২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
শীতলক্ষ্যার চরম দুর্দশা

কেউ নেই দেখার!

-

সহযোগী একটি জাতীয় দৈনিকের কালিগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি তার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছেন, প্রত্যেক বছর ঘটা করে ‘বিশ্বনদী দিবস’ পালিত হলেও ঢাকাসহ দেশের বেশির ভাগ নদী এখন বেদখল। সাথে ভয়াবহ দূষণেরও শিকার এগুলো। বাংলাদেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শীতলক্ষ্যা নদীও এর ব্যতিক্রম নয়। দখল দূষণসহ নানাবিধ কারণে দেশের নদ-নদী আজ সঙ্কটের কবলে। স্মর্তব্য, একদিন বৃহত্তর ঢাকার শীতলক্ষ্যা সুপরিচিত ছিল তার স্বচ্ছ ও সুন্দর পানির জন্য।
দেখা যায়, কালিগঞ্জের মূলগাঁও এলাকায় শীতলক্ষ্যা তীরের খ্যাতনামা একটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের কাঁচামাল বহনকারী অনেক জাহাজকে এই নদে যেখানে সেখানে নোঙর করে রাখা হয়েছে। দেখে যে কারো মনে হবে, এ নদী শিল্পপ্রতিষ্ঠানটির মালিকানাধীন। এ থেকে বোঝা যায়, শীতলক্ষ্যা নদী আজ কত বেশি অসহায়। শিল্পপ্রতিষ্ঠানের অনুমোদনহীন জেটি এসব জাহাজ প্রতিযোগিতামূলকভাবে ব্যবহার তো করছেই; নদী দূষণও সমানভাবে দাপটের সাথে চালিয়ে যাচ্ছে। এদের কারো কারো ইটিপি থাকলেও তা বন্ধ অবস্থায় থাকে। শুধু প্রশাসনিক অভিযানের সংবাদে এগুলো সচল হয়। তবে আসলে পরিবেশ রক্ষার জন্য নয়, লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে। অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও আশপাশের গ্রামের লোকজনও শীতলক্ষ্যায় দূষণ ঘটায়। অপব্যবহার ও দূষণ ছাড়াও এ নদী দখলদাররাও অত্যন্ত তৎপর। প্রতিষ্ঠান ছাড়াও ব্যক্তি বিশেষও নদী দখলদার। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের জরিপে জানানো হয়েছে, ৬৫ হাজার ১২৭ জন নদী দখলদার এখন এ দেশে। এদের ১৯ হাজার ৮৭৪ জনকে উচ্ছেদ করা হয়েছে।
শীতলক্ষ্যা তীরের বাসিন্দা, কালিগঞ্জ পৌর এলাকার বালিগাঁওয়ের বিষ্ণু মণ্ডল জানান, ‘এখানে মাছ ধরে বাপ-দাদারা জীবিকা নির্বাহ করেছেন। কিন্তু আর আমরা এই পেশায় টিকতে পারছি না। কারণ, পানিদূষণ ব্যাপক। তাই আগের মতো মাছ মেলে না।’ কাছের পলাশ উপজেলার এক মাঝি বলেছেন, ‘৩৪ বছর আগে শৈশব থেকে এ পেশায় আছি। তবে জবরদখলের দরুন নদী এখন আগের তুলনায় অনেক সঙ্কীর্ণ। এভাবে চললে শীতলক্ষ্যা একদিন হারিয়ে যাবে।’ জানা গেছে, নিজেদের দরকারে অনেকে এ নদীকে ব্যবহার করলেও নদীর প্রতি তাদের দায়িত্ব পালন করে না। তাই সংশ্লিষ্ট শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ইটিপি নিশ্চিত ও অবৈধ দখল উচ্ছেদ করে নদী তীরে ওয়াকওয়ে নির্মাণ করতে হবে।
বাংলাদেশ নদী ফাউন্ডেশন বলেছে, ডিসি নিজেই জেলার নদী রক্ষা কমিটির সভাপতি। তিনিই জেলা পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রধান। তিনি পরিবেশ অধিদফতর, মৎস্য বিভাগ, কৃষি বিভাগ, বাপাউবো, বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড, পরিবেশ সংগঠক, জনগণের প্রতিনিধি, সুধী সমাজ ও মিডিয়াকে নিয়ে নদী রক্ষা করতে পারেন। এ ছাড়া জলাধার সংরক্ষণ আইন ২০০০, পানি আইন ২০১০, পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫, জীববৈচিত্র্য আইন ২০১৭ এবং বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২ কঠোরভাবে প্রয়োগ করা প্রয়োজন। কালিগঞ্জের ইউএনও বলেন, ‘সরকার নদীর জন্য নানান প্রকল্প নিয়েছে। নদী খনন করা হলে প্রবাহ স্বাভাবিক হবে। বিআইডব্লিউটিএ এবং নদী রক্ষা কমিশনও কাজ করছে আলাদাভাবে। সবাই জানেন, কালিগঞ্জের প্রাণ হলো শীতলক্ষ্যা। মানবসভ্যতা নদীকেন্দ্রিক। অতএব, নদ-নদীকে আমাদের বাঁচাতেই হবে। এ জন্য ইটিপির নিশ্চয়তা পেতে কাজ চলছে। অন্যথায় আইন আছে; প্রয়োজনে তা প্রয়োগ করা হবে। পরিবেশ অধিদফতরও এ জন্য কাজ করছে।’ উল্লেখ্য, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বা ইউএনও তার উপজেলার ‘নদীরক্ষা কমিটি’র সভাপতি।


আরো সংবাদ



premium cement
কুলাউড়ায় শিক্ষার্থীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে শিক্ষককে গণপিটুনি অহিংস গণঅভ্যুত্থানের আহ্বায়কসহ ১৮ জনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ শিক্ষার্থীর মৃত্যুর দায় ন্যাশনাল হাসপাতালের ওপর চাপানো ভিত্তিহীন : কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য সেন্ট গ্রেগরি হাইস্কুল বন্ধ ঘোষণা স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের দায়ে পিরোজপুরে একজনের যাবজ্জীবন নড়াইলে ২ ভাইয়ের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড নোবিপ্রবিতে মানবিকতার আড়ালে হচ্ছে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ পুনর্বাসন ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে ‘ডি চক’ যাত্রা, উত্তাল পাকিস্তান জিম্বাবুয়েকে ১৪৫ রানে গুটিয়ে দিলো পাকিস্তান কুমিল্লায় ট্রেনের ধাক্কায় নিহত বেড়ে ৭ রাষ্ট্রপতির কাছে সুপ্রিম কোর্টের বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ

সকল