পুলিশের তৎপরতা বাড়াতে হবে
- ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০০:০৫
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে রাজধানীসহ সারা দেশে চলছে র্যাব-পুলিশের অভিযান। প্রায় প্রতিদিন গ্রেফতার হচ্ছে অপরাধীরা। তবু কোনোভাবে থামছে না চুরি, ছিনতাইসহ ভয়ঙ্কর সব অপরাধ। অপরাধ দমনে নেয়া হচ্ছে বিভিন্ন পদক্ষেপ। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হচ্ছে বলে মনে হয় না। এ বিষয়ে র্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের মন্তব্য প্রণিধানযোগ্য। তিনি একটি পত্রিকার সাথে কথা বলতে গিয়ে বলেছেন, ‘সম্প্রতি চুরি, ছিনতাইয়ের মতো অপরাধ বেড়েছে’।
পুলিশের গত ছয় মাসের একটি তদন্ত প্রতিবেদন বলছে, বর্তমানে সড়ক-মহাসড়ক এমনকি বাসাবাড়িতেও ডাকাতি আতঙ্ক বেড়েছে। মানুষকে পণবন্দী করে অর্থ লুটে নেয়ায় নতুন করে উদ্বেগে ফেলেছে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনীকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের প্রতিটি ইউনিটকে আরো সতর্ক থাকতে সম্প্রতি বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছে পুলিশ সদর দফতর। পাশাপাশি অন্য সংস্থাগুলোও নিচ্ছে বিশেষ ব্যবস্থা। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ৫০টি থানার ওসিকে বিশেষ বার্তা দেয়া হয়েছে।
সিআইডির সূত্র মতে, বারবার অপরাধে জড়ানো ১০ হাজার অপরাধীর মধ্যে ৭০ শতাংশ ঢাকা মহানগরীর। বাকি তিন হাজার সারা দেশের। গ্রেফতার হয়ে কিছু দিন জেল খাটে তারা। জামিনে বেরিয়ে আবার অপরাধে জড়ান। প্রতি মাসে দুই থেকে আড়াই হাজার নতুন আসামির আঙুলের ছাপ জমা হচ্ছে সিআইডির তথ্যভাণ্ডারে।
ডিএমপির এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত রাজধানীতে চুরির ঘটনা ঘটেছে এক হাজার ১৬৫টি। ডাকাতি ও ছিনতাই ৮৫টি। এসব নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৫ জন পুলিশ সদস্য। অস্ত্র উদ্ধার মামলা হয়েছে ৪৫টি, বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে ৪০টি। সাম্প্রতিক অপরাধের বিষয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার একটি পত্রিকাকে বলেছেন, ‘ইদানীং বিভিন্ন ধরনের চুরির ঘটনা ঘটছে। এখন আমরা চুরির মামলাগুলোও মনিটরিং সেলে নিয়ে আসছি। বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে ছিনতাইয়ের ঘটনাগুলোয়। এ বিষয়ে বিশেষ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে সব ক্রাইম ডিভিশনকে।’
অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আনতে সারা দেশের সব ইউনিটকে পুলিশ সদর দফতর থেকে ১০টি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ওই নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ডাকাতি ঘটলে এজাহারকারীর বক্তব্যের আলোকে সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা করতে হবে। এজাহারকারীর তথ্যে অসামঞ্জস্য দেখা দিলে যাচাই-বাছাই করে দ্রুত বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নিতে হবে। ডাকাতির মামলায় পুলিশ সুপার ও মেট্রো ডিসি মামলা তদারক করবেন। যেকোনো এলাকায় ডাকাতি ঘটলে ও মামলা হলে পুলিশ সুপার নিজে অথবা ন্যূনতম একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তদারকি করবেন। সাজাভোগকারী ডাকাত ও জামিনপ্রাপ্ত আসামিদের প্রয়োজনীয় তথ্যসহ তালিকা তৈরি করে তাদের অবস্থান ও গতিবিধি সম্পর্কে খোঁজখবর রাখতে হবে। এ ছাড়া ডাকাতির ঘটনা উদ্ঘাটনে প্রয়োজন মনে করলে পাশের পুলিশ ইউনিটগুলোর সাথে সমন্বয় বাড়াতে হবে। ঘটনার পরপর সম্ভাব্য স্থানে অভিযান চালিয়ে দ্রুত আসামি গ্রেফতার করতে হবে। ডাকাতি ও চুরির ঘটনায় বরখাস্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাবেক সদস্যদের তালিকা সংরক্ষণ করে তাদের অবস্থান ও গতিবিধির খোঁজখবর রাখতে হবে।
কিন্তু পুলিশ বাহিনী কিংবা র্যাবকে যত নির্দেশনাই দেয়া হোক না কেন, তা ততক্ষণ পর্যন্ত ফলপ্রসূ হবে না; যতক্ষণ এসব বাহিনীকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দমনে ব্যবহার করবে সরকার। এসব সংস্থার সদস্যদের পেশাদারিত্বের সাথে কাজ করার অনুকূল পরিবেশ দেয়া না হলে ফৌজদারি অপরাধ দমন করা খুব কঠিন।
কারণ, পুলিশের মূল কাজ অপরাধ দমন করা; কিন্তু এই কাজে মনোযোগী না হলে তাদের পক্ষে সঠিকভাবে অপরাধের তদন্ত করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। ফলে অপরাধীর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণ করা কঠিন হয়ে পড়ে। আবার বিচারের দীর্ঘসূত্রতার কারণেও একই ব্যক্তি একই অপরাধে জড়াচ্ছেন। তাই যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে মামলার তদন্ত হলে দোষীদের আইনের আওতায় বিচার করা সহজ হয়; সংঘটিত অপরাধের শাস্তি দেয়া যায়। এতে অপরাধীদের মনে ভীতি জন্ম নেয়। তাতে অপরাধ কমে আসে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা