উইঘুর মুসলিমদের ওপর নিপীড়ন
- মানবতা রক্ষায় আন্তরিক হন
- ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০০:০০
চীনের উইঘুর মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে জাতিসঙ্ঘ সর্বশেষ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে- উইঘুরদের ওপর চীন ভয়াবহ নিপীড়ন চালিয়েছে। এর ‘বিশ্বাসযোগ্য তথ্য-প্রমাণ’ পাওয়া গেছে। দীর্ঘদিন ধরে চীনের বিরুদ্ধে অভিযোগ- বেইজিং সংখ্যালঘু উইঘুরদের বন্দিশিবিরে আটকে রেখেছে। মানবাধিকার গ্রুপগুলোর অনুমান- এর সংখ্যা ১০ লাখ। আর জিনজিয়াং প্রদেশের মোট জনসংখ্যা এক কোটি ২০ লাখ।
তাদের ওপর পৈশাচিক সব নির্যাতন চালানো হচ্ছে। এর মধ্যে অঙ্গহানি ও বিকৃতির অভিযোগও রয়েছে। যৌন ও লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্য করা হচ্ছে। জোর করে জন্মনিয়ন্ত্রণের নীতি চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। এ ছাড়াও বহু নিবর্তনমূলক ব্যবস্থা কায়েম করে তাদের স্বাধীনতা খর্ব করছে চীন। নানামাত্রিক সুযোগ-সুবিধা সঙ্কোচনের মাধ্যমে উইঘুরকে ‘জাতিগত বিলোপের’ পথে হাঁটছে চীনা শাসকরা।
বেইজিংয়ের কিছু কর্মকাণ্ডকে মানবাধিকার কমিশন মানবতাবিরোধী অপরাধ বলে উল্লেøখ করেছে। জাতিসঙ্ঘের প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়েছে- বিধিবহির্ভূত স্বাধীনতাবঞ্চিত এসব ব্যক্তিকে মুক্তি দিতে পদক্ষেপ গ্রহণ করা। তাদের মতে, পরিস্থিতি বিপজ্জনক পর্যায়ে চলে গেছে। এর প্রতিকার পেতে বিভিন্ন স্তরে খোলামেলা আলোচনা প্রয়োজন। এতে আরো বলা হয়েছে- বর্তমান চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের আমলে সবচেয়ে বেশি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে। অন্য দিকে, এমন নির্মম কর্মকাণ্ডের পেছনে চীনের যুক্তি হচ্ছে নিজস্ব জাতীয় নিরাপত্তা। নিজ দেশের অখণ্ডতা ও জাতীয় সংহতির জন্য এসব করছে দেশটি। মানবাধিকার কমিশনের প্রতিবেদন নিয়ে চীন আগের মতো একই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। একে পশ্চিমা দেশগুলোর ‘সাজানো প্রহসন’ আখ্যায়িত করে প্রতিবেদনটি প্রকাশ না করার আহ্বান জানায়। অথচ মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলের দায়িত্ব পালনের শেষ কার্যদিবসে এটি প্রকাশ করেন। এর ১৩ মিনিট পর তিনি অবসরে যান। কেন তিনি এত তড়িঘড়ি করার প্রয়োজন অনুভব করলেন সেই ব্যাখ্যাও প্রতিবেদনে রয়েছে। এর মাধ্যমে তিনি উইঘুরদের জরুরি ভিত্তিতে সহযোগিতার হাত বাড়াতে চান।
উইঘুরদের মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে ওয়াশিংটনের নেতৃত্বে পশ্চিমারা একযোগে সমালোচনা করেন। কয়েক যুগ ধরে চীনকে শায়েস্তা করার একটি নীতি হিসেবে একে প্রয়োগ করে আসছে। নিপীড়িত ও বঞ্চিত এ জাতির মানবাধিকার রক্ষায় বাস্তবে কোনো অগ্রগতি সাধন করতে পারেনি পশ্চিমারা। বরাবরই দেখা গেছে, অভিযোগ হিসেবে চীনকে ঘায়েল করতে এটি বৈশ্বিক পরিসরে উত্থাপিত হয়েছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে কার্যকর ব্যবস্থাপনা তৈরি করেনি। বিশ্ব মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় এমন আরো অভিযোগ পাওয়া যাবে। এ ক্ষেত্রে ধর্মের কারণে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও বঞ্চনার ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটছে। ফিলিস্তিনিদের জানমাল-সম্মান ধ্বংসের মতো জঘন্য অপকর্ম দশকের পর দশক ধরে করে আসছে ইসরাইল। পশ্চিমারা চাইলে সম্মিলিতভাবে ইসরাইলকে নিবৃত্ত করতে পারে। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে ইসরাইল এমন অপকর্ম করলেও তা থামাতে পশ্চিমা দুনিয়া উদাসীন।
আন্তর্জাতিক আইন ও বিধি-বিধানে মানবাধিকারকে চমৎকার সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। কেউ যাতে কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে তা লঙ্ঘন করতে না পারে সে জন্য উপায় রয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের। বিশেষ করে জাতিসঙ্ঘ প্রতিষ্ঠার পর তৈরি হওয়া বিশ্বব্যবস্থাপনায় এর ওপর অত্যন্ত জোর দেয়া হয়েছে।
মানবাধিকার লঙ্ঘনের উদাহরণ তুলনামূলক বিশ্লেষণ করা হলে দেখা যাবে- এ অপরাধ অন্য কোনো সময়ের চেয়ে কমেনি বরং আরো বেড়েছে। হতাশার দিক হচ্ছে, বিশ্বশক্তিগুলোর এ বিষয়ে বৈষম্যপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি। জাতি গোত্র ধর্ম বর্ণভেদে সর্বজনীনভাবে মানবাধিকারকে দেখা হলেও পরাশক্তিগুলো দেখছে স্বার্থের দৃষ্টিকোণ থেকে। যত দিন দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টানো না হবে তত দিন বৈশ্বিক মানবাধিকার লঙ্ঘিত হতে থাকবে। চীনকে ঘায়েলের মানসিকতা ছেড়ে উইঘুরদের মানবাধিকারের বিষয়টি দেখতে হবে। একইভাবে সারা বিশ্বের সব মানুষের মানবাধিকার রক্ষাকে একই পাল্লায় সমান গুরুত্ব দিয়ে মাপতে হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা