২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
জি কে প্রকল্পের বেশির ভাগ পাম্প অচল

চার জেলার কৃষকদের উদ্ধার করুন

-

নয়া দিগন্তের কুষ্টিয়া প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ভেড়ামারায় বৃহৎ সেচ প্রকল্প গঙ্গা কপোতাক্ষের (জি কে) তিনটি পাম্পের মধ্যে দু’টিই অচল। আমন মৌসুমের প্রারম্ভেই এ অবস্থায় চার জেলার হাজার হাজার চাষি সেচ সঙ্কটের সম্মুখীন। কখন পাম্প আবার সচল হবে, তা অনিশ্চিত বলে জানা গেছে।
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় পদ্মার তীরবর্তী জনপদে ১৫ জুলাই থেকে আমন মৌসুমের জন্য প্রকল্পের প্রধান খালে পানি আসার কথা। সে দিন পাম্প চালু করতে গিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা দেখেন যে, তিনটির মধ্যে দু’টিই চালু হচ্ছে না। ফলে মাত্র একটি পাম্প মেশিন দিয়ে জি কে প্রকল্পের আওতাভুক্ত কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ ও মাগুরা জেলায় সেচের পানি সরবরাহ করতে হয়। তাই এখনো জি কে প্রকল্পের বিরাট অংশেই পানি দেয়া যায়নি। এ পরিস্থিতিতে প্রকল্পের পানির ওপর নির্ভরশীল বেশির ভাগ এলাকায় আমন ধান রোপণের কাজ আরম্ভই করা সম্ভব হয়নি। এতে করে আমনের আবাদ শুধু পিছিয়ে যাচ্ছে না, যথাযথ সময়ে ধান না লাগানোর ফলে বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। জি কে প্রকল্প পাম্প হাউজের নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, তিনটি পাম্প দিয়ে চার জেলায় একত্রে এক লাখ ১০ হাজার হেক্টর আবাদি জমিতে পানি দেয়া যায়। দু’টি পাম্প চালু থাকলেও রেশনিং করে তা করা যেতে পারে; কিন্তু কেবল একটি পাম্প দিয়ে এত বড় এলাকায় পানি সেচ দেয়া প্রায় অসম্ভব বিষয়। তাই পাম্পের অচলাবস্থা নিয়ে উপরের সবাইকে জানানো হয়েছে।
পাউবোর প্রকল্প পরিচালক (পিডি) জানান, একটি পাম্প দিয়ে সব জেলায় ঠিকভাবে পানি দেয়া যায় না। দ্রুত এর সুরাহার চেষ্টা চলছে। জি কে’র আধুনিকায়নের জন্য ১৭ বছর আগে জাপান থেকে তিনটি বড় পাম্প কেনা হয়েছিল। ২০০৯ সালে মেশিন বসানো সম্পন্ন হয়। এসব পাম্প দিয়ে সেকেন্ডে এক হাজার ৩০০ কিউসেক পানি তোলা যায়। কিন্তু দু’টি পাম্প অচল বলে পানি তোলা যায় এর অর্ধেকেরও কম। কৃষি বিভাগ জানায়, মৌসুমের শুরুতেই পাম্প দু’টি বিকল হওয়ায় পালাক্রমে পানি দিতে হয়।
কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা আরো বলেন, শুধু বিশেষ এলাকায় সেচ দেয়া হচ্ছে না; বরং সবাইকে তা দেয়ার চেষ্টা চলছে। যেমন- চুয়াডাঙ্গায় পানি সরবরাহ করা হলে কুষ্টিয়া-মাগুরায় তা বন্ধ রাখা হচ্ছে যাতে সবাই পানি পায়। কিন্তু জনৈক কৃষক অভিযোগ করেন, ‘এক সপ্তাহ পেলে পরের সপ্তাহে পানি পাই না। যথাসময়ে সেচ দিতে না পারায় বেশি খরচে ডিজেলের পাম্প চালু রেখেছি।’ মাঠের অবস্থা ঘুরে দেখা যায়, সর্বত্র অবস্থা অভিন্ন। এক দিকে বর্ষায়ও অপ্রতুল বর্ষণ; আবার ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি। এ কারণে কেউ কেউ আমন চাষ করলেও কেউবা তা পারছেন না।
অবিলম্বে চার জেলার কৃষককে উদ্ধারের আমরাও জোর দাবি জানাই। অন্যথায় আমন ফলন মারাত্মক ক্ষতির শিকার হবে।


আরো সংবাদ



premium cement