নিশানা সংসদ নির্বাচন
- ০৩ অক্টোবর ২০২২, ০০:০৫
সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অস্ত্র ঢুকছে দেশে। সাম্প্রতিক সময়ে তা অনেক বেড়ে গেছে। অপরাধী চক্র নানা কৌশলে অবৈধ অস্ত্র আনছে বলে গোয়েন্দা সূত্রে প্রকাশ। সামনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনে আধিপত্য বিস্তারে এসব অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার হতে পারে- এমন আশঙ্কা করছেন অনেকে। কারণ এসব অস্ত্রের ক্রেতাদের বেশির ভাগ রাজনৈতিক মদদপুষ্ট বলে মনে করা হয়। সহযোগী একটি দৈনিকের প্রতিবেদনে এমনই উদ্বেগজনক তথ্য উঠে এসেছে।
গোয়েন্দা সূত্র মতে, স্থল ও জলপথের ৩০ রুট দিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র আনা হচ্ছে। তবে যশোর সীমান্ত দিয়ে প্রধানত ভারতীয় অস্ত্র আসে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বিহারে অবৈধ অস্ত্রের কারখানা রয়েছে। যশোর ছাড়াও নওগাঁ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জকেন্দ্রিক অস্ত্র চোরাচালান চক্র আছে। আছে ভারতীয় অস্ত্র চোরাচালান চক্র। আর বান্দরবানভিত্তিক গ্রুপগুলো অস্ত্র আনে মিয়ানমার থেকে। লক্ষণীয়, সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে অস্ত্র আনার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে নারীদের। সাধারণত গণপরিবহনে যাত্রীবেশে এসব অবৈধ অস্ত্র নিয়ে আসে অস্ত্র চোরাকারবারিরা।
বিজিবির তথ্য মতে, বিগত ১০ বছরে এসএমজি, রাইফেল, রিভলবার, পিস্তল, বন্দুকসহ সীমান্ত পেরিয়ে দেশে প্রবেশের সময় অন্তত দেড় হাজার অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করেছে এই বাহিনী। আর র্যাবের অভিযানে ২০২১ সালে দেশী-বিদেশী ৮৪৪টি অস্ত্র, ১৭৯টি ম্যাগজিন, ছয় হাজার ৮৫৯ রাউন্ড গোলাবারুদ, ১২ হাজার ২৮টি বিভিন্ন ধরনের বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়। এগুলোর বাজারমূল্য হাজার কোটি টাকা।
র্যাব ও পুলিশের প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এ দু’টি সংস্থা বছরে গড়ে ২০০ অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করে। বিজিবির হাতে ধরা পড়ে গড়ে দেড় শতাধিক অস্ত্র। তবে অবৈধ অস্ত্র নিয়ে কাজ করেন এমন একাধিক কর্মকর্তার মতে, উদ্ধারের অন্তত তিন গুণ বেশি অস্ত্র দেশে প্রবেশ করে। এর বেশির ভাগ সংগ্রহ করছে রাজনৈতিক মদদপুষ্ট সন্ত্রাসীরা।
দেশে সাম্প্রতিক সময়ে অবৈধ অস্ত্র আসা যে বেড়ে গেছে; কয়েকটি ঘটনা উল্লেখ করলে তা স্পষ্ট হবে। গণমাধ্যমে প্রকাশ, বেনাপোলের অগ্রভুলাট ও দৌলতপুর সীমান্তে গত শুক্রবার বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) অভিযান চালিয়ে অবৈধ অস্ত্রের একটি চালান আটক করে। অস্ত্রগুলোর মধ্যে সাতটি বিদেশী পিস্তল, চারটি ম্যাগজিন ও ১০ রাউন্ড গুলি রয়েছে। এ সময় গ্রেফতার করা হয় একজনকে। এ বিষয়ে ২১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল তানভীর রহমান বলেন, দেশে নাশকতা সৃষ্টি করতে ও সন্ত্রাসী কাজে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে এসব অস্ত্র ভারত থেকে আনা হচ্ছিল।
গত বছর পয়লা সেপ্টেম্বর ঢাকার গাবতলী থেকে একটি প্রাইভেট কারসহ পাঁচজনকে আটক করে ম্যাগজিন, গুলিসহ আটটি পিস্তল উদ্ধার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগ। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে যশোরের এক ছাত্রলীগ নেতাও ছিলেন। ৩০ আগস্ট র্যাব-৭ বাঁশখালী উপজেলার চাম্বল ইউনিয়নের পূর্ব জঙ্গল চাম্বল গ্রামের একটি পাহাড়ে অস্ত্র তৈরির একটি কারখানার সন্ধান পায়। সেখানকার উৎপাদিত অস্ত্র উন্নতমানের সরঞ্জাম দিয়ে তৈরি। এসবের দাম ছিল মাত্র ৫-১৫ হাজার টাকা।
যেকোনো নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক অঙ্গনে অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার বাড়ে। মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত ৯ মাসে বিভিন্ন পর্যায়ের স্থানীয় নির্বাচনসহ রাজনৈতিক সঙ্ঘাত-সহিংসতার ৩৮৭ ঘটনায় ৫৮ জনের মৃত্যু ও প্রায় পাঁচ হাজার ৪০০ জন আহত হয়েছেন।
আমরা মনে করি, নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে প্রয়োজন অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও এর প্রবেশ কঠোরভাবে বন্ধ করা। এর জন্য অতীতে যারা অবৈধ অস্ত্র-সংক্রান্ত ঘটনায় জড়িত ছিলেন; এখন জামিনে রয়েছেন তাদের গোয়েন্দা নজরদারিতে রাখা দরকার। আর ভারতের সাথে সহযোগিতা চুক্তির আওতায় বাংলাদেশে ভারতীয় অবৈধ অস্ত্র কারবারিদের নামের তালিকা দেশটিকে দিতে হবে। দিল্লিø যাতে ওই সব অপরাধীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়, এ জন্য কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়াতে হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা