সতর্কতা জোরদার করা দরকার
- ০৪ জুলাই ২০২২, ০২:৪৮
ঈদের মৌসুম চোর-ডাকাতের জন্য পৌস মাস। দুই ঈদে সারা দেশে সবচেয়ে বেশি মানুষ স্থানান্তরে যায়। জনসংখ্যার একটি বড় অংশ শহর থেকে গ্রামে ফেরে, আবার গ্রাম থেকে শহরে। এ সময় সড়ক ও নৌপথে যানবাহনে ডাকাতদল হানা দেয়। আবার শহরগুলো ফাঁকা হয়ে গেলে চোরের জন্য হয় পোয়াবারো। গ্রামে যাওয়া মানুষ ঈদের পরে বাসাবাড়িতে ফিরে দেখে কখন চুরি হয়ে গেছে। প্রতি বছর বহু মানুষের চুরি-ডাকাতির শিকার হওয়ার বিষয় সাধারণভাবে গোচরে এলেও এই অপরাধের প্রকৃত পরিসংখ্যান পাওয়া যায় না। এখন সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এমনিতেই খারাপ। আসন্ন ঈদে চোর ডাকাতের উপদ্রব নিয়ন্ত্রণসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য আগাম সতর্কতা দরকার।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কিছু এলাকায় নিয়মিত যানবাহনে ডাকাতি হয়। এর মধ্যে সোনারগাঁও, দাউদকান্দি, চান্দিনা পর্যন্ত অংশটি বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। যাত্রীবাহী কোচ ও মাইক্রো বাসে সঙ্ঘবদ্ধ ডাকাত দল হামলা চালিয়ে সর্বস্ব লুটে নেয়। স্বর্ণালঙ্কার, টাকা ও মূল্যবান পণ্য হাতিয়ে তারা নিরাপদে সটকে পড়ে। পণ্যবাহী গাড়ি, সিএনজি অটোরিকশাও ছিনতাইয়ের শিকার হচ্ছে। গত ছয় মাসে সোনারগাঁও থানায় সাতটি ডাকাতি ও তিনটি ছিনতাইয়ের মামলা হয়েছে। যদিও আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর ওপর মানুষের আস্থা কমে গেছে। দুর্ঘটনা বা অপরাধের শিকার হলে মানুষ থানা পুলিশের কাছে যেতে চায় না। তারা মনে করে, বাড়তি বিপদ আসতে পারে। সম্প্রতি মহাসড়কের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ওই এলাকায় অনেক ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের খবর প্রকাশিত হয়েছে। গত ২৮ জুন ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে একটি বাসে ডাকাতি হয়। ডাকাতরা যাত্রী সেজে বাসে ওঠে। একপর্যায়ে চালক-হেলপারসহ যাত্রীদের জিম্মি করে ফেলে। মোবাইল ফোনসহ যাত্রীদের এক লাখ ৩২ হাজার টাকা লুটে নেয়। ঢাকা থেকে উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলে যাওয়ার প্রত্যেকটি রুটে ডাকাতির খবর জানা যায়। গত দুই সপ্তাহে কিশোরগঞ্জের হাওর ও নদীতে ১০টি নৌযানে ডাকাতি এবং ডাকাতির চেষ্টা হয়েছে। যাত্রীদের কাছ থেকে মূল্যবান পণ্যের পাশাপাশি গবাদিপশু ছিনিয়ে নিয়েছে। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ডাকাতির খবর আসছে।
সড়ক ও নৌপথে যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য সারা দেশে হাইওয়ে পুলিশ, নৌ-ফাঁড়ি রয়েছে। কিন্তু অপরাধ দমন ও অপরাধীদের যথাযথ শাস্তির আওতায় আনার ক্ষেত্রে তারা যথেষ্ট সফলতা দেখাতে পারছে না। ঈদের দিনগুলোতে ডাকাতির আশঙ্কা আরো বেশি। থাকবে অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টির দৌরাত্ম্য।
ঈদে সারা দেশের শহরগুলো অনেকটা জনশূন্য হয়ে পড়ে। বিশেষ করে বিশাল ঢাকা শহর। এ সময় বাসার দরজা-জানালা ভেঙে ঘরে ঢুকে মূল্যবান অলঙ্কার ও আসবাবপত্র নিয়ে যায় চোরেরা। গত রমজানের ঈদে ঢাকা মহানগর পুলিশের প্রধান নগরবাসীকে পরামর্শ দিয়েছেন, তারা যেন তাদের মূল্যবান জিনিসপত্র আত্মীয়-স্বজনদের বাসায় রেখে যান। যদি আত্মীয়-স্বজন না থাকে তাহলে নিকটস্থ থানায় রেখে যেতে পারেন। পুলিশের দায়িত্বশীল ব্যক্তির পক্ষ থেকে এমন বক্তব্য তাদের দায়িত্ব পালনে অপারগতারই প্রকাশ। কারণ খুব কম লোকই তাদের মূল্যবান জিনিস আত্মীয়দের কাছে রেখে যাওয়ার ভরসা পাবেন। আর থানা বা পুলিশ ফাঁড়িতে মূল্যবান দ্রব্য রেখে যাওয়ার মতো ভরসা করার মতো কাউকে পাওয়া যাবে কি না সন্দেহ।
ঈদে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে পারে কিশোর গ্যাং। সম্প্রতি এক শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা করেছে এক বখাটে কিশোর। বখাটে কিশোরদের উৎপাতে এরইমধ্যে মানুষ অতিষ্ঠ।
আমরা আশা করব, আসন্ন ঈদের ছুটিতে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী সতর্ক থাকবে। তারা চুরি ডাকাতিসহ যেকোনো ধরনের অপরাধ দমন ও মানুষের জানমালের হেফাজতে কার্যকর ব্যবস্থা নেবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা