দ্রুত ব্যবস্থা নিন
- ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০০:০৫
চন্দ্রঘোনায় অবস্থিত কর্ণফুলী পেপার মিলস (কেপিএম) সরকারি খাতে দেশের বৃহত্তম পেপার মিল। পাকিস্তান আমলে দেশের পূর্ব ও পশ্চিম উভয় অংশের কাগজের চাহিদা পূরণ করত। মিলের তিনটি ইউনিটের দৈনিক কাগজ উৎপাদনের সক্ষমতা ১১০ থেকে ১৪০ টন। কিন্তু প্রয়োজনীয় কাঁচামালের অভাবে মিল বন্ধ রয়েছে। উৎপাদন বন্ধ থাকায় দৈনিক লাখ লাখ টাকা লোকসান গুনছে। আর অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা ভেবে অজানা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন শ্রমিক-কর্মচারীরা।
মিলের রুগ্ণ যন্ত্রপাতি ও বিভিন্ন সমস্যার কারণে ২০১৭ সালে মিলের নিজস্ব কূপ থেকে আহরিত কাঁচামাল বাঁশ ও পাল্পউড দিয়ে কাগজ উৎপাদন বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। বিদেশী পাল্প দিয়ে কাগজ উৎপাদনের জন্য টেন্ডার আহ্বান করে এবং সাইড কাটিং ও পুরনো কাগজ ব্যবহার করে কোনো মতে কাগজ উৎপাদন করে আসছে মিল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু গত বছর পাল্প আমদানির জন্য তিন দফায় টেন্ডার ডাকা হলেও তাতে সাড়া পাওয়া যায়নি। এর আগে টেন্ডারে অংশ নেয়া একজন ঠিকাদারকে কার্যাদেশ দেয়া হলেও তিনি পাল্প সরবরাহে ব্যর্থ হন। পরিস্থিতি এমন হওয়ার কারণ অনুসন্ধান বা প্রতিকারে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা জানা যাচ্ছে না। বাংলাদেশ পেপার মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএমএ) বলেছিল, আন্তর্জাতিক বাজারে পাল্পসহ অন্যান্য উপকরণের দাম ব্যাপকভাবে বেড়েছে। সেই সাথে কাঁচামাল আমদানির জন্য মালবাহী কনটেইনার সঙ্কটে পরিবহন ব্যয় বহুগুণ বেড়ে গেছে।
শুধু তো কর্ণফুলী পেপার মিলই নয়; দেশের পুরো কাগজশিল্পই রুগ্ণ। বিশেষ কর ২০২০ সালে মহামারী করোনা শুরুর পর থেকে এ দুরবস্থা। দীর্ঘ দুই বছর দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কার্যত বন্ধ ছিল। অফিস আদালতের কার্যক্রমের অনেকটা চলে অনলাইনে, ঘরে বসে। আর্থসামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সভা-সমিতি চলে যায় ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে। কাগজপত্রের ব্যবহার একরকম বন্ধই হয়ে যায়।
দেশের মিলগুলোতে অফসেট, নিউজপ্রিন্ট, লেখা ও ছাপার কাগজ, প্যাকেজিং পেপার, ডুপ্লেক্স বোর্ড, মিডিয়া পেপার, লাইনার, স্টিকার পেপার, সিকিউরিটি পেপার এবং বিভিন্ন গ্রেডের টিস্যু পেপার ইত্যাদি নানা ধরনের পণ্য উৎপাদন করা হয়। তবে উৎপাদিত পণ্যের ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ লেখা ও ছাপার কাগজ, যা মূলত শিক্ষার উপকরণ।
মিলগুলো নানা ধরনের কাগজপণ্য উৎপাদন করলেও এ ক্ষেত্রে একাধিপত্য আছে কিছু বড় ব্যবসায়ী গ্রুপের মালিকানাধীন মিলের। ওই সব বড় গ্রুপের মিলগুলোর সাথে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারে না ছোট মিলগুলো।
কাগজশিল্পের সাথে চাকরি ও অন্যান্য সূত্রে অন্তত ১৫ লাখ মানুষ সরাসরি জড়িত। শ্রমঘন এ শিল্পের টিকে থাকা অর্থনীতির দিক থেকে যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি জাতির শিক্ষাদীক্ষা, মননশীলতার বিকাশ ইত্যাদি বিবেচনায় জাতীয় স্বার্থেও অত্যন্ত জরুরি। অথচ খাতটি তেমন গুরুত্ব পাচ্ছে বলে মনে হয় না।
এমন তথ্যও গণমাধ্যমের খবরে এসেছে, করোনা মহামারীকালে প্রায় দুই বছর ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম অনলাইনে চলায় এবং অফিস-আদালতের কাজ সীমিত থাকায় কাগজ বিক্রিতে ধস নামে। একটি খবরে বলা হয়, প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায় অনেক ছোট মিলে। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে দেশের ১১০টি পেপার মিলের মধ্যে ৮০টিতে উৎপাদন বন্ধ ছিল।
পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক হয়েছে এমন নয়। কাগজশিল্পে কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারী শুধু নয়; বরং জাতীয় স্বার্থে এ শিল্প রক্ষায় দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া জরুরি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা