২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
সংখ্যা বাড়ানোর বাজেট

দরকার জনকল্যাণ

-

প্রতি বছর জুনের শুরুতে চারদিকে রব ওঠে ‘বাজেট’ নিয়ে। এ নিয়ে অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদরা বিস্তর আলোচনা করেন। তবে নাগরিক জীবনে বাজেট ধরা দেয় জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ার মাধ্যমে। এবার বাজেট আরো তীব্রভাবে আঘাত হানবে বাজারে। বাজেট উপস্থাপনের আগেই নিত্যপণ্যের দাম কয়েকগুণ বেড়েছে। সংসদে বাজেট পেশের দিনও সেই প্রবণতা দেখা গেল। এবারের বাজেটের আলোচনায় অর্থনীতির নৈতিক দিকটি অনেকে উল্লেখ করেছেন। বর্তমান সরকারের আমলে কালো টাকার অর্থনীতি এতটাই শক্তিশালী হয়েছে, বাজেটের প্রকাশ্য পরিসংখ্যানের ওপর এর প্রভাব পড়েছে।
বরাবরের মতো ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাজেটের আকার দাঁড়িয়েছে ছয় লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের চেয়ে ৭৪ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা বেশি। আকার বেড়েছে ১২ দশমিক ৩২ শতাংশ। যদিও গত অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের আকার কিছু কম ছিল, এবারো হয়তো কিছুটা কমবে। বাজেটে সরকারি আয়ের প্রধান উৎস জ্বালানি তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ, সারসহ নিত্যব্যবহার্য পণ্যের দাম সমন্বয়। অন্যদিকে মূল্যস্ফীতির মূল কারণও এগুলো। বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। সহজভাবে জাতীয় সম্পদে আরো সাড়ে ৭ শতাংশ বৃদ্ধি ঘটবে এই অর্থবছরে। এ জন্য সরকার মূল্যস্ফীতিকে ৫ দশমিক ৬ শতাংশে বেঁধে রাখবে। বাজেট বাস্তবায়নের নীতি অনুযায়ী এটা বাস্তব নয় বলে উল্লেখ করছেন বিশেষজ্ঞরা। বর্তমান সরকারের সময়ে আমরা টানা প্রবৃদ্ধি ও মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির হিসাব পাচ্ছি যা শুধু টাকার অঙ্কে রয়ে গেছে। মানুষের দৈনন্দিন জীবনের বাস্তবতায় আসেনি। এবার সেটা বেড়ে তিন হাজার সাত ডলার হওয়ার লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছে।
করোনা-উত্তর ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের প্রভাবে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। গরিব দেশ হিসেবে আমরা এর সবচেয়ে বড় শিকার। বিশেষ করে দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। খাদ্যদ্রব্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় জনগোষ্ঠীর বিপুল অংশ প্রয়োজনীয় আহার জোগাতে ব্যর্থ হচ্ছে। মূল্যস্ফীতির ফাঁদে পড়ে মধ্যবিত্তের জীবনযাত্রা কঠিন থেকে কঠিনতর হয়েছে। এ অবস্থাতেও আমাদের এই মোটাতাজা বাজেটের মূল জোগানদাতা মধ্যবিত্ত-নি¤œবিত্ত ও খেটে খাওয়া মানুষ। নতুন বাজেটের প্রভাবে বাজারে তেল চাল আটাসহ খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ছে। আবার দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী মানুষের পাশাপাশি বয়স্ক ও অসহায়দের বরাদ্দ বাড়েনি। সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বাজেটে বরাদ্দ রাখা হয়েছে মাত্র দশমিক ৮৪ শতাংশ। ব্যক্তি-শ্রেণীর করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানোও হয়নি। অন্যদিকে করপোরেট করহার কমানো হয়েছে। এ বাজেটকে তাই ধনী তোষণকারী বলছেন অনেকে।
পাচার হওয়া অর্থের প্রতি সরকারের নীতিকে ভারসাম্যপূর্ণ বলা যাবে না। ৭ শতাংশ কর দিয়ে যে কেউ পাচার হওয়া অর্থ সাদা করে নিতে পারবেন। এতে বিপুল পাচার হওয়া অর্থ ফিরে আসার কোনো নিশ্চয়তা না থাকলেও অন্যায়ের সাথে প্রকাশ্যে আপসের একটা নীতি গ্রহণ করা হলো। ঘাটতি বাজেট মোকাবেলায় বিদেশী ঋণের ওপর উচ্চ নির্ভরতা রয়েছে। আবার বাজেটের বিশাল একটা অংশ ব্যয় হয় এর সুদাসল পরিশোধে। এ ব্যাপারে সরকারের সতর্ক নীতিমালা বাজেটে পরিলক্ষিত হচ্ছে না।
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গণমানুষের সমর্থন। প্রতিবার বাজেট পেশ করা হলে এর পক্ষে সরকারি দল ও বিপক্ষে বিরোধী দল মিছিল করে। এবার ব্যতিক্রম দেখা গেল। প্রধান বিরোধী দল বিএনপি কেন বাজেট প্রতিক্রিয়া দেখায়নি এর উত্তরে দলের মহাসচিব প্রশ্ন রাখেন, এ বাজেট কার? তারা বলতে চাইছেন সরকার জনগণের দ্বারা নির্বাচিত নয়। সুতরাং তারা এমন বাজেট ঘোষণার অধিকার রাখেন না। বাজেটের নৈতিক ভিত্তিকে শক্ত করতে হলে এবং একটি ভালো বাজেট প্রণয়ন করতে হলে সরকারের বৈধতা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা আশা করব, বাস্তবতার নিরিখে ও জনপ্রত্যাশার আলোকে সরকার বাজেট সংশোধন করবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
চুয়াডাঙ্গা জেলা আইনজীবী সমিতিতে বিএনপির ১৫ প্রার্থী বিজয়ী চিন্ময় ইস্যুতে ভারতের বিবৃতি দেয়া অনধিকার চর্চা : উপদেষ্টা নাহিদ কুড়িগ্রামে পিলখানা হত্যার তদন্ত ও চাকরিতে পূর্ণবহালের দাবি গাজা যুদ্ধবিরতির জন্য প্রস্তুত : হামাস অ্যাডভোকেট সাইফুল হত্যা : সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবীদের প্রতিবাদ সমাবেশ নৌ-পরিবহন উপদেষ্টার সাথে মালদ্বীপের হাইকমিশনারের সাক্ষাৎ হিজবুল্লাহ-ইসরাইল অস্ত্রবিরতি চুক্তিকে স্বাগত বিশ্ব নেতাদের আয়ারল্যান্ডকে ১৫৪ রানে হারিয়ে রেকর্ড গড়ল টাইগ্রেসরা ববিতে চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যার প্রতিবাদে ইসকন নিষিদ্ধের দাবি মার্কিন দূতাবাস থেকে বাসায় ফিরলেন খালেদা জিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ ভর্তির বিষয়ে সব পক্ষের মতামত গ্রহণের সিদ্ধান্ত

সকল