বিএডিসির ভূমিকা নগণ্য
- ০২ অক্টোবর ২০২২, ০০:০০
আমাদের প্রধান খাদ্যশস্য ধান ও গম। তবে দেশের মানুষের খাদ্যতালিকা বৈচিত্র্যপূর্ণ হচ্ছে বিধায় খাদ্যসামগ্রী প্রস্তুতে আলুর ব্যবহার আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন অনেক বেড়েছে। আগে প্রধানত দেশে তরকারিতে আলুর ব্যবহার হতো। এখন খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আসায় আলুর ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। এতে আমাদের আলুর চাহিদা গত ৫০ বছরে বহু গুণে বেড়েছে।
বৈশ্বিক পর্যায়ের সর্বশেষ তথ্য, আলু উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে ষষ্ঠতম অবস্থানে রয়েছে। স্বাধীনতার এক বছর আগে আলু উৎপাদন হয়েছিল ৯ লাখ টন। স্বাধীনতার ৫০ বছরে আলু উৎপাদন ১২ গুণ বেড়েছে। গত অর্থবছরে এক কোটি ১০ লাখ টনের মতো আলু উৎপাদিত হয়েছে। সর্বশেষ অর্থবছরে ৮৫ হাজার টন আলু রফতানি হয়েছে। বিএডিসির মাধ্যমে হয়েছে প্রায় আড়াই হাজার টন। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে আলু রফতানি হচ্ছে, তবু ভালো মানের বীজ সরকারিভাবে প্রয়োজনের তুলনায় অতি নগণ্য পরিমাণ সরবরাহ হওয়ায় আলুর কাক্সিক্ষত আবাদ ও উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে না বলে মনে করা হয়।
বাস্তবে দেশে গোল আলুর আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধি পেলেও সেই তুলনায় বাড়ছে না সরকারিভাবে আলুবীজ সরবরাহ। কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্র মতে, চলতি ২০২২-২৩ উৎপাদন মৌসুমে দেশে বিভিন্ন জাতের আলুবীজের চাহিদা সাত লাখ ৪৬ হাজার ৩০৪ টন। সেখানে বিএডিসি (বাংলাদেশে কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন) সরবরাহ করবে ৪৪ হাজার ৫৩৬ টন। অর্থাৎ কৃষকের মোট চাহিদার মাত্র ৬ শতাংশ আলুবীজ উৎপাদন করতে সক্ষম রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানটি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর (ডিএই) বারি আলু ৭ (ডায়মন্ড) সবচেয়ে বেশি চাহিদা দেখিয়েছে। ডিএই বলছে, এ জাতের দুই লাখ ১০ হাজার ২৫০ টন আলুবীজ চাহিদা রয়েছে কৃষকের। এর মধ্যে বিএডিসি মাত্র ১০ হাজার ৩১২ টন উৎপাদন করবে। এরপর চাহিদা রয়েছে বারি আলু ২৫ (এস্টারিক্স), এক লাখ ৬৮ হাজার ৪৭০ টন। বিএডিসি উৎপাদন করবে ২২ হাজার ৪০৮ টন। বারি আলুর ৮ (কার্ডিনাল) বীজ চাহিদা এক লাখ পাঁচ হাজার ৬০০ টন; বিএডিসি উৎপাদন করবে এক হাজার ৫৩৭ টন।
নয়া দিগন্তের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, যেহেতু আমাদের আবাদি জমি কমছে; তাই যেকোনো শস্য বেশি ফলনে দরকার উচ্চফলনশীল ভালো জাত। এ ক্ষেত্রে কৃষি মন্ত্রণালয় এই প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে নিজস্ব জাতের পাশাপাশি আমদানি করা বীজের ওপরও গুরুত্ব দিয়েছে। নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে বিভিন্ন দেশে আলু রফতানি সামনে রেখে ভালো মানের বীজ সরবরাহের দিকে নজর দিতে বিএডিসি-কে নির্দেশনা দিয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। নতুন জাতগুলো উৎপাদন পরিকল্পনায় ৮০ শতাংশ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিড প্রমোশন কমিটি। বিএডিসির বরাতে ওই প্রতিবেদনে আরো জানানো হয়, সরকার তিন বছরে আলুকে অনিয়ন্ত্রিত ফসল হিসেবে ঘোষণা করেছে। সে ক্ষেত্রে বিএডিসি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো বাইরে থেকে ৩০টি বীজের জাত এনে ট্রায়াল দিচ্ছে। ইতোমধ্যে বিএডিসি ১০টা জাতের নিবন্ধন নিয়েছে।
বিএডিসি ৪৪ হাজার টনের মতো আলুবীজ উৎপাদন করে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির সাথে কন্ট্রাক্ট ফার্মিংয়ে যেসব চাষি বীজ উৎপাদন করেন, তাদের কাছ থেকে সব বীজ আনতে পারে না। এসব বীজ চাষিদের কাছে থেকে যায় কিংবা বিভিন্ন কোম্পানি নিয়ে নেয়। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বিভিন্ন কোম্পানি ৫০ হাজার টনের বেশি আলুবীজ সরবরাহ করে। বাকিটা কৃষক ঘরে রেখে দেন এবং পরে চাষ করেন।
আমরা মনে করি, অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে যদি ব্যাপকভাবে আলু রফতানি বাড়াতে চাই; তাহলে রফতানিযোগ্য আলুর জাতের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। এ জন্য প্রথমে দরকার কৃষকের চাহিদা মতো ভালো জাতের আলুবীজ সরবরাহ নিশ্চিত করা। এ ক্ষেত্রে বিএডিসিকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। আর রফতানির ক্ষেত্রে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতকেও উৎসাহিত করতে হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা