২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
বিরোধী নেতাদের ওপর হামলা

পেশিশক্তির প্রদর্শনী অগ্রহণযোগ্য

-

ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের বেআইনি কর্মকাণ্ড নতুন মাত্রা পেয়েছে। দেশে বিভিন্ন স্থানে বিরোধী নেতাদের বাড়িঘরে হামলা ভাঙচুর চালানো হচ্ছে। কোথাও লাঠিসোটাসহ ধারাল অস্ত্র ও ককটেল আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ছেন ক্ষমতাসীন দলের লোকজন। কয়েক বছর ধরে এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নিজ দলের প্রতিদ্বন্দ্বী পক্ষগুলোর মধ্যে সংঘটিত হতো। এখন বিরোধী নেতাদের ওপর চড়াও হওয়ার প্রবণতা লক্ষণীয়। বিরোধী নেতাদে ভয় দেখিয়ে এলাকা ছাড়া করে নিজ দলে কৃতিত্ব জাহিরের চেষ্টা করছেন ক্ষমতাসীনরা। সহজেই অনুমেয়, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আলোচনা শুরু হওয়ায় রাজনীতির নতুন পরিস্থিতিতে ক্ষমতাসীনদের এই পেশিশক্তি প্রদর্শন। কিন্তু পুলিশ প্রশাসন বিরোধী নেতাদের আইনি সহায়তায় কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এমনকি হামলাকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগও গ্রহণ করছে না। অন্য দিকে অন্যায় করেও ক্ষমতাসীনরা অভিযোগ করলেই তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
ঈদ ঘিরে নতুন এই উৎপাতের শুরু। প্রথম হামলা হয় সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ড. আ ন ম এহছানুল হকের ওপর। রমজানের শেষ দিকে ২৫ এপ্রিল এক ইফতার পার্টিতে যোগ দিতে নিজ এলাকায় যান তিনি। সাথে ছিলেন স্ত্রী মহিলা দলের কেন্দ্রীয় সহসভানেত্রী নাজমুন নাহারসহ আরো কয়েকজন। এ সময় সন্ত্রাসী হামলায় তার গাড়ির গ্লাস ভেঙে চুরমার করা হয়। ইফতার মাহফিলে অংশ না নিয়েই ঢাকা ফিরতে বাধ্য হন তিনি। অবাক করা বিষয় হলো, স্থানীয় পুলিশ ঘটনার উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়ার পরিবর্তে ওই এলাকায় তিনি কেন গিয়েছেন সেই প্রশ্ন তুলেছে।
একই দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের বাসভবনে ক্ষমতাসীন দলের লোকজন হামলা চালায়। ৭ মে তিনি নিজ এলাকায় দলীয় নেতাকর্মী ও জনসাধারণের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে গিয়েছিলেন। তার সাথে দেখা করতে আসা লোকেরা হামলার শিকার হন। এ ছাড়া বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবেক এমপি জয়নাল আবেদীনের বাড়িতে যাওয়ার পথে দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে আহত হন ২০ জন।
সর্বশেষ হামলার ঘটনাটি ঘটে লিবারেল ডেমক্র্যাটিক পার্টির (এলডিপি) মহাসচিব ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী ড. রেদোয়ান আহমেদের ওপর। তিনি নিজ এলাকায় ঈদ পুনর্মিলনীর আয়োজন করেছিলেন। সেখানে হামলা করা হলে সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে বাঁচতে নিজের বৈধ অস্ত্র দিয়ে গুলি চালান। তাতে দু’জন আহত হন। পরে তিনি থানায় আশ্রয় নেন। তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তাকে পুলিশ আটক করেছে। যদিও বলা হচ্ছে, এলডিপির সাথে স্থানীয় ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে দেশের কোনো জায়গা পাওয়া যাবে না যেখানে সরকারি দলের সাথে কেউ সংঘর্ষে জড়ানোর সামর্থ্য রাখে। একই সাথে পুলিশের তরফ থেকে কোথাও কাউকে দাঁড়াতেও দেয়া হয় না।
লক্ষণীয়, সরকারি দলের নেতাকর্মীদের জন্য যেন সব কিছু মাফ। যেকোনো ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড তারা অনায়াসে করতে পারেন। বাধা দেয়ার কেউ নেই। পুলিশও আইনানুগ ব্যবস্থা নেয় না বা নিতে পারে না। ক্ষমতাসীন দলের নেতারা নিজ দলীয় কর্মীদের বিরুদ্ধে তা হতে দেন না। প্রত্যেকটি এলাকায় রয়েছে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী। সামনে নির্বাচন হওয়ায় সরকারি দলের প্রার্থীরা সতর্ক। ফলে সম্ভাব্য বিরোধী দলের নেতাদের তারা সহ্য করছেন না। এসব হামলা মূলত ভয়ভীতি দেখাতে, যাতে অদূরভবিষ্যতে নির্বাচনী এলাকার জনসংযোগ করতে না পারেন বিরোধীরা।
প্রশ্ন হলো- পুরো দেশটা কি সরকারি দলের লোকজন চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত নিয়েছেন? কেউ কখনো এলাকায় রাজনীতি কিংবা জনপ্রতিনিধি হতে পারবেন না? ক্ষমতাসীন দলের লোকেরা এমনটা ধরে নিলে তা অগ্রহণযোগ্য। এই চিন্তা অগণতান্ত্রিক। প্রশাসনের উচিত যারা এমন করছেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement
আইনজীবী হত্যায় উত্তাল চট্টগ্রাম জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে : ড. ইউনূস বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে বিভক্ত না হতে মাহাথিরের আহ্বান ইসরাইল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর তিন মাস পার হলেই সব ঋণ খেলাপি মিয়ানমারের জেনারেল মিন অংয়ের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা চাইলেন আইসিসির প্রসিকিউটর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালাস পেলেন খালেদা জিয়া কিছু মানুষ জাতিকে বিভাজনের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন : ফখরুল আইনজীবীর হত্যাকারী ‘বঙ্গবন্ধু সৈনিক’ শুভ কান্তি দাস কে? এশিয়া ডেমোক্র্যাসি অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস অ্যাওয়ার্ড পেল অধিকার চিন্ময় ইস্যুতে ভারতের বিবৃতি দেয়া অনধিকার চর্চা : উপদেষ্টা নাহিদ

সকল