জনজীবনে চরম অসহায়ত্ব
- ১৩ আগস্ট ২০২২, ০০:০৫
পণ্যমূল্য বাড়ার গতি এখন পাগলা ঘোড়ার গতিকে হার মানাচ্ছে। সম্প্রতি সব ধরনের জিনিসের দাম উপর্যুপরি বেড়েছে। আবারও বড় ধরনের উল্লম্ফনের আশঙ্কায় জনজীবন আড়ষ্ট হয়ে আছে। করোনা মহামারীর পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, তারপর তেলের দামের সীমাহীন বৃদ্ধি, পণ্যমূল্য বাড়ার এক দুষ্টচক্র সৃষ্টি করেছে। চাল, ডাল, কাঁচাবাজারসহ প্র-যেকটি নি-যপণ্যের অগ্নিমূল্যের সাথে যোগ হচ্ছে পানি ও বিদ্যুতের দাম নতুন করে বাড়ানোর সরকারি ফন্দি। এ অবস্থায় বিশেষজ্ঞরা সামনে বড় ধরনের বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)-এর বাজার প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, কাঁচাবাজারে সব জিনিসের দাম বেড়েছে। তেলের দাম বাড়ানোর পর সংস্থাটির প্রতিবেদন অনুযায়ী চাল, ডাল, আটা, ময়দা, বোতলজাত সয়াবিন তেল, চিনি, রসুন, পেঁয়াজ, মরিচ, ডিম ও বয়লার মুরগির দাম বেড়েছে। কোনো ধরনের মোটা চালের দাম ৫০ টাকার নিচে নেই। মাঝারি মানের চালের দাম ৬০ টাকার মধ্যে। সরু চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭৮ টাকার মধ্যে। টিসিবির তালিকায় নেই কাঁচাবাজারের এমন কিছু পণ্যের দাম নিয়ে প্রতিবেদন দিয়েছে একটি প-রিকা। তাতে দেখা যাচ্ছে, এক সপ্তাহ আগের তুলনায় কেজিপ্রতি সবজির দাম বেড়েছে গড়ে ১০ টাকা। কাঁচামরিচের দাম ২৬০ টাকা হয়েছে। মাছের দাম গড়ে ২০ টাকা বেশি।
অন্যান্য জিনিসের দাম নতুন করে বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সাবান, টুথপেস্ট, কাগজ-কলম, পোশাকসহ জীবন ধারণের জন্য দ্বিতীয় ধাপের এ উপকরণগুলো মূলত শিল্পপণ্য। পণ্যমূল্য বৃদ্ধির ঢেউয়ে এগুলোর ওপর প্রভাব পড়ে কিছু সময় পর। এগুলোর দাম কয়েক দফায় আগেই বেড়েছে। এবার জ্বালানি তেলের মূল্য বাড়ার আঁচ আরো বিস্তৃত পরিসরে এগুলোর ওপর পড়তে যাচ্ছে। কারণ, তেলের বাড়তি দাম এগুলোর উ-পাদন খরচ বাড়াবে। পরিবহনের বাড়তি খরচও এসব শিল্পপণ্যের ওপর পড়বে। শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো পণ্যের নুতন দাম নির্ধারণ করতে শুরু করেছে।
এদিকে বিদ্যু- উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ও ওয়াসা, বিদ্যু- ও পানির দাম বড়দাগে বাড়াতে যাচ্ছে। বিদ্যুতের দাম ৬৬ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে পিডিবি। কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি তা ৫৮ শতাংশ বাড়ানোর সুপারিশ করেছে। ঢাকা ওয়াসা পানির দাম আবাসিকে ২৫ শতাংশ ও বাণিজ্যিক ব্যবহারে ১৯ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে। যদিও ওয়াসার বোর্ডে দাম ৫ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছিল। চট্টগ্রাম ওয়াসা আরো আগেই পানির দাম ৩৮ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে। সেবাদানকারী এসব সরকারি প্রতিষ্ঠান বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের চরি-র ধারণ করছে। পণ্যমূল্যের চাপে দিশাহারা অসহায় মানুষের ওপর তারাও চেপে বসতে যাচ্ছে। অথচ সেবার মানে তারা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চেয়ে অনেক পিছিয়ে। এসব অভিযোগের বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হলে প্রতিষ্ঠানগুলো বড় অপচয় থেকে বাঁচত। দামও বাড়াতে হতো না।
পরিস্থিতি এমন, যেন প্রতিকারের কোনো উপায় নেই। দুরবস্থা যখন মানুষকে চেপে ধরছে সরকার নির্বিকার তাকিয়ে দেখছে। জনগণের এমন অসহায় অবস্থা মেনে নেয়া যায় না। পরিস্থিতি সামাল দিতে দরকার সততা ও দক্ষতা। গত এক যুগে সততার চর্চা পুরোপুরি উপেক্ষিত। অনেক ক্ষে-রে ছলচাতুরী ও মিথ্যার আশ্রয় নেয়া হয়েছে। দেখা যায়নি দক্ষতার কোনো ছাপ। এখনো যদি সরকার একই ধরনের চর্চা অব্যাহত রাখে তাহলে জনদুর্ভোগ আরো বাড়বে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা