স্বকর্মসংস্থানে নেতিবাচক প্রভাব
- ২৮ জুন ২০২২, ০০:০০
অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র, কুটিরশিল্প ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের মধ্যে ব্যাংক ঋণ বিতরণে ভাটা পড়েছে। লক্ষণীয়, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বড় বড় উদ্যোক্তাদের মধ্যে ঋণ বিতরণে যতটা উৎসাহী, ছোট উদ্যোক্তাদের ঋণ দিতে ততটাই অনাগ্রহী। এতে করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নানাবিধ তাগিদ ও নির্দেশনা সত্ত্বেও ছোট ছোট উদ্যোক্তার মধ্যে ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ অর্জিত হয় না। গত বছর ব্যাংকগুলোতে নানা তাগিদ ও চাপ প্রয়োগ করার পরও ছোট উদ্যোক্তাদের মধ্যে ঋণ বিতরণ লক্ষ্যমাত্রার ২৩ শতাংশ কম হয়েছে। আর গত বছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরে অবস্থার আরো অবনতি হয়েছে। এবার এখনো ক্ষুদ্রঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রার ৪০ শতাংশ বাকি রয়েছে। অথচ চলতি অর্থবছরের বাকি রয়েছে মাত্র দিন কয়েক। নয়া দিগন্তে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এ কথা জানা যায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান মতে, চলতি অর্থবছরের ২৩ জুন পর্যন্ত আলোচ্য উদ্যোক্তাদের মধ্যে ঋণ বিতরণ করা হয়েছে ১২ হাজার কোটি টাকা। যেখানে পুরো অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ আলোচ্য সময়ে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এখনো আট হাজার কোটি টাকা কম রয়েছে, যা বাকি চার দিনের মধ্যে বিতরণ করা সম্ভব নয়। বিতরণ করা এই ঋণ লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৬০ শতাংশ। অর্থাৎ এবারো ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের মধ্যে ঋণ বিতরণের নেয়া লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হচ্ছে না, এ কথা নিশ্চিত করে বলা যায়।
ছোট উদ্যোক্তার মধ্যে ঋণ বিতরণে অনীহার কারণ অনুসন্ধানে জানা যায়, একজন বড় উদ্যোক্তাকে যে পরিমাণ ঋণ দেয়া হয় সমপরিমাণ ঋণ দেয়া হয় এক থেকে দেড় শ’জন ছোট উদ্যোক্তাকে। এ কারণে ছোট উদ্যোক্তাদের ঋণ দিয়ে ফেরত আনতে পরিচালন ব্যয় বেড়ে যায়। এ ছাড়া গত বছর এই খাতে প্রায় সাড়ে ১৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করা হয়। ঋণ নিয়ে ফেরত দেয়ার সক্ষমতা আছে এমন ছোট উদ্যোক্তা গত বছরের মতো পাওয়া যাচ্ছে না। অর্থাৎ ভালো ছোট উদ্যোক্তার অভাব রয়েছে বলে ব্যাংকগুলো মনে করছে। এ কারণে কাক্সিক্ষত হারে ঋণ বিতরণ করা যাচ্ছে না বলে ব্যাংকাররা দাবি করছেন।
সমকালীন অর্থনীতির বৈশিষ্ট্যই হলো- কোনো দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি টেকসই ও গতিশীল রাখতে হলে বৃহৎ শিল্পের পাশাপাশি ক্ষুদ্র উদ্যোগ মানে কুটিরশিল্পের উৎকর্ষ সাধন। এটি করতে না পারলে এখনকার অর্থনীতি কোনোভাবেই শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়াতে পারবে না। এই দৃষ্টিকোণ থেকে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য ভারী শিল্পের পাশাপাশি কুটিরশিল্পকেও গুরুত্ব দিতে হবে। কিন্তু আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের সুবিধার্থে ছোট উদ্যোক্তাদের ঋণ না দিয়ে বড় উদ্যোক্তাদের ঋণ দিতেই বেশি আগ্রহী হওয়ায় কাক্সিক্ষত অর্থনৈতিক অগ্রগতি ব্যাহত হচ্ছে। ব্যাংকগুলোর এ প্রবণতা সবল অর্থনীতি গড়ে তোলার অন্তরায় বলে মনে করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। কোনোভাবেই এটি সমর্থন করা যায় না। কারণ ব্যাংক ঋণের মাধ্যমে ছোট উদ্যোক্তাদের পৃষ্ঠপোষকতা না দিলে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা দুরূহ বৈকি। অথচ সবার জানা, স্বকর্মসংস্থানের জন্য ক্ষুদ্রঋণ বিতরণের মাধ্যমে দেশীয় ক্ষুদ্রশিল্পের পৃষ্ঠপোষকতা দেয়া। এ জন্য ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা প্রতি অর্থবছরে পূরণ হওয়া বাঞ্ছনীয়। এটি শতভাগ বাস্তবায়ন করতে হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংককে আরো মনোযোগী হতে হবে। যাতে ব্যাংকগুলো ক্ষুদ্রঋণ বিতরণে আন্তরিক হয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা