তা হলে পদ্মা সেতু কেন?
- ২৪ জুলাই ২০২২, ০০:০০
নয়া দিগন্তের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, শরীয়তপুর জেলা শহর থেকে বহুলালোচিত পদ্মা সেতুর সংযোগ সড়ক পর্যন্ত ঢাকা-শরীয়তপুর সড়কটি অপ্রশস্ত ও ভাঙাচোরা হওয়ায় পদ্মা সেতুর আসল সুবিধা থেকে শরীয়তপুরবাসী বঞ্চিত। সেতু চালুর পর এই সড়কে যানবাহনের চাপ বেড়ে যাওয়ায় প্রতিনিয়ত যানজটে মাত্র ৪০ মিনিটের পথ পেরুতে সময় লাগে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা। এমনকি, কখনো বা তিন ঘণ্টা পর্যন্ত লেগে যায় জেলা শহর থেকে জাজিরা প্রান্তের পদ্মা সেতুর টোল প্লাজা পর্যন্ত যেতে।
জানা যায়, একই সড়কে কোটাপাড়ায় কীর্তিনাশা নদীর উপর মাত্র ১২ ফুট চওড়া, অপ্রশস্ত ও অত্যধিক ঝুঁকিবহুল পুরনো সেতুটি এখন গলার কাঁটা। পদ্মা সেতুর যাত্রী ও যান শ্রমিকদের জন্য এই জরাজীর্ণ সেতু অতীব বিপজ্জনক। ‘ক্ষতিগ্রস্ত সেতু’ উল্লেখ করে, শুধু হালকা যান চলার কথা জানিয়ে ভারী যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে সেখানে সড়কের ধারে সাইনবোর্ড দিয়েছে শরীয়তপুর সওজ কর্তৃপক্ষ। বিকল্পের অভাবে এই সড়ক ও সেতু দিয়েই প্রাণের ঝুঁকি এবং চরম দুর্ভোগ নিয়ে চলতে হয় হাজার হাজার যান ও কয়েক লাখ যাত্রীকে। বাস মালিক-শ্রমিক ও যাত্রীদের সূত্রে এসব অভিযোগ ও তাদের ভোগান্তির কথা জানা গেছে। শরীয়তপুর জেলা বাস মালিক সমিতি ও স্থানীয় অন্যরা বলেছেন, কেবল একটি নোটিশ ঝুলিয়ে দিয়েই কর্তৃপক্ষ দায় এড়াতে পারে না। আর কর্তৃপক্ষ বলছে, ‘সামনের শুকনো মৌসুমে’ আগের সেতুর পাশে বেইলি ব্রিজ, করার প্রক্রিয়া চলছে।
শরীয়তপুর সওজ ও বাস মালিকসহ নানা সূত্রে জানা যায়, পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে শরীয়তপুরসমেত দেশের দক্ষিণাঞ্চলের যান চলাচল আরম্ভ হলেও এ সেতুর সুফল ভোগের অন্যতম দাবিদার, শরীয়তপুরের কয়েক লাখ যাত্রীর যাতায়াত দুর্ভোগ হ্রাস পায়নি। কারণ, পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তের সংযোগ থেকে শরীয়তপুর জেলা শহর পর্যন্ত ২৭ কিলোমিটার সড়কের কাজিরহাট বন্দর পর্যন্ত রাস্তা সঙ্কীর্ণ। তার পর, শরীয়তপুর জেলা শহর পর্যন্ত মাত্র ১৮ ফুট চওড়া। তদুপরি, বেশির ভাগ জায়গাতেই এটি ভাঙাচোরা। কোনো বাস রাস্তায় সাইড দিতে গেলে বিপরীত দিকের যানবাহন আটকা পড়ে। ফলে এ সড়কে কীর্তিনাশা নদীর সেতুর দুই মাথা, কাজিরহাট বন্দর বাজার মোড়, জাজিরা টিঅ্যান্ডটি মোড়সহ কয়েক স্থানে নিয়মিত যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। তাই ঘণ্টাকে ঘণ্টা চালক ও যাত্রীদের বসে থাকতে হয়। ফলে শরীয়তপুর থেকে পদ্মা সেতু টোল পর্যন্ত আসতে দুই ঘণ্টাও লেগে যায়। জাজিরা প্রান্তের নাওডোবা থেকে জেলা শহর পর্যন্ত ২৭ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের জন্য ২০২০ সালের মার্চে এক হাজার ৬৮২ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছিল। এর বাস্তবায়নে ভূমি অধিগ্রহণ শুরু করা হয়। এরপর পদ্মা সেতুর অ্যাপ্রোচ থেকে নাওডোবা পর্যন্ত তিন কিলোমিটার অধিগ্রহণ করে স্থানীয় জেলা প্রশাসন সড়ক বিভাগককে বুঝিয়ে দেয়। কিন্তু এ অংশের সড়কে নির্মাণকাজ আজও শুরু করা হয়নি। এ দিকে শরীয়তপুর জেলা প্রশাসন সর্বাধিক গুরুত্বসহকারে সড়কের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ করছে। গত মে মাসের শেষ দিকে জেলা সদর ফায়ার সার্ভিস সেতু থেকে জাজিরা টিঅ্যান্ডটি পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার সড়কের নির্মাণকাজ শুরু হয়। গত ৩০ জুন এর শেষ সময় হলেও এই মেয়াদ শেষ হওয়ার মাসখানেক আগে কাজ শুরু হয়। এখন ধীরে ধীরে কাজ চলছে। দুই মাসে মাত্র দেড় কিলোমিটার ম্যাকাডাম বিছানো হয়েছে রাস্তায়। লোকজন বলছেন, পদ্মা সেতুর সাথে অন্যান্য জেলার সংযোগ সড়কের কাজ শেষ হলেও এখানে তা হয়নি। ফলে শরীয়তপুরবাসী পদ্মা সেতুর সুফল পাচ্ছে না। অপর দিকে, বাস মালিকরা সড়কের পাশে কয়েকটি পকেট তৈরি করে দিতে আবেদন জানান। কর্তৃপক্ষ জমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন না হওয়াকে সড়ক উন্নয়নে বাধা বলে মনে করে। কীর্তিনাশা সেতু যান চলার উপযুক্ত নয় বলেও উল্লেখ করা হয়েছে কর্তৃপক্ষ সূত্রে। জানা যায়, সময়মতো অর্থ না পাওয়ায় সেতু নির্মাণে বিলম্ব ঘটছে। দু’বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে এ কাজে, অর্থাৎ জনভোগান্তি শিগগিরই শেষ হচ্ছে না।
পদ্মা সেতুর সুফল বাস্তবায়নে সরকার আন্তরিক হবে- এ ক্ষেত্রে এ আশা এখনো করা হচ্ছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা