কর্তৃপক্ষের গাফিলতিই কারণ!
- ১৯ জুন ২০২২, ০০:০০
সহযোগী একটি জাতীয় দৈনিক জানায়, খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলায় গাফিলতিসহ নিদারুণ গড়িমসির শিকার ৪০ দিনের কার্যসূচির দরিদ্র কর্মীরা। ৪০ দিনের এ কাজ মাত্র ১২ দিন না হতেই বন্ধ। এ অবস্থায় দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দ করা দুই কোটি ৭৪ লাখ ৮৮ হাজার টাকার বেশির ভাগ, এক কোটি ৯২ লাখ ৪১ হাজার ৪০০ টাকা ফেরত যাচ্ছে। ক্ষতির শিকার হয়েছেন হতদরিদ্র শ্রমিকরা এবং বিঘিœত হলো গ্রামাঞ্চলের উন্নয়ন।
জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিরা ত্রাণ অধিদফতর থেকে যথাসময়ে নির্দেশনামা না আসা তথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের গাফিলতিকে এ জন্য প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। অন্য দিকে, সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা অফিসের দাবি, অধিকাংশ ইউনিয়নের প্রকল্পের নাম আসে খুব দেরিতে। এ জন্য কাজটি দেরিতে শুরু করতে হয়। ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃপক্ষ তা মানতে মোটেও রাজি নয়। মোট কথা, গরিবের জন্য বরাদ্দকৃত সর্বাধিক অর্থ এবার ফেরত যাচ্ছে কোনো কাজ ছাড়াই।
পিআইও অফিস জানায়, ৫ মে সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ অধিদফতর ৪০ দিনের কর্মসূচির দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু করতে চিঠি পাঠিয়েছে। এ মোতাবেক উপজেলা পর্যায়ে পিআইও অফিস ১০ মের ভেতরে প্রকল্প গ্রহণ করে তালিকা পাঠাতে ডুমুরিয়ার ১৪টা ইউপির চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়েছে। এরপর ১৭ মে উপজেলা স্তরের কমিটির সভাতে ১৪ প্রকল্প অনুমোদিত হয় এবং জেলা পর্যায়ে কাজটি আরম্ভ করার প্রস্তাব দেয়া হয়। তার ফলে ২৪ মে এ কাজ শুরু হয়ে যায়। তবে সংশ্লিষ্ট অধিদফতর পত্র প্রেরণ করে ইতোমধ্যে বলেছে, ‘৮ জুনের মধ্যে ৪০ দিনের কাজ শেষ করা চাই।’ ২৪ মে থেকে ৮ জুন (বৃহস্পতি ও শুক্রবার বাদ দিলে) মাত্র ১২ দিন সময় মিলেছে। ফলে হতদরিদ্র ব্যক্তিদের পাওনার মাত্র ৮২ লাখ ৪৬ হাজার ৪০০ টাকা তারা পাচ্ছে। আর ফেরত দিতে হচ্ছে এক কোটি ৯২ লাখ ৪১ হাজার ৬০০ টাকা। একটি সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার দফতরের (পিআইও) সব অফিসারই ৪০ দিনের কর্মসূচিতে কম আগ্রহী আগে থেকেই। তারা কাজের বিনিময়ে খাদ্য বা কাবিখা এবং টেস্ট রিলিফ (টিআর) এবং সেতু নির্মাণের কাজ বেশি তত্ত্বাবধান করে থাকেন। আর চলমান প্রকল্প আশ্রয়ণের গৃহ নির্মাণকাজের সার্বক্ষণিক ব্যস্ততা তো আছেই।
অবশ্য খোদ পিআইও বলেছেন, ‘ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রয়োজনীয় প্রস্তাব পাস ছাড়াও প্রকল্পের তালিকা সময়মতো কখনো পাওয়া যায় না। এতে প্রকল্পের কাজ শুরু করায় দেরি করতে হয়। বেশির ভাগ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এটা অস্বীকার করেন। বরং তাদের অভিযোগ, এখন যে কোনো দফতরের কাজে বিলম্ব করা হচ্ছে। কিন্তু এ জন্য কাউকে কাজ ত্বরান্বিত করতে উপর থেকে তাগিদ দেয়া হচ্ছে না।’ কেবল ১২ দিনের কাজেও তিন দিন বেশি বিল করা প্রসঙ্গে বলেছেন সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী। তার কথা, তিন দিন বেশি কাজ করার কথা থাকলেও ১২ ওয়ার্ডের বেশির ভাগ স্থানে তা হয়নি। এটা সরেজমিন দেখা গেছে।
একজন ইউপি মেম্বর বলেছেন, ‘খবর পেলেই কাজ শুরু হয়ে যায়। কিন্তু কর্তৃপক্ষের গাফিলতির দরুন কোনো বারই কাজ নির্ধারিত ৪০ দিন হয় না। আর এবার মাত্র ১২ দিন তা চলায় সবাই হতাশ হয়েছেন।’ একজন সরকারি প্রকৌশলী বলেন, আমাদের কোনো প্রকার গাফিলতি নেই। অথচ চেয়ারম্যানরাই দেরি করছেন। তাই যথাসময়ে প্রকল্পের কাজ করা যায় না। তিনি নমুনারূপে একটি ইউপির তালিকা সম্বলিত পত্র সাংবাদিককে দেখালেন যাতে তারিখ লেখা ছিল ১৭ মে। তবে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান পাঁচবারেও মোবাইলে ফোন ধরেননি।
কর্তৃপক্ষের গাফিলতি কিংবা স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধিদের বিলম্ব এর কারণ। যা হোক, অবিলম্বে যথেষ্ট তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আমরা এখনো আশা করি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা