সেবা প্রক্রিয়ায় প্রতিবন্ধকতা দূর করুন
- ১৭ জুলাই ২০২২, ০১:৪৮
বিশ্বের যেকোনো দেশের এখন একটি-আরেকটি থেকে বিচ্ছিন্ন থাকার উপায় নেই। প্রয়োজনের তাগিদে পরস্পরের সাথে নিবিড় সম্পর্ক রাখতে হয়। ফলে বিভিন্ন দেশের বিপুলসংখ্যক নাগরিকের আন্তঃদেশীয় কর্মকাণ্ড প্রাত্যহিক জীবনের অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে। এক দেশের নাগরিকের সাথে আরেক দেশের মানুষের পারস্পরিক যোগাযোগ ঘনিষ্ঠতর হয়েছে। বর্তমান সময়ের প্রবণতা হলোÑ আগের মতো এখন স্বদেশে বিচ্ছিন্ন জীবনযাপন অনেকের পক্ষেই সম্ভব নয়। নানা প্রয়োজনে বহুজনকে বিদেশে সফরে যেতে হয়। এ ক্ষেত্রে বিশেষ করে চিকিৎসাসেবা, শিক্ষা এবং কাজের সন্ধান অন্যতম। বিশ্বায়নের এই যুগে সারা বিশ্ব একটি গ্রামে রূপান্তরিত হয়েছে। যুগের এ প্রবণতার সাথে আমরাও আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা।
স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে বিগত কয়েক যুগে প্রায় সোয়া কোটি বাংলাদেশী বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে অভিবাসী হয়ে প্রবাসী জীবন কাটাচ্ছেন। কেউ স্থায়ীভাবে; অনেকে দেশে ভালো কর্মসংস্থানের সুযোগ না পেয়ে অস্থায়ীভাবে জীবিকার তাগিদে বিদেশে শ্রম বিক্রি করছেন। আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস এখন প্রবাসী আয়।
বিদেশে অভিবাসী হতে কিংবা সফরে যেতে চাইলে আন্তঃদেশীয় যোগাযোগের ক্ষেত্রে পাসপোর্ট-ভিসা অত্যাবশ্যক। বৈধভাবে বিদেশ সফরে যেতে হলে এই প্রক্রিয়ার বিকল্প নেই। যথাযথভাবে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়। কিন্তু বাংলাদেশে পাসপোর্ট করাতে এখনো অনেক ঝক্কি-ঝামেলা পোহাতে হয়। সেবাগ্রহীতাকে আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় নানাবিধ হয়রানির শিকার হতে হয়। এটা সত্য যে, বর্তমানে পাসপোর্ট করাতে আগের চেয়ে ঝামেলা কমলেও অনেককেই দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে, এটিই বাস্তবতা। এর কারণ বহুবিধ। তবে ঢাকার আগারগাঁওয়ে অবস্থিত পাসপোর্ট অফিসে লোকবল সঙ্কটে ব্যাহত হচ্ছে দ্রুত পাসপোর্ট সেবাদান কার্যক্রম।
ঢাকা পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসের বরাতে একটি সহযোগী দৈনিকের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ঢাকার আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসে দৈনিক দুুই হাজার ৫৬০টি আবেদন ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা আছে; কিন্তু আবেদন জমা পড়ে তিন হাজারের বেশি। এ ছাড়া প্রতিদিন জমা পড়া আবেদনের ৮০০ থেকে এক হাজারটিতে কোনো না কোনো ত্রুটি থাকে। পাসপোর্টের জন্য প্রতিদিন যত আবেদন জমা পড়ে, তাদের দ্রুত সেবা দেয়ার মতো পর্যাপ্ত লোকবল নেই। এমনকি বিপুলসংখ্যক সেবাগ্রহীতার পর্যাপ্ত জায়গাও নেই অফিসে। ফলে সব সময় সেখানে ভিড় লেগে থাকে।
ভিড় লেগে থাকার কারণ হিসেবে জানা যায়, দেশে ৬৯টি পাসপোর্ট অফিস থাকলেও সারা দেশ থেকে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মানুষ এখনো পাসপোর্ট নিতে আসেন ঢাকার আগারগাঁও অফিসে। সেবাগ্রহীতা বেশি থাকায় চাপও অনেক বেশি থাকে। তাই পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তাদের মতো আমরাও মনে করি, সবাই যদি নিজ নিজ জেলা বা এলাকার পাসপোর্ট অফিসে এ সেবা নিতে যান, তাহলে এই চাপ বা ভিড় কমে আসবে। চাপ কমলে সেবার মানও বাড়বে, এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায়।
রাজধানীর আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসে ভিড় কমাতে এবং দ্রুততম সময়ে সেবা নিশ্চিত করতে ঢাকার দুই সিটির ভোটার এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পাসপোর্ট প্রক্রিয়ার কাজ সম্পন্ন করা যেতে পারে। এতে রাজধানীর বাইরের অধিবাসীরা দ্রুত পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে নিজ নিজ জেলা বা এলাকার অফিসে এই কাজ সম্পন্ন করতে আগ্রহী হবেন। আর রাজধানীর যে জনসংখ্যার আধিক্য তাতে দীর্ঘমেয়াদে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের বাসিন্দাদের জন্য দু’টি পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস প্রতিষ্ঠা করা সময়ের চাহিদা বলে মনে করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। আমরা বলতে চাই, নাগরিক এই সমস্যা ও ভোগান্তি দূর করতে সরকারকে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদে পরিকল্পনা নিয়ে এগোতে হবে। কেবল তখনই পাসপোর্ট সেবা নিতে যাওয়া লোকজনের দুর্ভোগ লাঘব হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা