ভোজ্যতেলের দাম ফের বৃদ্ধি
- ক্রেতারা অসহায়
- ০৭ মে ২০২২, ০০:০০
সাম্প্রতিক সময়ে দেশে প্রায় প্রতিটি নিত্যপণ্যের মূল্য ঊর্ধ্বমুখী। এতে বেশির ভাগ ভোগ্যপণ্যের দাম স্বল্প আয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। অবস্থা এমন যে, গত দেড় মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়ে যাওয়ায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে সাধারণ মানুষের। ব্যয় বৃদ্ধির চাপ সইতে না পেরে অনেকে পরিবর্তন আনছে জীবনধারায়। চাহিদা মেটাতে টিসিবির ট্রাকের সামনে ভিড় করছে। খাদ্যাভ্যাস ও আবাসস্থল পরিবর্তন করে কোনো রকমে টিকে থাকতে নানা পথ অবলম্বন করতে হচ্ছে নিম্ন ও নিম্নমধ্যবিত্তদের। এমন বাস্তবতায় ভোজ্যতেলের দাম আরেক দফা বেড়ে যাওয়ায় আরো বিপাকে পড়বে সাধারণ মানুষ, এতে কোনো সন্দেহ নেই। শুধু রান্নার তেলের পেছনেই এখন আরো বাড়তি ব্যয় করতে হবে তাদের। এটা তাদের ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’-এর মতো।
দেশে ভোজ্যতেলের চাহিদা বছরে ১৫ লাখ টন। এর মধ্যে সয়াবিনের চাহিদা ১১ লাখ টন, পাম অয়েলের তিন লাখ টন এবং সরিষার এক লাখ টন। নয়া দিগন্তসহ সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যায়, এখন থেকে খোলা সয়াবিন তেল এক লিটার ১৮০ টাকায় বিক্রি হবে। আর পাঁচ লিটার বোতলজাত সয়াবিন বিক্রি হবে ৯৮৫ টাকায়। গতকাল শুক্রবার থেকে নতুন এ দাম কার্যকর হওয়ার কথা। সবশেষ সরকারি সিদ্ধান্তে সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটার ছিল ১৬০ টাকা। ওই হিসাবে এক মাসের ব্যবধানে ভোজ্যতেলের দাম লিটার-প্রতি ৩৮ টাকা বাড়ল।
সয়াবিন তেলের দাম নিয়ে মিল-মালিকদের কারসাজি দীর্ঘ দিনের। তাদের এই কারসাজি ধরতে অতীতে কয়েকবার রিফাইনারি কারখানার প্রধান কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়। দেশে ১১টি প্রতিষ্ঠান ভোজ্যতেল আমদানি করে থাকে। তবে বর্তমানে সব সক্রিয় নেই। সক্রিয় প্রতিষ্ঠানগুলোই মূলত ভোজ্যতেলের বাজার নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। দেশে ভোজ্যতেলের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে মূলত পাঁচটি পরিশোধনকারী কারখানা। ওই পাঁচ কারখানার মালিকই নির্ধারণ করে বাজারে সয়াবিন তেলের মূল্য কত হবে। তারা ঠিক করে, দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিলে কত কমবে, আদৌ কমবে কি না।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে, আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সমন্বয় করে দাম নির্ধারণ করা হচ্ছে। যখন আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমবে, তখন দেশের বাজারেও কমানো হবে। দেখা গেছে, অনেকসময় আন্তর্জাতিক বাজারে কমলেও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দাম কমায়নি। এ বছরের শুরুতে ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করলে সরকার তাতে সায় না দিয়ে কিছু দিন সময় নেয়; কিন্তু ব্যবসায়ীরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মৌন সম্মতিতে খোলা তেলের দাম সুবিধা অনুযায়ী বাড়িয়ে দেয়।
আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত সয়াবিন ও পাম তেলের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বিবেচনায় তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টদের দাবি। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বেড়েছে; কিন্তু মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়েনি। প্রকৃত চিত্র হলো- দেশে কর্মসংস্থান কমেছে। করোনার প্রভাবে অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। মানুষের বেতন কমে গেছে। সরকার বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে এতে কোনো সন্দেহ নেই; কিন্তু সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা না বাড়লে এসব উন্নয়ন তাদের জীবনে সামান্যতম কোনো ভূমিকা পালন করতে পারবে না।
আমরা মনে করি, ভোজ্যতেলের বাজার যেভাবে ব্যবস্থাপনা করা দরকার, সরকার তা করছে না। হাতেগোনা কয়েকটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান সিন্ডিকেট করে পণ্যটির ব্যবসায় করছে। ওই সব কোম্পানির সাথে সমঝোতার মাধ্যমে ভোক্তাস্বার্থ রক্ষা করার কথা সরকারের; তবে তা করা হচ্ছে না। ফলে তেলের দাম উপর্যুপরি বাড়ছে। ভোক্তাস্বার্থ রক্ষা করতে হলে সরকারকে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিতে হবে। এর বিকল্প কিছু নেই।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা