সড়ক সংস্কারের বেহাল দশা!
- ১৭ জুন ২০২২, ০০:০০
নয়া দিগন্তের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, নোয়াখালী জেলার সুবর্ণচর উপজেলায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের আওতায় কয়েকটি পুরনো সড়ক সংস্কারে ব্যাপক দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও তদারকি কর্মকর্তাদের পারস্পরিক যোগসাজশে নিম্নমানের এ কাজগুলো হয়েছে বলে এলাকাবাসী জানায়।
পাঁচটি রাস্তা নির্মাণে নিম্নমানের ইটের খোয়া, ইট ও বালু ব্যবহার করার অভিযোগ এসেছে। সড়কগুলোর মধ্যে রয়েছে এক কোটি ৬৮ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ের, পরিষ্কার বাজার থেকে সিদ্দিক মেম্বরের দোকান পর্যন্ত চার হাজার মিটার দীর্ঘ সড়ক। কাজটি ঠিকাদারি ফার্ম মোস্তফা অ্যান্ড সন্সের। আরো আছে এক কোটি ৬৮ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে উপজেলার আটকপালিয়া বাজার থেকে পরিষ্কার বাজার পর্যন্ত ২৩ শ’ মিটার সড়ক, যে কাজ পেয়েছে ‘মা এন্টারপ্রাইজ’ এবং সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার নিজেই কাজটা করিয়েছেন। কাজগুলোর আরেকটি হলো- মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের আক্তার মিয়ার বাজার থেকে বেড়িবাঁধ পর্যন্ত এক হাজার ৯২২ মিটার লম্বা রাস্তা। অন্যতম কাজ হচ্ছে, চরক্লার্ক ইউনিয়নে জনতা বাজার থেকে বাংলাবাজার এক কোটি ৪৫ লাখ টাকা ব্যয়সাপেক্ষ সাড়ে তিন হাজার মিটার দীর্ঘ সড়ক, যা মোস্তফা অ্যান্ড সন্সের কাজ। তা ছাড়া রয়েছে সুবর্ণচর উপজেলার ভূঁইয়ার হাট থেকে জোবায়ের মিয়ার বাজার কৃষি ইনস্টিটিউট পর্যন্ত দুই হাজার ২৯ মিটার সড়ক। এতে ব্যয় হওয়ার কথা এক কোটি ২৮ লাখ টাকা। এ কাজের দায়িত্বে আছে মিজান এন্টারপ্রাইজ এবং ঠিকাদার নিজেই কাজটা করিয়েছেন। সরকারি রক্ষণাবেক্ষণ প্রকল্পের অধীনে এলজিইডির স্থানীয় সুবর্ণচর উপজেলা অফিসের তত্ত্বাবধানে এসব রাস্তা সংস্কার করার কাজ চলছে।
এলাকার লোকজনের অভিযোগ, প্রথম সড়কটির সংস্কারের শুরুতেই নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহৃত হয়েছে। এরপর রাস্তায় পিচ ঢালাইয়ে নিম্নমানের পুরনো পাথর, বজুরি, বিটুমিন ব্যবহার করে মধ্যরাতে বৃষ্টিতে কাজ করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বাধা দিলে পরদিন কোনো কাজ হয়নি। ঢালাই শেষে সড়কের কয়েক স্থান থেকে হাত দিয়ে টেনেই নতুন কার্পেটিং তুলে ফেলা সম্ভব হয়েছে। এমনকি, এর ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল পর্যন্ত হয়ে গেছে। এ দিকে আটকপালিয়া বাজার থেকে পরিষ্কার বাজার সড়কের সংস্কার কাজে প্রথমেই ঠিকাদার নিম্নমানের ইট, খোয়া ও বালু ব্যবহার করেছেন।
স্থানীয় সংবাদকর্মীরা নিম্নমানের সংস্কারের বিষয়ে এর তদারকি প্রতিষ্ঠানকে জানিয়েও কোনো ফল পায়নি; বরং বেপরোয়া ঠিকাদার তার অপকর্ম চালিয়ে গেছে। জনতাবাজার থেকে বাংলাবাজার এবং ভূঁইয়ার হাট থেকে কৃষি ইনস্টিটিউট সড়ক সংস্কারের শুরুতেই নিম্নমানের নির্মাণ উপকরণ ব্যবহৃত হয়েছে। কোথাওবা নিম্নমানের সামগ্রী ডাম্পিং করে পিচ ঢালাই করা হচ্ছে।
এলাকাবাসী বলেছেন, সংশ্লিষ্ট শিডিউলের কোনো প্রকার তোয়াক্কা না করেই এসব কাজ চলছে। প্রথম থেকেই তদারকি প্রতিষ্ঠানের যোগসাজশে তাড়াহুড়ার মধ্যে এসব অনিয়ম করা হচ্ছে। ফলে কয়েক স্থানে এলাকার মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে সংস্কারকাজে বাধা দিয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষকে জানালেও ফল হয়নি। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, এবার বর্ষায় রাস্তার সব কিছু উঠে যাবে। স্থানীয় বাসিন্দারা মানহীন মেরামতির প্রতিবাদ জানালে উল্টো তাদের নামে চাঁদাবাজি মামলার হুমকি দেয়া হয়।
উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী সব অভিযোগ বাতিল করে দিয়ে বলেছেন, এটা তদারকি প্রতিষ্ঠান নয়, ঠিকাদারের দুর্নীতি। কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়া হবে। ভুক্তভোগীদের বক্তব্য, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব পালন না করায় রাষ্ট্র ও জনগণকে প্রতারণা করে কাজ হয় মানহীন।
অবিলম্বে তদন্ত করে এসব ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আমরা আশা করি। অন্যথায় সবাই দুর্ভোগ পোহাবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা