২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
সড়কে লাগাতার প্রাণহানি

শৃঙ্খলা ও ব্যবস্থাপনা নেই

-

দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু বেড়েই চলেছে। ঈদ মৌসুমে এটা যেন সীমা ছাড়িয়ে যায়। গত রোজার ঈদের সময় সড়কে দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করা হয় দূরযাত্রার মোটরসাইকেলকে। কোরবানির ঈদে সে কারণে মহাসড়কে মোটরসাইকেল চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়। ঘরমুখী যাত্রায় এর কিছুটা ফল পাওয়া যায়। তবে ফিরতি যাত্রায় দেখা যাচ্ছে দুর্ঘটনার ছড়াছড়ি। এর সাথে মোটরসাইকেলের কোনো সম্পর্ক নেই। এবারও বিশেষজ্ঞরা আরো কিছু কারণ উল্লেøখ করেছেন। দেখা যাচ্ছে, আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থাপনায় ত্রুটি আছে। যোগাযোগ আধুনিকায়নের জন্য একের পর এক বড় উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে, বৃহৎ অবকাঠামো নির্মাণও হয়েছে। কিন্তু পথচারী, যাত্রী ও চালকদের নিরাপত্তা দিতে পারছি না।
গত শনিবার এক দিনে সড়কে ৩১ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এর মধ্যে একটি ঘটনায় মায়ের পেটের শিশু বেঁচে গিয়ে এবারের সড়ক দুর্ঘটনাকে যেন আলাদা একটি মহিমা দান করল। শিশুটি পৃথিবীতে এসেই আমাদের চলমান ব্যবস্থাপনার প্রতি যেন উপহাস করল। জানান দিলো, অনেক অর্থ ব্যয় করা হলেও নিরাপদ সড়ক প্রতিষ্ঠা করা হয়নি। নবজাতকের বাবা-মা ও বোন ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হলেও সে মায়ের পেট ফেটে ভূমিষ্ঠ হয়েছে।
একই ধরনের ঘটনায় রাস্তা পার হতে গিয়ে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর মহাসড়কে একসাথে মা, মেয়ে ও ছেলে বাসচাপায় মারা গেছে। বগুড়ার কাহালুতে এদিন ট্রাক ও কারের সংঘর্ষে বাবা-ছেলেসহ চারজন প্রাণ হারিয়েছে।
শনিবারের দুর্ঘটনার ধরনটি বিশ্লেষণ করেছে সড়ক দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউট (এআরআই)। এদিন দুর্ঘটনার ৪৫ দশমিক ৫ শতাংশ ঘটেছে মুখোমুখি সংঘর্ষে। পেছন থেকে ধাক্কার কারণে ঘটেছে ৩৬ দশমিক ৪ শতাংশ। যানবাহন নিয়ন্ত্রণ হারানোর কারণে ঘটেছে ১৮ দশমিক ২ শতাংশ। খবরে প্রকাশ, ঈদের আগের সাত দিনে সড়কে মোট ১০৯ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। গত ঈদের তুলনায় প্রাণহানি কমেছিল। এর কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, মোটরসাইকেল না থাকার পাশাপাশি রাস্তায় যানজট। অন্য দিকে, ঈদের পরে এক দিনে প্রাণহানির উচ্চহারের কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে- যানবাহনের মাত্রাতিরিক্ত গতি। শনিবারের দুর্ঘটনা নিয়ে এআরআই বিশ্লেষণও তাই বলছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, ঈদে বাড়ি থেকে ফেরার এ ক’দিনে দুর্ঘটনার এ উচ্চহার অব্যাহত থাকবে।
ঈদের সময় ঢাকা শহর থেকে এক কোটি মানুষ গ্রামে ফিরে যায়। একইভাবে সারা দেশে এই সময় কয়েক কোটি মানুষ কর্মস্থল থেকে বাড়ি ফেরে। বিশেষ মৌসুমে বিপুল বেড়ে যাওয়া যাত্রী, বহনের জন্য উপযুক্ত সংখ্যক যানবাহন দেশে নেই। এই সুযোগে লক্কড়ঝক্কড় ও ফিটনেসবিহীন বিভিন্ন যান দূরপাল্লøার রাস্তায় নামে। দুর্ঘটনা বৃদ্ধির এটি অন্যতম কারণ।
বিশেষ মৌসুমে বেশি দুর্ঘটনা সড়ক অব্যবস্থাপনার বিষয়টি সবার সামনে আনে। যদিও আমাদের দেশে সড়কে প্রতিদিন মানুষের প্রাণহানি ঘটছে। সড়কের পাশে লেখা থাকে কত কিলোমিটার বেগে গাড়ি চালানো যাবে। বাস্তবে চালকরা এর চেয়ে দ্বিগুণ তিনগুণ বেগে গাড়ি চালান। আরো বেশ কিছু দিকনির্দেশনাও আমরা রাস্তায় দেখি। এ ছাড়া থাকে কিছু নীতিকথাও। বাস্তবে সেগুলো খুব সামান্য মানা হয় বা ক্ষেত্রবিশেষে মানা হয় না। কর্তৃপক্ষ শুধু কিছু নিয়মকানুন সাইনবোর্ডে লিখে দিয়ে যেন তাদের দায়িত্ব সারছে। এগুলো অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না। চালকের মধ্যে শাস্তির ভয় থাকলে এ দুর্ঘটনাগুলো হওয়ার কথা নয়। আরেকটি বিষয় লক্ষ করা যাচ্ছে, দ্রুতগতির রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে; কিন্তু বহু জায়গায় স্থানীয় মানুষের রাস্তা পারাপারের ব্যবস্থা রাখা হয়নি।
আমাদের সড়ক ব্যবস্থাপনা এখনো অত্যন্ত দুর্বল। কার্যকর ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠার লক্ষণও দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু সুষ্ঠু সড়ক ব্যবস্থাপনা ছাড়া দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণের কোনো বিকল্প নেই।

 


আরো সংবাদ



premium cement
টেকনাফে ২ লাখ ৪৮ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার ইসকন নিষিদ্ধ চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে আইনজীবী আলিফের জানাজায় হাসনাত-সারজিস জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা : খালেদা জিয়াসহ সব আসামিকে খালাস সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাৎ করবেন মির্জা ফখরুল ইসরাইল-হিজবুল্লাহ যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে যা জানা যাচ্ছে আবারো রিমান্ডে সাবেক মন্ত্রী আনিসুল-কামরুল শিল্পপতির বাড়িতে ডাকাতি : ৭ লাখ টাকা, ৪০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার লুট ফিটনেসবিহীন যানবাহনের কারণে চ্যালেঞ্জের মুখে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ২৪ ঘণ্টায়ও মহাসড়ক ছাড়েনি ডিইপিজেডের লেনী ফ্যাশনের শ্রমিকরা

সকল