ঠিকাদারকে শাস্তি দিতে হবে
- ০৮ মে ২০২২, ০০:০০
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলায় অনিয়ম থাকায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৮৮টি ঘরের নির্মাণকাজ স্বয়ং জেলা প্রশাসক বা ডিসি বন্ধ করে দিয়েছেন। একটি জাতীয় পত্রিকা আরো জানিয়েছে, তিনি গত ২৮ এপ্রিল সরেজমিন সফরে গিয়ে এই অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছেন। তিনি একই দিনে আখাউড়ার মনিয়ন্ধ, আজমপুর, খলাপাড়া, চানপুর, ঘাগুটিয়া, কর্মমঠ প্রভৃতি স্থানে প্রকল্পটির নির্মাণকাজ দেখেছেন। রাষ্ট্রীয় অর্থের এহেন আত্মসাৎ ও অপচয়, দায়িত্ববোধের অভাব ও অসততা জনমনে অত্যন্ত তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার করেছে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।
আলোচ্য প্রতিবেদনে জানা যায়, জায়গা নির্দিষ্ট করা থেকে আরম্ভ করে প্রকল্পটির সব ক্ষেত্রেই বিভিন্ন অনিয়মের আশ্রয় নেয়া হয়। যেমন, প্রতি শতক জমির জন্য ৩০-৪০ হাজার টাকার বদলে এক থেকে এমনকি দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত দুর্নীতি করে দেয়া হয়েছে জনগণের অর্থ থেকে। প্রকল্পের আওতায়, একটি টিলা কিনে তা কেটে মাটি বেচে দেয়া হয় কয়েক লাখ টাকার বিনিময়ে। ঠিকাদার হচ্ছেন আখাউড়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি। তিনিই আশ্রয়ণের ১৬৯টি ঘর ‘নির্মাণ’ করেছেন। জানা গেছে, সব কাজের তত্ত্বাবধান করেছেন আখাউড়ার ইউএনও। তার নির্দেশ মোতাবেক এ প্রকল্পের সবকিছু করা হচ্ছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার বারবার আপত্তি করলেও তার কথা টেকেনি। প্রকল্পের বিষয়ে ইউএনও জানান, ‘কিছু কাজে’ অনিয়ম থাকায় ডিসি কাজ বন্ধ রাখতে বলেছেন। ইউএনও স্বীকার করেন, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে কাজ দিয়েছেন। ডিসি স্বয়ং বলেন, ‘আশ্রয়ণ প্রকল্পে কোনো ধরনের অনিয়ম মেনে নেয়া হবে না। অনিয়ম গাফিলতি হলে যেকোনো কর্মকর্তার নামেই বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ তিনি ৮৮টি ঘরের কাজ স্থগিত রাখার কথা নিশ্চিত করেছেন।
এ প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে জেলা প্রশাসক সম্প্রতি পাঁচজনকে নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করেন। গত ২৮ এপ্রিল তিনি নিজে রাজমিস্ত্রি ও তার সহকারীকে নিয়ে প্রকল্পের কাজ দেখতে যান। তখন বেশি অনিয়ম লক্ষ করেন খলাপাড়া ও ঘাগুটিয়ায়। তার নির্দেশ মতো, মিস্ত্রিরা কিছু ভবন ভাঙলে দেখা যায়, এতে নির্ধারিত রড দেয়া হয়নি। এসব অনিয়ম পেয়ে বি.বাড়িয়ার জেলা প্রশাসক কর্মমঠ ও খলাপাড়াসহ ছয়টি স্থানে আশ্রয়ণের ৮৮টি ঘর তৈরির কাজ বন্ধ করে দেন। এ কাজের নিম্নমানের দরুন তিনি আখাউড়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও পিআইওকে তিরস্কার বা ভর্ৎসনা করেছেন।
এর আগেও দেশের বিভিন্ন স্থানে নিম্নবিত্তের জন্য নির্ধারিত এ প্রকল্পে নানা অনিয়ম পেয়ে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন স্তরে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। তবুও অনিয়ম ও গাফিলতি বন্ধ হয়নি। অথচ নির্মাণকাজের নিম্নমানের জন্য অনেক জায়গায় নবনির্মিত ঘরের দেয়ালও ফেটে গেছে এবং সিলিং ভেঙে পড়ছে। ফলে গরিবদের কোনো উপকার হয়নি ‘আশ্রয়ণ’ প্রকল্প দিয়ে। অথচ এটা স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর একটি শুভ উদ্যোগ। মুজিববর্ষের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ‘উপহার’ এটা।
আমরা যেকোনো কাজে সব দলীয়করণ, দুর্নীতি, অনিয়ম ও গাফিলতির বিরুদ্ধে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে এ বিষয়ে দায় নিতে হবে এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া উচিত। তদুপরি, এ ব্যাপারে দায়ী কেউ যাতে রেহাই না পায়, সে সম্পর্কে অবিলম্বে নিশ্চিত হতে হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা