বৃষ্টির অপেক্ষায় আমন চাষিরা
- ২৩ জুলাই ২০২২, ০০:০০
দেশে সবচেয়ে বেশি খাদ্যশস্যের সংস্থান হয় আমন চালে। প্রতি বছর আগস্ট মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত রোপা আমন রোপণের স্বাভাবিক সময়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যমতে, দেশে চাষাবাদযোগ্য জমির পরিমাণ প্রায় ৮৪ লাখ হেক্টর। সেখানে এবার রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫৯ লাখ পাঁচ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে। এ পর্যন্ত তিন লাখ ৮৮ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে রোপণ হয়েছে। অনেক জায়গায় বীজতলা তৈরি শুরু হয়েছে।
জুলাই-আগস্ট হচ্ছে বাংলাদেশে আমন রোপণের মৌসুম। যদিও রোপা আমন চাষে সেচের পানি কম লাগে। বিএডিসির তথ্য, বোরো মৌসুমে কৃষিকাজের জন্য দৈনিক দুই হাজার ৮০০ মেগাওয়াটের মতো বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়। কিন্তু রোপা আমন মৌসুমে অনেকটা কম বিদ্যুতের ব্যবহার হয়। তবু এবার খরা থাকায় বৃষ্টির অভাবে সেচনির্ভরতা বাড়ছে। বিদ্যুৎসঙ্কট দেখা দেয়ায় সরকার এলাকাভিত্তিক এক ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু এক ঘণ্টার কথা বলা হলেও গড়ে দুই ঘণ্টার বেশি লোডশেডিং হচ্ছে সারা দেশে। বিশেষ করে ঢাকার বাইরে কোথাও কোথাও ছয় ঘণ্টা পর্যন্ত লোডশেডিং করতে হচ্ছে।
দেশের বিভিন্ন জেলার তথ্য হলো, বৃষ্টি না থাকায় আমন রোপণ সেভাবে এখনো শুরু হয়নি। নিচু এলাকায় রোপণ হলেও তীব্র খরায় ইতোমধ্যে সেচসঙ্কটে পড়েছেন কৃষক। পানির অভাবে অনেকের বীজতলা নষ্ট হচ্ছে। লোডশেডিংয়ের কারণে চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে।
জুলাই মাস শেষ হতে চললেও এখনো দেশ তীব্র খরার কবলে। গত কয়েক দিনে কিছু এলাকায় সামান্য বৃষ্টি হয়েছে। তাতে জমি ভেজেনি। এদিকে, সেচ দিতে নগদ অর্থেরও প্রয়োজন পড়ে। টাকার অভাবে অনেক কৃষক এখনো বৃষ্টির অপেক্ষায়। যথেষ্ট বৃষ্টি না হলে তাদের সেচনির্ভরতা বাড়বে। আবার বিদ্যুৎসঙ্কটের কারণে অর্থ দিয়েও জমিতে সেচের ব্যবস্থা করা যাবে কি না তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন চাষিরা।
আমন আবাদ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না। কারণ, দেশের উত্তরাঞ্চল খরাপ্রবণ হওয়ায় সেখানকার কৃষকরা সব ধরনের চাষে কমবেশি সেচের ওপর নির্ভরশীল। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর বলছে, রাজশাহী, নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁ এই চার জেলায় এবার রোপা আমনের লক্ষ্যমাত্রা চার লাখ তিন হাজার ৪৬৬ হেক্টর। এখন পর্যন্ত ১০ শতাংশের মতো জমিতে রোপা আমন রোপণ হয়েছে। আর বগুড়া, পাবনা, সিরাজগঞ্জ ও জয়পুরহাটে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তিন লাখ ৮১ হাজার ২৭০ হেক্টর। এর মধ্যে মাত্র সাত হাজার ১০০ হেক্টরে রোপা আমন লাগানো হয়েছে, অর্থাৎ অগ্রগতি মাত্র ১ শতাংশের মতো।
উত্তরাঞ্চলে ছিটেফোঁটা বৃষ্টি হচ্ছে। আরো দিন সাতেক বৃষ্টিহীন থাকলে সেচযন্ত্র ব্যবহারে বাধ্য হবেন এ জনপদের কৃষক। রাজশাহী এবং রংপুর বিভাগের ১৬ জেলা নিয়ে গঠিত বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, বরেন্দ্র এলাকায় ৬০ শতাংশ আমন ধান রোপণ হয়েছে। বৃষ্টি না থাকায় কৃষক সেচযন্ত্র দিয়ে রোপা আমন চাষ করছেন। সংস্থাটির ১৬ হাজার সেচযন্ত্র আছে, সবই বিদ্যুৎচালিত। সেচযন্ত্রের পানি দিয়ে বরেন্দ্র এলাকার কৃষক বীজতলা করেছেন।
সবার জানা, বিদ্যুৎসঙ্কটে আমন আবাদ ব্যাহত হলে দেশের খাদ্যনিরাপত্তা হুমকিতে পড়বে। ইতোমধ্যে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে বিশ্বের খাদ্য পরিস্থিতি নাজুক। এদিকে আমাদের চলছে ডলার সঙ্কট। ফলে চাইলেও প্রয়োজনের সময় খাদ্যশস্য আমদানিতে ব্যাঘাত ঘটতে পারে এমন শঙ্কাও আমলে নিতে হবে। তাই সব দিক মাথায় রেখে বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা করতে হবে। যাতে বিদ্যুতের অভাবে সেচকাজ ব্যাহত না হয়। সাধারণত রাত ১১টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত সেচযন্ত্র চালু থাকে। সুতরাং চলমান লোডশেডিংয়ে কৃষি বা সেচে সেভাবেই বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা