টের বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ প্রধান বিচারপতির কুলাউড়ায় শিক্ষার্থীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে শিক্ষককে গণপিটুনি অহিংস গণঅভ্যুত্থানের আহ্বায়কসহ ১৮ জনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ শিক্ষার্থীর মৃত্যুর দায় ন্যাশনাল হাসপাতালের ওপর চাপানো ভিত্তিহীন : কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য সেন্ট গ্রেগরি হাইস্কুল বন্ধ ঘোষণা স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের দায়ে পিরোজপুরে একজনের যাবজ্জীবন নড়াইলে ২ ভাইয়ের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড নোবিপ্রবিতে মানবিকতার আড়ালে হচ্ছে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ পুনর্বাসন

সকল