২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
সিন্ডিকেটের কারসাজি দেখার কেউ নেই

সয়াবিনের দাম কমছে না

-

সয়াবিনের দাম নিয়ে এখনো সিন্ডিকেটের কারসাজি চলছে। বিশ্ববাজারে দাম কমেছে বেশ আগে। সে জন্য দেশেও দাম কমানোর উদ্যোগ নেয় সরকার। সাত দিন আগে সরকারিভাবে সয়াবিনের দর কমানোর ঘোষণা দেয়া হলেও বাজারে তার কোনো প্রভাব পড়েনি। ১৮ জুলাই থেকেই পাইকারি বা খুচরা সব বাজারে হ্রাস করা দরে সয়াবিন বিক্রির কথা ছিল; কিন্তু তা হয়নি। আগের বাড়তি দামেই সয়াবিন সরবরাহ করছে কোম্পানিগুলো এবং খুচরা ব্যবসায়ীরাও সেই বাড়তি দরেই বিক্রি করছেন। মাঝখান থেকে সয়াবিন আমদানিতে সরকারের দেয়া ভ্যাট ছাড়, এলসি কমিশন ও এলসি মার্জিন প্রত্যাহারের পুরো ফায়দা নিচ্ছেন আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা।
বিশ্ববাজারে দর কমে যাওয়ার পর দেশের বাজারে সয়াবিনের লিটার ১২৪ টাকা হওয়ার কথা। এ বিষয়ে ব্যবসায়ীদের সাথে বৈঠক করে সরকার আবারো তাদের জন্য ছাড় দিয়েছে। বৈঠকের পর ১৮৫ টাকায় বিক্রির ঘোষণা দেন আমদানিকারকরা। ১২৪ টাকায় বিক্রি করলেও ব্যবসায়ীদের লাভ থাকার কথা। সেখানে ৬১ টাকার বাড়তি সুবিধা দেয়ার কী যুক্তি থাকতে পারে তা বোধগম্য নয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, সেই ১৮৫ টাকা দরেও বাজারে সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে না। লাভের ওপর লাভ করার এই নষ্ট প্রবণতা সুযোগসন্ধানী মুনাফাখোর ব্যবসায়ীদের স্বভাবে পরিণত হয়েছে।
কোনো পণ্যের দাম বিশ্ববাজারে এক টাকা বাড়লে দেশের ব্যবসায়ীরা যেখানে পরের দিনই ১০ টাকা বাড়িয়ে দেন, সেখানে দাম কমানোর ঘোষণা এক সপ্তাহেও বাস্তবায়ন হয় না। শিগগিরই এটি কার্যকর হবে এমন আশা করারও কোনো কারণ দেখা যাচ্ছে না। কারণ এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার কোনো উৎসাহ-উদ্দীপনা সরকারের মধ্যে তেমন একটা দেখা যাচ্ছে না। ফলে তেল নিয়ে অবাধে মুনাফাখোরী চালিয়ে যাচ্ছে সুবিধাভোগী ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। আরো তিন মাস তারা সয়াবিন আমদানিতে রেয়াতি ভ্যাট সুবিধা পাবেন। দুই মাসের ব্যবধানে আন্তর্জাতিক বাজারে সব রেকর্ড ছাড়িয়ে সয়াবিনের দাম ৩২ শতাংশ এবং পাম-অয়েলের দাম ৪৮ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে। ফলে শুধু গত সাত দিনে সরকারি সুবিধার আওতায় আমদানি করা সয়াবিন থেকে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট হাজার কোটি টাকার বেশি ভোক্তাদের পকেট থেকে হাতিয়ে নিয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
কৃষি ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে দেশে বছরে ভোজ্যতেলের চাহিদা ২০ থেকে ২৪ লাখ টন। দুই লাখ টনের ব্যবধান আছে উভয়ের হিসাবে। সে যাই হোক, দেশে উৎপাদন থেকে ভোজ্যতেলের চাহিদা মাত্র ১২ শতাংশ পূরণ হয়। বাকিটা আমদানি করা হয়। ২০২০-২১ অর্থবছরে ভোজ্যতেল আমদানিতে প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয় আর চলতি বছরের প্রথম ১০ মাসে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। কিন্তু সরকারিভাবে ব্যবসায়ীদের নানা সুবিধা দেয়ার পরও ভোজ্যতেল নিয়ে জনগণের ভোগান্তির আশু অবসানের সম্ভাবনা কম। কারণ, সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভেজাল কমাতে আগামী ৩১ জুলাই খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি বন্ধ হবে। আর খোলা পাম- অয়েল বিক্রি বন্ধ হবে ৩১ ডিসেম্বর। খোলা তেল বিক্রি বন্ধ হয়ে গেলে প্যাকেটজাত তেলের দাম ২ থেকে ৪ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন। তবে তা বাস্তবে আরো বেশিও হতে পারে। আর এ জন্যই অসাধু চক্র নতুন দরের বোতলজাত সয়াবিন তেল সরবরাহে গড়িমসি করছে। তারা শিগগিরই আরেক দফা মুনাফা করার সুযোগ নিতে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নেবে এমন আশা করারও কোনো কারণ নেই। যারা জনগণের নয় বরং ব্যবসায়ীদের স্বার্থকেই অগ্রাধিকার দেয় তাদের কাছে জনগণের আশা করার কী থাকতে পারে?

 


আরো সংবাদ



premium cement
ফিটনেসবিহীন যানবাহনের কারণে চ্যালেঞ্জের মুখে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ২৪ ঘণ্টায়ও মহাসড়ক ছাড়েনি ডিইপিজেডের লেনী ফ্যাশনের শ্রমিকরা বুধবার সকালে ঢাকার বাতাসের মান ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ চীন সীমান্তের কাছে গুরুত্বপূর্ণ শহরের দখল নিল মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা সুদানে গৃহযুদ্ধে নিহতের সংখ্যা আগের হিসাবকে বহুগুনে ছাড়িয়ে গেছে, বলছে গবেষণা চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যা : যৌথ বাহিনীর অভিযানে আটক ২০ শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ‘গণহত্যার’ অভিযোগ নিহত আইনজীবীকে নিয়ে অপপ্রচার করছে ভারতীয় গণমাধ্যম : প্রেস উইং হিজবুল্লাহ-ইসরাইল অস্ত্র-বিরতি চুক্তি জয় দিয়ে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ শুরু করতে চায় টাইগ্রেসরা সহজ জয়ে সিরিজে সমতা পাকিস্তানের

সকল