কোনো সুখবর নেই
- ৩০ জুন ২০২২, ০০:০০
নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়া নিয়ে কথা না বাড়ানোই মনে হয় ভালো। কারণ, সে কথা শোনার কেউ কোথাও নেই। দ্রব্যমূল্য উপর্যুপরি বেড়েই চলেছে, তার ধকল পোহাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। তারা সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। টানাপড়েন সইতে না পেরে পরিবার পরিজনকে পাঠিয়ে দিচ্ছেন গ্রামের বাড়িতে। নিজে কষ্ট করে সস্তার মেসবাড়িতে থেকে যৎসামান্য অর্থ সাশ্রয়ের চেষ্টা করছেন। ব্যয় কমিয়ে টিকে থাকার চেষ্টা করছেন।
রাজধানীতে বসবাসকারী মানুষের ব্যয় কমানোর মতো খাতও কম। বাড়িভাড়া, শিক্ষা, যাতায়াত, বস্ত্র, চিকিৎসায় ব্যয় কমানোর উপায় নেই। ফলে চাপটা গিয়ে পড়ছে খাবারের ওপর। খাবারের পরিমাণ কমাচ্ছেন তারা। আগে মাসে ২০ কেজি চাল কিনলে, এখন ১৫ কেজিতে চালানোর চেষ্টা করছেন। অফিসে থাকার সময় হয়তো কিছুই না খেয়ে অথবা এককাপ চা, একটি পুরি খেয়ে দুপুর পার করে দিচ্ছেন। এদের কপালে কিন্তু বিকেলের নাশতা বলেও কিছু জোটে না। ফলে বাস্তবে সকালের নাশতা ও রাতের খাবার- এই খেয়ে দিন গুজরান করছেন তারা।
জিনিসের দাম বাড়াটা নতুন নয়। সব সময়ই এটি হয়ে এসেছে। কিন্তু গত এক দশকের বেশি সময় ধরে এতে নতুন যে উপাদান যুক্ত হয়েছে তা হলো- কোনো কারণ ছাড়া, এমনকি কোনো পণ্যের ভরা মৌসুমেও দাম বেড়ে যাচ্ছে। সরবরাহ কম ও চাহিদা বেশি হলে দাম বাড়বে- অর্থনীতির এই প্রাথমিক সূত্রটিকে বুড়ো আঙুল দেখাচ্ছে আমাদের বাজার। এ কারণেই দাম বেড়ে যাওয়ার পেছনে অদৃশ্য কালো হাতের অস্তিত্বের প্রশ্ন সামনে আসে। এ প্রশ্ন যে অমূলক নয় তা এরই মধ্যে প্রমাণিত।
নিত্যপণ্যের দামের উল্লম্ফন থামাতে শুল্কছাড়, বাজার তদারকি, আমদানির মতো বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। কিন্তু সব উদ্যোগই অকার্যকর হয়েছে বললে অত্যুক্তি হবে না।
ভরা মৌসুমে চালের দাম বেড়েছে অস্বাভাবিক। গত মাসখানেকের বেশি সময় ধরে চালের বাজারে চলছে খাদ্য মন্ত্রণালয় ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার অধিদফতরের যৌথ অভিযান। তাতে সুফল পাওয়া যায়নি। বরং দিন দিনই বাড়ছে। এর মধ্যে আমদানি শুল্ক কমিয়ে বেসরকারি পর্যায়ে চাল আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর পরও গত এক মাসের ব্যবধানে সব ধরনের চালের দাম কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এ মুহূর্তে বাজারে প্রতি কেজি মিনিকেট চাল ৬৮ থেকে ৭২ টাকা, বিআর-২৮ জাতীয় চাল ৫৫ থেকে ৫৮, নাজিরশাইল ৭০ থেকে ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। নিম্ন আয়ের মানুষ সাধারণত মোটা চাল খান। মোটা চালের মধ্যে স্বর্ণা জাতীয় চাল ৫০ থেকে ৫৫ এবং পাইজাম ৫৬ থেকে ৫৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বলা হচ্ছে, বন্যা, বিশ্ববাজারে দাম বেড়ে যাওয়া ও ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশের বাজারে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। এসব যে খোঁড়া যুক্তি তা সবাই জানেন। কারণ ভোজ্যতেলের দাম বিশ্ববাজারে ২৭ শতাংশ কমলেও দেশের বাজারে কমেনি।
সবজির দামেও একই প্রবণতা অব্যাহত আছে। গত ৮-১০ দিনে আলুর দাম কেজিপ্রতি বেড়েছে ১০-১৫ টাকা। বাজারে আলু বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়, যা এতদিন ছিল ২০ টাকা। আলুর দাম বাড়ার কোনো কারণ বলতে পারছেন না খোদ খুচরা ব্যবসায়ীরাও। একই অবস্থা পেঁয়াজের। ফলন ভালো হওয়ায় ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রেখেছে সরকার, যাতে কৃষক ভালো দাম পেতে পারেন। সেই পেঁয়াজের দামও বেড়ে ৩০-৩২ টাকা থেকে ৪৫-৫৫ টাকায় উঠেছে। নতুন বাজেটের কর ও ভ্যাট সম্পর্কিত প্রস্তাবগুলো পাস হলে আগামী দিনগুলোতে বাজার পরিস্থিতি আরো অস্থির হতে পারে বলে অনুমান করছেন কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ। ফলে মধ্য ও নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সত্যিই কোনো সুখবর নেই।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা