মশার প্রজননক্ষেত্র ধ্বংস করুন
- ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০০:০৫
ডেঙ্গু একটি ভাইরাসজনিত রোগ। এর জীবাণু মানুষের শরীরে ঢোকে এডিস মশার মাধ্যমে। বর্ষায় বাসাবাড়িতে পানি জমে এ মশার বংশবিস্তার বেশি ঘটে। ২০০০ সালে বাংলাদেশে প্রথম ডেঙ্গুর বড় ধরনের প্রকোপ দেখা দেয়। মশা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে পরের বছরগুলোতে এর প্রকোপ খুব বেশি দেখা না দিলেও ২০১৯ সালে তা ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়ে। ওই বছর দেশে ডেঙ্গুতে দেড় শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। আর আক্রান্ত হয় লাখো মানুষ।
আমাদের দেশে সাধারণত জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ডেঙ্গুর প্রকোপ থাকে। এ বছর গত দুই মাস ধরে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে। ডেঙ্গুর প্রকোপ যে বিগত কয়েক মাসের তুলনায় বেড়েছে এর প্রমাণ মিলে চলতি বছর ডেঙ্গুতে এক দিনে সর্বোচ্চ পাঁচজনের মৃত্যুর ঘটনায়। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, গত সোমবার সকাল ৮টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ওই পাঁচজনের মৃত্যু হয়। এ বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ১৩ জন রাজধানীর বাসিন্দা। আর চট্টগ্রাম বিভাগে মারা গেছে ১৬ জন, তাদের মধ্যে ১৫ জনই কক্সবাজারের। এ ছাড়া বরিশালে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যমতে, ডেঙ্গুতে এ বছর সর্বোচ্চ ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে আগস্ট মাসে। সেখানে সেপ্টেম্বরের ছয় দিনেই মারা গেছে ১০ জন। মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় ২৮৪ জন। এর মধ্যে ২২৪ জন ঢাকার হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছে। বর্তমানে সারা দেশে ভর্তি রোগী ৮৫০ জন, যার মধ্যে ঢাকায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৭১১ জন। এ বছর এখন পর্যন্ত মোট সাত হাজার ৩৯৭ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
ঢাকায় প্রাক-বর্ষা জরিপে গত বছরের তুলনায় এবার ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী এডিস মশার প্রকোপ বেশি দেখা গিয়েছিল। তা থেকে জনস্বাস্থ্যবিদরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন, এ বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়বে। তাদের সেই শঙ্কাই এখন বাস্তবে রূপ নিতে শুরু করেছে। অথচ রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতামতের তেমন গুরুত্ব না দিয়ে মশা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিয়েছে বলে আমাদের জানা নেই।
মূলত, ডেঙ্গু রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখার সবচেয়ে বড় উপায় শহরাঞ্চলের আবাস্থল, খাল, নর্দমা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা। যাতে ডেঙ্গুবাহিত এডিস মশা সহজে বংশ বিস্তার না করতে পারে। এর জন্য মশার প্রজননক্ষেত্রগুলো ধ্বংসই হলো প্রাথমিক শর্ত। এ ছাড়া মশা বেড়ে গেলে তা কমাতে ওষুধ ছিটানোর প্রয়োজন হয়ে পড়ে। সঙ্গত কারণে এবার বর্ষা মৌসুম শুরুর আগে মশার প্রজননক্ষেত্র ধ্বংস করা দরকার ছিল; কিন্তু ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনসহ দেশের অন্যান্য বিভাগীয় নগরীর সিটি করপোরেশন ও শহরাঞ্চলের পৌর কর্তৃপক্ষ তেমন কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি। ফলে দেশের বিভিন্ন স্থানে কমবেশি ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দিয়েছে। আর রাজধানী ঢাকায় এর প্রকোপ গত কয়েক মাসের তুলনায় বেড়ে গেছে।
আমরা মনে করি, বিগত ২০১৯ সালের মতো ডেঙ্গু ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ার আগেই এর প্রজননক্ষেত্র ও লার্ভা ধ্বংসের কার্যক্রম জোরেশোরে নেয়া আবশ্যক হয়ে পড়েছে। একই সাথে মশার উপদ্রব কমাতে সঠিক মাত্রায় ওষুধ ছিটাতে হবে। একই সাথে শহরাঞ্চলের বিশেষ করে ঢাকার খালগুলো পরিষ্কারের উদ্যোগ নিতে হবে। এ কাজে গাফিলতি হলে ডেঙ্গু ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। সিটি করপোরেশনসহ পৌরসভাগুলো মশা নিয়ন্ত্রণের কাজে তৎপর হলে ভালো হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা