২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
সিলেটের বুড়ি নদী বিলীন

নদী হত্যার দায় কার

-

নয়া দিগন্তের এক প্রতিবেদনে ওসমানীনগর (সিলেট) সংবাদদাতা জানান, ‘প্রভাবশালী দখলবাজদের আগ্রাসনে বিলীন হয়ে গেছে এককালের প্রমত্তা বুড়ি নদী। অতীতের খরস্রোতা নদীটির তাজপুর বাজার অংশে, পালতোলা সারি সারি নৌকার বদলে এখন শোভা পাচ্ছে বড় বড় পাকা দোকানঘর ও বাসাবাড়ি। বুড়ি নদীর বুকে মাটি ভরাট করে কেউবা করেছেন হাউজিং প্রকল্প; আবার কেউ বানিয়েছেন বাড়িঘর ও মিল-ফ্যাক্টরির রাস্তা। বুড়ি নদীর সাথে সংযুক্ত, পাশের ইসমাইল খালের নাম-নিশানাও এখন নেই। ইসমাইলের খাল ভরাট করে দুলিয়ারবন্দস্থ কিছু অংশে তৈরি হয়েছে বাসাবাড়ির রাস্তা এবং তাজপুর বাজার এলাকায় গড়ে উঠেছে দোকানপাট।’
সিলেটের বালাগঞ্জের প্রাচীনতম বুড়ি নদীর দৈর্ঘ্য ছিল বালাগঞ্জ-ওসমানীনগর অংশে প্রায় ৩০ কিলোমিটার। দক্ষিণ সুরমা উপজেলা থেকে এ নদী মৌলভীবাজার সদর হয়ে কুশিয়ারায় মিশে নবীগঞ্জ উপজেলা হয়ে প্রবাহিত। দক্ষিণ সুরমা উপজেলার লালাবাজারসহ কয়েকটি স্থান হয়ে ওসমানীনগর উপজেলার দয়ামীর ইউনিয়ন দিয়ে প্রবেশ করে বিরাট এলাকা দিয়ে প্রবাহিত হয়ে এ নদী মৌলভীবাজার জেলায় চলে গেছে। কয়েক দশক আগেও এ নদীর বুকে নৌকা চলত। এখন এর মাত্র কয়েক জায়গা ২০-২৫ ফুট চওড়া। তবে তাজপুর বাজার অংশ সম্পূর্ণ হারিয়ে গেছে। জানা যায়, প্রাচীনকালে বুড়ি নদীকে ‘পাপমোচনের বুড়ি বরাক’ বলে অভিহিত করা হতো। তাই তাজপুর বাজারে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা পাপমোচনের জন্য পুণ্যস্নানে আসতেন। তখন বসন্তের বারুনী মেলা বসত এখানে। এখনো সে মেলা আছে। কিন্তু নদীতে পানি না থাকায় স্নানের সুযোগ নেই। একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক মহলের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা আবাসন প্রকল্পের নামে বুড়ি নদীর একাংশ বেদখল করেছে।
অন্য দিকে তাজপুর বাজারের মাঝে বুড়ি নদীর সাথে মিশেছে ইসমাইল খাল। এটি ভরাট করে দুলিয়ারবন্দের পশ্চিমে যাতায়াতের রাস্তা করা হয়েছে। খালের বাকিটা ভরাট করে দোকানপাট ও একটি ইউনিয়নের শ্রমিকদের অফিস বানানো হয়েছে। বহু আগেই খালের মাঝখানটা অন্যায়ভাবে ভরে ফেলে পাকা করা হয়েছে। তাজপুর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, বুড়ি নদীর বেআইনি দখলের অবসানের জন্য প্রশাসনকে বারবার বলা হয়েছে। এখানে কিছুটা দখলমুক্ত হলেও বাজারে নদীর বেশির ভাগ জবরদখলকৃত। ফলে পানি নিষ্কাশন সম্ভব হচ্ছে না। প্রশাসনের বুড়ি নদী উদ্ধার করা জরুরি। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের বক্তব্য, বুড়ি নদী দখল করে দোকান কিংবা হাউজিং প্রজেক্ট যারা বানিয়েছেন তাদের কবল থেকে নদী বাঁচাতে অভিযোগ করা হয় ইউএনও বরাবরে। ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী যেসব ব্যক্তি নদী দখল করে সুন্দর সুন্দর বক্তৃতা করেন তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে বুড়ি নদী উদ্ধার করতে ইউএনওকে আমি বলব। অন্য দিকে ইউএনওর কথা, ‘নদী খনন করা পাউবোর কাজ। আমরা অবৈধ হলে স্থাপনা উচ্ছেদ করি। সরকারের জায়গা উদ্ধার করতে প্রশাসন অভিযান চালাচ্ছে।’ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, সংশ্লিষ্ট প্রকল্প ‘গৃহীত হলে’ তাজপুরের বুড়ি নদীতে খনন শুরু হবে। স্থানীয় উপজেলা চেয়ারম্যান বলেন, ‘বুড়ি নদী খুবই খরস্রোতা ছিল। এখন বেদখলে তা বিলুপ্ত। এলাকার পরিবেশ বাঁচিয়ে রাখতে নদী খনন করা দরকার ।’
আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, নদী হত্যা বা পানি আগ্রাসন মূলত প্রকৃতি ও পরিবেশের বিরুদ্ধে জঘন্য যুদ্ধ, যা নিঃসন্দেহে অপরাধ। তাই সব নদী বাঁচিয়ে রাখতে হবে জনগণের স্বার্থেই।

 


আরো সংবাদ



premium cement
সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবী সাইফুলের গায়েবানা জানাজা ও বিক্ষোভ ঋণ তিন মাস প‌রিশোধ না করলে খেলাপি ‘গণঅভ্যুত্থানের বড় স্টেকহোল্ডার ছিল শিবির’ দাবি ইবি সমন্বয়কের যুক্তরাষ্ট্রে পরকীয়া করছেন নায়ক নিরব, অভিযোগ স্ত্রীর আইনজীবী হত্যার বিচার ও ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে আজও উত্তাল চট্টগ্রাম কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাহাড় কাটা বন্ধের নির্দেশ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের হাসনাত-সারজিসকে হত্যার চেষ্টা, ঢাবিতে বিক্ষোভের ডাক বিচারপতিকে ডিম ছুঁড়ে মারলেন আইনজীবীরা এবার প্রকাশ্যে এলেন বেরোবি শিবির সভাপতি রূপগঞ্জে সুতা কারখানায় আগুন নোয়াখালীতে পিলখানায় হত্যার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ

সকল