দ্রুত নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু করুন
- ২০ আগস্ট ২০২২, ০০:০৫
করোনাকালে দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকায় দেশের শিক্ষাব্যবস্থার অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। সেই ক্ষতি কবে কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে সেটাই বড় প্রশ্ন। বাস্তবতা হলো, সরাসরি লেখাপড়া থেকে দীর্ঘদিন দূরে থাকায় এখনো শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষের পাঠগ্রহণে পুরোপুরি অভ্যস্ত হয়ে ওঠেনি। বিশেষ করে প্রাথমিক স্তর থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের ছাত্রছাত্রীরা অধ্যয়নে শতভাগ মনোযোগ দিতে পারছে না। চলতি বছর প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক পর্যায়ের ষান্মাসিক পরীক্ষায় বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর সব বিষয়ে কৃতকার্য না হওয়া এর প্রমাণ। শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে পাঠগ্রহণে অমনোযোগী হওয়ার অন্যতম কারণ শিক্ষকের অভাবও। সারা দেশে এমপিওভুক্ত বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নেই।
বেসরকারি মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে প্রাথমিকভাবে এসব শূন্য পদের তথ্য পেয়েছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। ইতোমধ্যে মাঠপর্যায় থেকে প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। শূন্য পদের শিক্ষকদের যে তালিকা পাওয়া গেছে সেগুলো নির্ভুল করতে যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া শুরু করেছে সংস্থাটি। এনটিআরসিএ’র চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, টেলিটক থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ৬৬ হাজারের বেশি শিক্ষকের পদ শূন্য আছে। তবে, এ হিসাব এখনো চূড়ান্ত নয়। শূন্য পদের তথ্য হালনাগাদ করার সুযোগ দেয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠান প্রধানরা সংযোজন-বিয়োজনের সুযোগ পাবেন। এরপর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা শূন্য পদের তথ্য যাচাই করে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের কাছে পাঠাবেন। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা যাচাই করে প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সম্পাদনা করে এনটিআরসিএতে পাঠাবেন। পরে অধিদফতরগুলোতে পাঠাবে এনটিআরসিএ। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর, মাদরাসা শিক্ষা অধিদফতর ও কারিগরি শিক্ষা অধিদফতর তথ্য যাচাই করে দিলে তবে শূন্য পদের তথ্যসংখ্যা সঠিক বলে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
এনটিআরসিএ’র এক নির্দেশনায় জানানো হয়, প্রতিটি প্রতিষ্ঠানপ্রধানকে শূন্য পদের তথ্য সংশোধনের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। তথ্য ভুল থাকলে প্রার্থী, প্রতিষ্ঠানপ্রধান এবং এনটিআরসিএ সব পক্ষকে বিপাকে পড়তে হয়। অথচ তথ্য ঠিকভাবে দিতে পারলে অনেক জটিলতা আর থাকবে না। এনটিআরসিএ’র সর্বশেষ নির্দেশনায় বলা হয়েছে, গতকাল শুক্রবার থেকে শূন্য পদের তথ্য সংশোধন শুরু হয়েছে। ২৪ আগস্ট পর্যন্ত সংশোধনের সুযোগ পাবেন প্রতিষ্ঠানপ্রধানরা। ২৫-৩১ আগস্ট পর্যন্ত শূন্য পদের তথ্য মাঠপর্যায়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা যাচাইয়ের সুযোগ পাবেন। এরপর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শূন্য পদের তথ্য যাচাইয়ের সুযোগ পাবেন।
এনটিআরসিএ’র নির্দেশনা থেকে এটি সহজে অনুমেয়, তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের প্রক্রিয়া শেষ করে শূন্য পদের তালিকা চূড়ান্তভাবে প্রণয়ন করতে আরো বেশ কিছু দিন লাগবে। এর পরই বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার আয়োজন করা সম্ভব হবে। তবে স্মরণযোগ্য, আমাদের দেশে আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় কোনো কাজ ঠিক সময়ে হওয়ার নজির বিরল। পদে পদে সময়ক্ষেপণের পর কোনো কাজ সম্পন্ন হওয়াটাই রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। এ পরিস্থিতিকে খানিকটা ‘ডাক্তার আসিবার পূর্বে রোগীটি মারা গেল’- এমন অবস্থার সাথে তুলনা করা যেতে পারে।
আমরা মনে করি, করোনা মহামারীকালে সরকার যেভাবে অবিবেচকের মতো সারা দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে স্থবির করে দিয়ে জাতিকে অপূরর্ণীয় ক্ষতির সম্মুখে ঠেলে দিয়েছে, তার মোকাবেলা করা প্রয়োজন শিক্ষাকার্যক্রমে ক্ষিপ্রগতি এনে। কিন্তু এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শূন্য পদে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার যে নমুনা দেখা যাচ্ছে, তা আশাব্যঞ্জক নয়। তাই মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান কার্যক্রমে গতিশীলতা আনতে অতিদ্রুত এমপিওভুক্ত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগপ্রক্রিয়ার উদ্যোগ নিতে হবে, যাতে শিক্ষার্থীদের যথাযথ পাঠদানের মাধ্যমে শিক্ষার ক্ষতি কিছুটা হলেও পূরণ হয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা