২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
মসলার উৎপাদনে পৃষ্ঠপোষকতা কম

আমদানি নয় উৎপাদন বাড়াতে হবে

-

দেশে খাদ্যশস্যের উৎপাদন সন্তোষজনক। তবে সবার জন্য পুষ্টিমানসম্পন্ন খাবার এখনো নিশ্চিত করা যায়নি। তেমনিভাবে দেশে মসলার উৎপাদনেও ঘাটতি রয়েছে। বর্তমানে দেশে বছরে মসলার চাহিদা ৩১ দশমিক ৫৪ টন। অভ্যন্তরীণ ঘাটতি মেটাতে আরো ছয় লাখ ৬৬ হাজার টন মসলা প্রয়োজন। যদিও বিশ^বাজারে মসলা উচ্চমূল্যের পণ্য। অনেক সময় দেখা যায়, অভ্যন্তরীণ উৎপাদন চাহিদার চেয়ে কম হওয়ায় সরবরাহ ঘাটতিতে কিছু মসলার দাম আকাশছোঁয়া হয়ে যাচ্ছে। পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতাই এর বড় প্রমাণ। যথাসময়ে আমদানি করতে না পাড়ায় এ সঙ্কট মোকাবেলা করতে হচ্ছে আমাদের। নয়া দিন্তের এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়- দেশে মসলা চাষ হয় পাঁচ লাখ ৫১ হাজার ৩৪৯ হেক্টর জমিতে। উৎপাদিত মসলার মধ্যে কাঁচামরিচ ৬ ছয় লাখ ৫৮০ টন, শুকনা মরিচ দুই লাখ ২৬ হাজার ৩১১, পেঁয়াজ ১৯ লাখ ৫৮ হাজার ৫৪৪, রসুন পাঁচ লাখ ২৭ হাজার ৮৩৩, আদা দুুই লাখ ২৩ হাজার ২৪৩, হলুদ তিন লাখ ১৫ হাজার ৪২২, দারুচিনি সাড়ে ৯, তেজপাতা দুই হাজার ১৫৩, কালোজিরা ১২ হাজার ৯১৯, ধনিয়া ৭০ হাজার ৪৬৫, গোলমরিচ ছয় টন ও অন্যান্য মসলা পাঁচ হাজার ৪৭ টন।
দেশে ৫০ ধরনের মসলার ব্যবহার রয়েছে। আর সব ধরনের মসলার মোট বাজার ৩০ হাজার কোটি টাকার। উৎপাদনে ঘাটতি থাকায় প্রতি বছর ৪০-৪২ শতাংশ মসলার চাহিদা পূরণ করা হয় আমদানির মাধ্যমে। এসব মসলার বেশির ভাগই অবৈধ পথে বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা হচ্ছে। অথচ আধুনিক পন্থায় চাষাবাদ করলে অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বাড়িয়ে এ চাহিদা অনায়াসে মেটানো সম্ভব। আমদানিনির্ভরতা কমাতে স্থানীয়ভাবে মসলার উৎপাদন বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা।
কৃষি বিজ্ঞানীদের মতে, বিশে^ ১০৯ প্রকার মসলা জন্মে, যার মধ্যে সাতটি গুরুত্বপূর্ণ প্রধান মসলাই বাংলাদেশে উৎপন্ন হয়। এ ক্ষেত্রে আমদানির ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর সুযোগ থাকলেও যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে সে সুযোগ কাজে লাগানো যাচ্ছে না। মসলা গবেষণা কেন্দ্র বলছে, দেশে এখন পর্যন্ত ২২টি মসলাজাতীয় ফসলের ওপর ৪৭টি জাত উদ্ভাবিত হয়েছে। তাছাড়া উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে উৎপাদন প্রযুক্তি, মৃত্তিকা ও পানি ব্যবস্থাপনা, পোকামাকড় ও রোগবালাই ব্যবস্থাপনা, ফসল তোলার পরে তার সংরক্ষণসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিসহ ৬৬টি উন্নত প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা হয়েছে। আর কৃষি গবেষণার তথ্য হলো, বাংলাদেশের ব্যবহৃত ৫০ প্রকার মসলার মধ্যে মাত্র ১৭ প্রকার মসলা স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হয়।
দেশে প্রধান কিছু মসলা মরিচ, পেঁয়াজ, রসুন, আদা ও হলুদের পাশাপাশি কিছু অপ্রধান মসলা যেমন-ধনিয়া, মেথি, কালজিরা, মৌরি, গোলমরিচ, শলফা ও জোয়ানের চাষাবাদ হয়ে থাকে। জিরা, এলাচ, দারুচিনি, লবঙ্গ, জয়ফল, পেস্তা বাদাম ইত্যাদিসহ অবশিষ্ট ১০ প্রকার মসলা বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়।
দেশের মাটি ও আবহাওয়া মসলা উৎপাদনে বেশ উপযোগী। আশার কথা, মসলার উন্নত জাত ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণে কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে ১১৯ কোটি ৫০ লাখ টাকার একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগে।
কৃষিবিদদের মতো আমরাও মনে করি, অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বাড়িয়ে মসলার চাহিদা মেটানোর পদক্ষেপ নিতে হবে। এটি তখনই সম্ভব, যখন মসলা চাষে উন্নত জাত এবং প্রযুক্তি ব্যবহারে সাধারণীকরণ করা যাবে। তখন অল্প জমিতে অধিক মসলা ফলানো যেতে পারে।


আরো সংবাদ



premium cement
স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে আইনজীবী আলিফের জানাজায় হাসনাত-সারজিস জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা : খালেদা জিয়াসহ সব আসামিকে খালাস সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাৎ করবেন মির্জা ফখরুল ইসরাইল-হিজবুল্লাহ যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে যা জানা যাচ্ছে আবারো রিমান্ডে সাবেক মন্ত্রী আনিসুল-কামরুল শিল্পপতির বাড়িতে ডাকাতি : ৭ লাখ টাকা, ৪০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার লুট ফিটনেসবিহীন যানবাহনের কারণে চ্যালেঞ্জের মুখে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ২৪ ঘণ্টায়ও মহাসড়ক ছাড়েনি ডিইপিজেডের লেনী ফ্যাশনের শ্রমিকরা বুধবার সকালে ঢাকার বাতাসের মান ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ চীন সীমান্তের কাছে গুরুত্বপূর্ণ শহরের দখল নিল মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা

সকল