২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
মাছের পোনার বেপরোয়া নিধন

অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে

-

ফেনী নদীর মোহনায় বহু প্রজাতির মাছের পোনা নির্বিচারে নিধনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নয়া দিগন্তের মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধির পাঠানো এক সচিত্র সংবাদে জানা গেছে, সেখানে ফেনী নদীর মোহনায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করে অবাধে গলদা ও বাগদা চিংড়ির রেণু সংগ্রহ করা হচ্ছে। আর এ কাজ করতে গিয়ে ধ্বংস করা হচ্ছে প্রায় দুই হাজার মাছ ও জলজ প্রাণীর পোনা। প্রশাসনের নাকের ডগায় এ মহোৎসব চলছে ধ্বংসযজ্ঞের।
সরেজমিন দেখা যায়, নিষিদ্ধঘোষিত ঠেলাজাল ও মশারি দিয়ে মৎস্যজীবীরা চিংড়ি রেণু সংগ্রহে মেতে উঠেছেন। তাদের কাছ থেকে কিনে নিয়ে তা ডাবল দামে বেপারিরা বেচে দিচ্ছে বাগেরহাট, খুলনা ও যশোরসহ দেশের নানা স্থানের চিংড়িঘের মালিকদের কাছে। রেণু সংগ্রহ করার অবৈধ কাজ চলছে প্রকাশ্যেই। ফেনী নদীতে প্রতি বছরই এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত এই দৃশ্য চোখে পড়ে। কিন্তু মাছের প্রজনন মৌসুম বলে এ সময়টায়ই সরকার পোনা ধরার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে আসছে। ফেনী নদীর মুহুরি প্রজেক্ট (বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সেচ প্রকল্প) এরিয়া থেকে শুরু করে চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার ইছাখালি ও বামনসুন্দর খাল পর্যন্ত এবং পাশের ফেনী জেলার সোনাগাজীতে ছোট ফেনী নদীর কাজিরহাট সøুইসগেট থেকে শুরু করে দক্ষিণে সন্দ্বীপ চ্যানেল পর্যন্ত বিশাল উপকূলে প্রতিদিনই চিংড়ি পোনা আহরণ করা হচ্ছে লাখে লাখে। উপকূলীয় জনপদের হাজার হাজার মানুষ শুধু চিংড়ির পোনা আহরণ করেই জীবিকা নির্বাহ করছে। অপর দিকে, সংশ্লিষ্ট জেলেরা শুধু বাগদা-গলদা চিংড়ি রেণু সংগ্রহ করে অন্য মাছের রেণু ও জলজপ্রাণিগুলো ফেলে দেয়। এ দিকে, শুধু মুহুরি সেচ প্রকল্প এলাকা থেকেই দিনে লক্ষাধিক চিংড়ি পোনা বৃহত্তর ঢাকা ও খুলনায় পাঠানো হচ্ছে।
মুহুরি রেগুলেটর এলাকায় খুলনা থেকে আগত মৎস্যজীবীর সাথে কথা হয়েছে। জানা যায়, তিনি ব্যবসা উপলক্ষে বছরে দুই মাসের জন্য এখানে আসেন। একই এলাকার আরেক ব্যবসায়ী এপ্রিল থেকে জুন- এই তিন মাস এখানে থাকেন চিংড়ি পোনা আহরণে।
এলাকাবাসীর মতে, চিংড়ির রেণু সংগ্রহের সময়ে কোরাল, চিংড়ি, বেলে, মলা, ডেলা, তপসে, বাটা, চাপিলা, ট্যাংরা, পোয়া, লইট্যা, ভেটকি, চেউয়া, কাঁচকি- এমনকি ইলিশ মাছের পোনা পর্যন্ত উঠে আসে। আর কাঁকড়া বা কুচে তো আছেই। জেলেরা শুধু চিংড়ি রেখে অন্য সব পোনা ফেলে দেয়। এখানে চিংড়ির দাম ভালো হলেও অন্যান্য পোনা বিক্রি করা যায় না। প্রভাবশালী ব্যক্তিরা বৃহত্তর খুলনা ও যশোরের লোকজন এনে ঘর তুলে, সবার সামনেই এ ব্যবসায় চালিয়ে যাচ্ছে। প্রকাশ্যেই ড্রামভর্তি চিংড়ি রেণু পাঠানো হয় বিভিন্ন এলাকায়। প্রশাসনের চোখের সামনেই এসব অবৈধ কারবার চলে থাকে। জানা গেছে, এমন বেআইনি কাজ দমনের জন্য আইন আছে, প্রয়োগ নেই। তাই তেমন জেল-জরিমানা করা হয় না সংশ্লিষ্ট অপরাধীদের।
মৎস্যবিজ্ঞানীরা জানান, পরিসংখ্যানে দেখা যায়, একটি চিংড়ির রেণু সংগ্রহ করতে অন্য ৪৬৩টি পোনা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। মোট এক হাজার ৭৬৩ প্রজাতির জলজপ্রাণী এভাবে ধ্বংস হচ্ছে। সার্বিকভাবে তা দেশের সম্পদহানির একটা বড় কারণ। মিরসরাই উপজেলা মৎস্য অফিসার বলেন, ‘আমরা প্রত্যেক বছরের মতো এবারো অভিযান চালাব। সর্বদা না পারলেও ইলিশ মাছের প্রজনন মৌসুমে মাঝে মধ্যে অভিযান চলে। অবৈধ রেণু সংগ্রহে সর্বাধিক ক্ষতি ইলিশের। এ জন্য দরকার সবার সচেতনতা ও বিকল্প কর্মসংস্থান।’
অবিলম্বে অবৈধ পোনা বা রেণু সংগ্রহ বন্ধ করে দেশের মৎস্যসম্পদ রক্ষা করা হবে বলে আমরা আশা করছি।


আরো সংবাদ



premium cement
কুড়িগ্রামে পিলখানা হত্যার তদন্ত ও চাকরিতে পূর্ণবহালের দাবি গাজা যুদ্ধবিরতির জন্য প্রস্তুত : হামাস অ্যাডভোকেট সাইফুল হত্যা : সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবীদের প্রতিবাদ সমাবেশ নৌ-পরিবহন উপদেষ্টার সাথে মালদ্বীপের হাইকমিশনারের সাক্ষাৎ হিজবুল্লাহ-ইসরাইল অস্ত্রবিরতি চুক্তিকে স্বাগত বিশ্ব নেতাদের আয়ারল্যান্ডকে ১৫৪ রানে হারিয়ে রেকর্ড গড়ল টাইগ্রেসরা ববিতে চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যার প্রতিবাদে ইসকন নিষিদ্ধের দাবি মার্কিন দূতাবাস থেকে বাসায় ফিরলেন খালেদা জিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ ভর্তির বিষয়ে সব পক্ষের মতামত গ্রহণের সিদ্ধান্ত অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারীদের হাসিনার পালানোর দৃশ্য মনে করতে বললেন ফারুকী ঢাকা ইপিজেড ও সংলগ্ন এলাকায় ১২ ঘণ্টা বন্ধ থাকবে গ্যাস

সকল