দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি দিতে হবে
- ২৬ আগস্ট ২০২২, ০০:০৫
নয়া দিগন্তের রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি এক রিপোর্টে জানিয়েছেন, কাঁচামালের অভাবে এক সপ্তাহ ধরে কর্ণফুলী পেপার মিল বন্ধ রয়েছে। রুগ্ণ যন্ত্রপাতিসহ বিভিন্ন সমস্যার কথা বলে ২০১৭ সালে এ মিলের (কেপিএম) নিজস্ব কূপ থেকে কাঁচামাল তথা বাঁশ ও পাল্পউড দিয়ে কাগজ উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। বিদেশের পাল্প দিয়ে কাগজ তৈরির জন্য টেন্ডার দিলেও কেউ সাড়া দেয় না। এ দিকে, সাইডকাটিং ও পুরাতন কাগজ ব্যবহার করে কোনোমতে কাগজ উৎপাদন করা হচ্ছে এখানে।
জানা গেছে, গত অর্থবছরে পাল্প আমদানির জন্য পরপর তিনবার টেন্ডার আহ্বান করা হলেও কেউ অংশ নেয়নি। এর আগে টেন্ডারে অংশ নেয়ায় এক ঠিকাদারকে ওয়ার্ক অর্ডার দেয়া হলেও তিনি পাল্প সরবরাহ করতে ব্যর্থ হন। উৎপাদনের জন্য পর্যাপ্ত পাল্পের ঘাটতি থাকায় মিলের উৎপাদন বিঘিœত হচ্ছে। অপর দিকে, কাগজ উৎপাদন না করায় মিলে কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে। ফলে সংশ্লিষ্ট সবাই উৎকণ্ঠিত। মেহনতি শ্রমিক-কর্মচারীদের দুর্ভোগের শেষ নেই। কেপিএমে নিজস্ব কূপ থেকে আহরিত বাঁশ ও পাল্পউড (নরম কাঠ) দিয়ে কাগজ উৎপাদন শুরু হয় ১৯৫৩ সালে। ১৯৯১ সালে কেপিএম তার রুগ্ণতা কাটিয়ে উৎপাদন সামর্থ্যরে পরিপূর্ণ ব্যবহার করে কাগজ রফতানিতে সফল হয় এবং সে বছর চার হাজার ১০২ জন শ্রমিক-কর্মচারী, কর্মকর্তা এতে নিয়োগ করা হয়েছিল। ’৯০-৯১ সালে কেপিএমে সংস্থাপিত ধারণক্ষমতা ছিল ৩৩ হাজার টন, প্রাক্কলিত উৎপাদনক্ষমতা ২৮ হাজার ৪৩৮ টন এবং প্রকৃত উৎপাদন ৩০ হাজার ২১৬ টন। কেপিএমের কাগজের মধ্যে রয়েছে- লেখার কাগজ, ছাপার কাগজ, করোগেটেড বোর্ড, মোমের প্রলেপ দেয়া কাগজ, আঠাযুক্ত ফিতা ও বিটুমিন পেপার। ২০০৯-১০ সালে এখানে উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছিল ২৪ হাজার ২০১ টন।
শ্রমিক-কর্মচারীরা জানিয়েছেন, স্থানীয়ভাবে উৎপন্ন চার-পাঁচ টন কাঁচা বাঁশ দিয়ে এক টন পাল্প তৈরি করা যায়। বাঁশ থেকে কাগজ উৎপাদনে টন-প্রতি ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হয়ে থাকে। কাঁচামাল হিসেবে বাঁশ ও পাল্পউড স্থানীয়ভাবে কেনা বন্ধ থাকায় প্রতি টন কাগজ উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে চার গুণ। অথচ দেশী বাঁশ ও পাল্পউডের কাগজের মানও উন্নত। বাঁশ ও পাল্পউড দিয়ে কেপিএমে কাগজ উৎপাদন বন্ধ থাকায় এর দামি দামি যন্ত্রপাতি অচল হয়ে পড়ছে। ফলে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের হেডম্যান ও কার্বারিরা জানান, কেপিএমের নিজস্ব এলাকা ৪৫ হাজার একর। এখানে এক হাজার পরিবারের দ্বিগুণসংখ্যক শ্রমিক-কর্মচারী এগুলোর জন্য কাঁচা বাঁশ ও পাল্পউড আহরণ, পরিবহন ও সরবরাহ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। কেপিএম কর্তৃপক্ষ কাঁচামালরূপে তার বদলে বিদেশী পাল্প ব্যবহারে উৎসাহী। যথাসময়ে বিদেশী পাল্প পাওয়া না যাওয়ায় এই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারখানা স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যেতে পারে। কারণ বারবার টেন্ডার দিয়েও বিদেশী পাল্প মিলছে না। কিন্তু দেশীয় কাঁচামাল কাজে লাগিয়ে কাগজ উৎপাদন করা হলে কোনো প্রকার সমস্যায় পড়তে হবে না বলে এখানকার শ্রমিক-কর্মচারীদের অভিমত। সিবিএ সভাপতির বক্তব্য, ‘এখানে কাগজ উৎপাদন না হলে মাসে বিপুল পরিমাণ অর্থ গচ্চা যাবে। কাঁচামাল সঙ্কট মোকাবেলায় অবিলম্বে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া উচিত।’ জিএম প্রশাসন বলেছেন, ‘টেন্ডার আহ্বান সত্ত্বেও বিদেশী পাল্প মিলছে না। পুরনো কাগজের দাম অনেক বেড়ে গেছে। কাঁচামাল পেলে আবার উৎপাদন আরম্ভ হবে এখানে।’
অতীতে ‘মহাদেশের বৃহত্তম কাগজের কল’ হিসেবে অভিহিত কেপিএমে উৎপাদন সঙ্কটের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে এবার কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জনগণের আশা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা