২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজে ছাত্রলীগের হামলা

শোকের মধ্যেও বেপরোয়া

-

ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন-ছাত্রলীগের লাগামহীন বেআইনি কর্মকাণ্ড চলছে অবাধে। কারো ওপর চড়াও হতে তাদের এখন আদর্শিক বা রাজনৈতিক বিরোধেরও প্রয়োজন পড়ছে না। বড় ধরনের বিপদ ও শোকের মধ্যেও যে কাউকে মারধর করছে। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজে (চমেক) অগ্নিদগ্ধদের চরম দুর্দশার মধ্যেও গত মঙ্গলবার দুটো অঘটন ঘটিয়েছে ছাত্রলীগ। এতে হাসপাতালের চিকিৎসার পরিবেশ বিঘ্নিত হয়। দগ্ধদের জরুরি চিকিৎসাও কয়েক ঘণ্টা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। নিহতের পরিবার ও আহতদের সমবেদনা জানাতে যাওয়া ব্যক্তিদের ওপর হামলা করে চরম বিশৃঙ্খল পরিবেশের জন্ম দেয় ছাত্রলীগ। ক্ষমতার আশ্রয়-প্রশ্রয়ে থেকে ছাত্রলীগ বেশ কয়েক বছর ধরে বহু অপকর্ম করেছে, তার কোনোটির আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ফলে তারা কোনো কিছু পরোয়া করে না। প্রশ্ন হচ্ছে, ছাত্র নামধারীদের একটি পক্ষকে আর কতকাল প্রশ্রয় দেয়া হবে?
গণসংহতি আন্দোলন ও গণঅধিকার পরিষদের নেতারা সীতাকুণ্ডের বিস্ফোরণে আহতদের দেখতে চমেকে গেলে বিকেলে তাদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ। হাসপাতাল চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের দেখে গাড়িতে উঠতে যাওয়ার সময় তাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে সন্ত্রাসীরা। সন্ত্রাসীদের নিক্ষিপ্ত ইটের আঘাতে গণসংহতির জোনায়েদ সাকি ও গণঅধিকার পরিষদের রাশেদ খানসহ ছয়জন আহত হন। একই দিন প্রায় একই সময়ে ছাত্রলীগ চমেক শাখার নেতাকর্মীরা আরো একটি হামলার ঘটনা ঘটায়। তারা এক নার্সের শ্লীলতাহানি করে এবং এক ওয়ার্ড বয়কে মারধর করে। রোগী ভর্তি করাতে গিয়ে নার্সের সাথে ছাত্রলীগের এক সদস্যের মৃদু কথা কাটাকাটি হয়েছিল। এরপর শিক্ষা উপমন্ত্রীর অনুসারী ৩০-৪০ জনের একটি গ্রুপ হামলা চালায়।
চমেক ছাত্রলীগের বিবদমান পক্ষগুলোর মধ্যে বিরোধ বহুদিনের। চট্টগ্রাম মহানগরের দুই প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা নিজ নিজ অনুসারীদের নিয়ন্ত্রণ করেন। এর আগে দুই গ্রুপ পরস্পরের ওপর হামলা করলে এক মেডিক্যাল ছাত্রের মাথার খুলি উড়ে যায়। চমেক কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে উভয় গ্রুপের সাথে বৈঠক করে। কোনো গ্রুপের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে না পেরে বাধ্য হয়ে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়। আধিপত্য ধরে রাখার পাশাপাশি এর নেপথ্যে রয়েছে হাসপাতাল ব্যবসায় ও চিকিৎসা সরঞ্জাম বাণিজ্য। এর শিকার হচ্ছেন সাধারণ শিক্ষার্থী, বিঘ্নিত হচ্ছে চিকিৎসার পরিবেশ। আগামীর ডাক্তারদের মানসিকতা ছাত্রলীগ করতে গিয়ে কতটা সঙ্কীর্ণ হয়েছে নার্সের ওপর হামলা থেকে বোঝা যায়। নার্স-ওয়ার্ড বয়রা সহকর্মী হলেও ভাইরাল হওয়া হামলার ভিডিওতে দেখা যায়, হবু ডাক্তাররা নিজেদের সহকর্মীদের প্রতি কোনো সম্মানবোধ করেন না।
অনিয়ম-দুর্নীতি ও সন্ত্রাস এখন জাতীয় রাজনীতির অনুষঙ্গ। আওয়ামী লীগ এসব কাজে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীকে ব্যবহার করছে। গণসংহতি ও গণঅধিকারের নেতাদের ওপর হামলা সেই রাজনীতির অংশ। একই ধরনের চর্চা আমরা কিছু দিন আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেও দেখেছি। ছাত্রদলকে ঠেকাতে লাঠিসোঁটা ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা করে ছাত্রলীগ। দেশের সর্বোচ্চ আদালত প্রাঙ্গণে পৈশাচিক কায়দায় ছাত্রদলকে পিটিয়েছে। ছাত্রলীগের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড কেন বন্ধ হচ্ছে না তা-ও এসব ঘটনা থেকে বোঝা যায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা করে। ঘটনাস্থলে অভিযুক্তদের অ্যাকশনে থাকা ভিডিও ও ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। অন্য দিকে, ছাত্রলীগের করা মামলা গ্রহণ করা হয়েছে।
স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর অপরাধের কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। ফলে যারা এসব করছে তাদের বেপরোয়া ভাব আরো বেড়ে যায়। একই কারণে আরো অনেকে অপরাধকর্মে উৎসাহী হয়। ব্যাপারটি সরকারের ওপর বর্তায় ক্ষমতাসীনরা ছাত্রলীগকে কোন অবস্থায় দেখতে চান। যদি ছাত্র সংগঠনটিকে সন্ত্রাসী ভূমিকায় চান তাহলে এভাবে চলবে। তাদের মধ্যে যদি সুববুদ্ধির উদয় হয় তারা সংগঠনটিতে সংশোধনের উদ্যোগ নেবেন। তবে এখন পর্যন্ত এমন কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।


আরো সংবাদ



premium cement
গাজা যুদ্ধবিরতির জন্য প্রস্তুত : হামাস অ্যাডভোকেট সাইফুল হত্যা : সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবীদের প্রতিবাদ সমাবেশ নৌ-পরিবহন উপদেষ্টার সাথে মালদ্বীপের হাইকমিশনারের সাক্ষাৎ হিজবুল্লাহ-ইসরাইল অস্ত্রবিরতি চুক্তিকে স্বাগত বিশ্ব নেতাদের আয়ারল্যান্ডকে ১৫৪ রানে হারিয়ে রেকর্ড গড়ল টাইগ্রেসরা ববিতে চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যার প্রতিবাদে ইসকন নিষিদ্ধের দাবি মার্কিন দূতাবাস থেকে বাসায় ফিরলেন খালেদা জিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ ভর্তির বিষয়ে সব পক্ষের মতামত গ্রহণের সিদ্ধান্ত অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারীদের হাসিনার পালানোর দৃশ্য মনে করতে বললেন ফারুকী ঢাকা ইপিজেড ও সংলগ্ন এলাকায় ১২ ঘণ্টা বন্ধ থাকবে গ্যাস সাম্প্রতিক ঘটনায় উদ্বিগ্ন মির্জা ফখরুল

সকল