২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
যশোরে ৯ কোটি টাকার সরকারি সম্পত্তি বেহাত

এতদিন কর্তৃপক্ষ কোথায় ছিল?

-

নয়া দিগন্তের একটি সচিত্র রিপোর্টে জানানো হয় যে, যশোর শহরতলির পুলের হাটে ৯ কোটি টাকার বেশি মূল্যের সরকারি সম্পত্তি বহু দিন যাবৎ বেদখলে। যশোর-বেনাপোল সড়কের এ অত্যন্ত মূল্যবান সম্পদ উদ্ধারের জন্য প্রশাসনের কোনো জোরালো কার্যক্রম না থাকার অভিযোগ পাওয়া যায়। জানা গেছে, এই সুযোগে স্থানীয় এক চক্র সেখানে মার্কেট বানিয়ে ভোগদখল করছে। এ জন্য ওরা কোটি টাকা নিয়েছে জামানত হিসেবে। তদুপরি, প্রত্যেক মাসে আদায় করে নিচ্ছে লাখ টাকার দোকানভাড়া। অন্য দিকে সরকারি উদ্যোগে মার্কেট প্রতিষ্ঠার দাবি জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। এ দিকে জেলা প্রশাসন উচ্ছেদ করার জন্য নোটিশ ইস্যু করলেও উচ্চ আদালতে এ বিষয়ে মামলা থাকার অজুহাত দেখিয়ে দখলবাজরা বারবার পার পেয়ে যাচ্ছে; কিন্তু মামলাটি বাতিল হয়ে গেছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা যায়, যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের এই সম্পত্তির এক শতকের দামই ১৫ লাখ টাকা। সেই হিসাবে ৬২ শতক জমির মূল্য অন্তত ৯ কোটি ৩০ লাখ টাকা। আরো সরকারি সম্পত্তি বেদখল হয়ে আছে যশোরে। পুলের হাটের সম্পত্তি উদ্ধারের জন্য ২০০২ সালে আরবপুর ইউপির পক্ষে সর্বপ্রথম উদ্যোগ গৃহীত হয়েছিল। সে বছর ৫ মে এর চেয়ারম্যানের পক্ষে উপসহকারী সেটেলমেন্ট অফিসারের কাছে আপত্তি জানালে তিনি লিখিত জবাব দেন। তিনি জানান, কোতোয়ালি থানার কৃষ্ণবাটি মৌজায় ১ নং খাস খতিয়ানের অন্তর্ভুক্ত ৬০৩ দাগের ৬২ শতক জমির রেকর্ড সরকারের পক্ষে বহাল থাকা দরকার। সে জমির অর্ধেকটা তখনকার রানী জ্যোতিরূপা দেবী ও বাকিটা রানী কনক প্রভার নামে ছিল। ভারত বিভাজনের পর ভূমি প্রজাস্বত্ব আইন মোতাবেক, তা সরকারের পক্ষেই থাকে। পরে এসএ রেকর্ডের সময় হাট শ্রেণীতে, পুলেরহাট প্রাদেশিক সরকারের পক্ষে যশোর কালেক্টরের নামে রেকর্ড করা হয়েছে। উল্লেখ্য, অতীত থেকে এখানে সপ্তাহে তিন দিন হাট বসে এবং মালামাল বিক্রি হলে টোল দিতে হয়। হাটটি খাস খতিয়ানের হাট হিসেবে এসএ রেকর্ড হওয়ায় এক মহিলা তৃতীয় মুনসেফ আদালতে মামলায় ডিক্রি পান। সরকার এর বিপক্ষে সাবজজ আদালতে আপিল করে। ১৯৬৪ সালে মুনসেফ আদালত আপিলটি খারিজ করে দেন। ফলে সরকার হাটকোর্টে দায়ের করে রিভিশন মামলা। ১৯৭৮ সালে সেটাও খারিজ হয়ে যায়। সাত বছর পর ভূমি মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত নোটিশে বলা হয়, ‘হাটবাজার ব্যক্তি মালিকানায় ব্যবহার করা যেতে পারে না। কোনো জমিতে হাটবাজার, নিত্যবাজার যা থেকে টোল আদায় করা হয়, তার বেলায় উচ্চ আদালতের কোনো আদেশ থাকলেও তা সরকারের অনুকূলেই থাকবে।’ তাই পুলের হাট ’৯১ সালে ডিসির অনুকূলে থাকে। এরপর সদর ইউএনও হাটটিকে ইজারা দিতে শিডিউল বিক্রি করেন। তখন জেহের আলী গং সহকারী জজ আদালতে আপিল করেন। জেলা জজ সরকারের অনুকূলে তা খারিজ করে দেন। সর্বশেষ, হাইকোর্টে এর রিভিশন মামলাও খারিজ হয়ে যায়। এ অবস্থায়, গত ১২ এপ্রিল সহকারী কমিশনার (ভূমি) মৃত জেহেরের সন্তান আব্দুস সাত্তার মোল্লা ও কাদের মোল্লার ছেলে বাবুকে অবৈধভাবে দখল করা সরকারি সম্পত্তি হতে উচ্ছেদের জন্য নোটিশ জারি করেছেন। এতে ২১ এপ্রিলের মধ্যে স্থাপনা সরিয়ে নিতে বলা হয়। কিন্তু সরেজমিন দেখা যায়, দুই মাস পরেও কোনো উচ্ছেদ কার্যক্রম চালানো হয়নি। বরং সেখানকার তিন ভাড়াটে জানিয়েছেন, একজন মাসে মাসে পাঁচ হাজার টাকা ভাড়া দেন এবং তার জামানতের পরিমাণ আড়াই লাখ টাকা। আরেকজন দুই লাখ টাকা জামানত দিয়েছেন এবং তার মাসিক ভাড়ার পরিমাণ তিন হাজার ৬০০ টাকা। তৃতীয় ব্যক্তি মাসে ১২ হাজার টাকা করে দিচ্ছেন ভাড়া। এই মার্কেটে দোকানোর সংখ্যা ১৩। সহকারী কমিশনার জানান, ‘সুপ্রিম কোর্টে মামলা চলছে। মামলার সব কাগজপত্র পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে যাচাই করে। সরকারি সম্পত্তি বেদখল হওয়া অনুচিত।’
দীর্ঘ দিন পরে হুঁশ হলেও ধন্যবাদ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। প্রশ্ন হলো, সরকার এতদিন কোথায় ছিল? কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি কিভাবে বেহাত হয়ে যায়।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement
গাজা যুদ্ধবিরতির জন্য প্রস্তুত : হামাস অ্যাডভোকেট সাইফুল হত্যা : সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবীদের প্রতিবাদ সমাবেশ নৌ-পরিবহন উপদেষ্টার সাথে মালদ্বীপের হাইকমিশনারের সাক্ষাৎ হিজবুল্লাহ-ইসরাইল অস্ত্রবিরতি চুক্তিকে স্বাগত বিশ্ব নেতাদের আয়ারল্যান্ডকে ১৫৪ রানে হারিয়ে রেকর্ড গড়ল টাইগ্রেসরা ববিতে চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যার প্রতিবাদে ইসকন নিষিদ্ধের দাবি মার্কিন দূতাবাস থেকে বাসায় ফিরলেন খালেদা জিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ ভর্তির বিষয়ে সব পক্ষের মতামত গ্রহণের সিদ্ধান্ত অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারীদের হাসিনার পালানোর দৃশ্য মনে করতে বললেন ফারুকী ঢাকা ইপিজেড ও সংলগ্ন এলাকায় ১২ ঘণ্টা বন্ধ থাকবে গ্যাস সাম্প্রতিক ঘটনায় উদ্বিগ্ন মির্জা ফখরুল

সকল