২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
জলাবদ্ধতায় ৫ হাজার পরিবারের দুর্ভোগ

আবাসন প্রকল্পকেই দায় নিতে হবে

-

নয়া দিগন্তের এক সচিত্র প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, রাজধানীর অদূরে নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলায় কাঞ্চন পৌরসভার অনেক এলাকার প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার জলাবদ্ধতায় গৃহবন্দী। তারা নিজেদের ক্ষেতেও ফসল ফলাতে পারছে না। কিছু ‘বেআইনি’ আবাসন প্রকল্প মাটি ও বালু ভরাট করায় এলাকার খালগুলো ভরাট হয়ে এ অবস্থার জন্ম দিয়েছে বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। তাদের বক্তব্য, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বারবার জানানোর পরও এ সমস্যার কোনো সুরাহা হয়নি।
একই প্রতিবেদনে আরো জানা যায় যে, সরেজমিন দেখা গেছে, পৌর এলাকায় নয়াবো, নলীর টেক, নলপাথর, প: কালাদি, ত্রিশকাহনিয়া, পিঠাগুঁড়ি, টেকপাড়া, ডুলুরদিয়া, কালি, হান্ডিমার্কেট প্রভৃতি স্থানে বালু ও মাটি ভরাট করা হচ্ছে আবাসনের জন্য। অথচ বালুর সাথে আসা পানিতে ফসলের ক্ষেত ডুবে যাচ্ছে। তদুপরি, বর্ষণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় রাস্তাঘাট নিমজ্জিত। এলাকার আবাসগৃহের উঠোনে পানি, ঘরের মেঝেতে পানি। শাকসবজিক্ষেত পানিতে ডুবে আছে। সড়কে একহাঁটু পানি। পানিতে ডুবে গোটা এলাকা থই থই করছে। কোথাও কোথাও শিল্পপ্রতিষ্ঠান তথা, কলকারখানার বর্জ্য পানির দূষণ ঘটিয়েছে। ঘন কালো রঙের এ পানিতে চলাচল করে বহু লোক ভুগছেন চর্মরোগে। অপরিকল্পিত ভরাট কাজের দরুন খাল ভরে গেছে। ফলে অবস্থা বর্তমানে শোচনীয়।
জানা গেছে, জলাশয় ও জলাবদ্ধ জমির দাম কম। এ জন্য আবাসন প্রকল্পগুলো কৃত্রিম জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। একজন বাসিন্দা জানান, ‘পানি নিষ্কাশনের কোনো উপায় নেই। দায়িত্বহীনতা খালগুলো ভরাট হওয়ার কারণ। তাই আমাদের এখন এত দুর্ভোগ।’ একজন কৃষিজীবীর কথা, জমির দাম এলাকায় যখন অনেক বাড়ছে, তখন অবৈধ আবাসন প্রকল্পের মালিকরা কৌশলে বালু দিয়ে জলাবদ্ধ অবস্থা তৈরি করছে। ওদের ধারণা, এতে জমির দাম কমে যাবে। আর জমির স্বত্বাধিকারীরা জমি বিক্রি করতে বাধ্য হয়ে থাকেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নজর না দিলে উভয় ক্ষেত্রে জমিমালিকদের ক্ষতি হবে। একজন চাকুরে বলেন, পানির জন্য কাজে আসা যাওয়া করা কষ্টকর। একহাঁটু পানি ভেঙে যাতায়াত করতে হয়। মানুষের দুর্গতির শেষ নেই। কাঞ্চন পৌরমেয়র বলেছেন, জলাবদ্ধতা দূর করার জন্য বর্তমানে একটা টিম কাজ করছে। দায়ী ব্যক্তিদের শনাক্ত করে তাদের এ বিষয়ে নোটিশ দেয়া হয়েছে। এ জন্য ১৫ দিন সময় বেঁধে দেয়া হয়। এরপর প্রয়োজনে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। রূপগঞ্জের ইউএনও বলেছেন, উদ্যোগ নেয়া হয়েছে জলাবদ্ধতার সঙ্কট দূর করতে। আশা করছি, ‘শিগগিরই জনদুর্ভোগের অবসান ঘটবে’।
আমরা পরিকল্পিত আবাসনের আহ্বান জানাই, যাতে জনজীবনে দুর্ভোগ না ঘটে। অন্যথায়, জলাবদ্ধতার দায় সংশ্লিষ্ট আবাসন প্রকল্প এড়াতে পারে না। কর্তৃপক্ষের অবিলম্বে এ দিকে নজর দেয়া উচিত।


আরো সংবাদ



premium cement