প্রশাসনের নির্বিকারত্বের ফল
- ০৬ মে ২০২২, ০০:০০
সহযোগী একটি জাতীয় দৈনিক জানায়, নোয়াখালী জেলার কোম্পানিগঞ্জ উপজেলায় মুছাপুর ইউনিয়নে ক্লোজারের সামনে ৬০০ একর সরকারি খাসজমিতে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের মাত্র পাঁচ দিনের মাথায় পুনরায় দখল হয়ে যাচ্ছে। এ দিকে দৃশ্যত প্রশাসন একবার মাত্র উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে ঝিমিয়ে পড়েছে। ফলে তাদের ভূমিকা জনমনে প্রশ্নবিদ্ধ।
জানা গেছে, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভিযান চালানোর মাত্র পাঁচ দিন পার না হতেই আবারো উচ্ছেদকৃত খাসজমিতে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা ঘর তৈরি আরম্ভ করে দিয়েছে। ফলে বাংলাদেশ সরকার শত কোটি টাকার জমি হারাতে চলেছে। জানা যায়, গত ৬ এপ্রিল অবৈধ সব উচ্ছেদ অভিযানে পুলিশের সামনেই দখলকারীরা ভূমি অফিসের লোকদের ওপর হামলা করে এবং তিনজনকে আহত করা হয়। একপর্যায়ে প্রশাসন অবৈধ ঘর উচ্ছেদ করেছে; কিন্তু হামলাকারীদের নামে কোনো মামলা হয়নি। বরং খাসজমিতে নতুন প্রায় ৪০টি অবৈধ ঘর তৈরি করার মধ্য দিয়ে প্রায় দু’সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও রহস্যজনকভাবে ভূমিদুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। অভিযোগ, মুছাপুর ইউপির ৭ নম্বর ওয়ার্ডের একজন মেম্বার ও তার লোকেরা মুছাপুর ইউনিয়নের জনৈক জনপ্রতিনিধির যোগসাজশে ‘ভুয়া’ ভূমিহীন বানিয়ে এ খাসজমি দখলবাণিজ্যে নেমেছেন। এ জন্যই দুই শতাধিক ভিটা তৈরি করা হয়েছে। সেগুলোতেই নতুন ঝুপড়িঘর তৈরি করা হয়েছে। প্রশাসনের একাংশ ও রাজনৈতিক যোগসাজশে এভাবে দখলের তাণ্ডব চালানো হচ্ছে খাসজমিতেই। ২৫ এপ্রিল সরেজমিন দেখা যায়, প্রশাসনিক তদারকি না থাকায়, বিনা বাধায় পূর্বোক্ত ইউপি সদস্যের ভাই তার লোকজনসমেত খাসজমির উপর ঘর বানাচ্ছে। তারা খালে বাঁধ দিয়ে পানিপ্রবাহে বাধা দিচ্ছে। পাশেই লাঠিসোটাধারীদের বেআইনি পাহারা। তারা জানিয়েছে, ‘সংবাদমাধ্যমের লোকদের সেখানে যাওয়া নিষিদ্ধ।’ এ দিকে খাসজমি জবরদখল অব্যাহত রয়েছে। এক ব্যক্তি জানান, ‘মানুষজন ভিটা ভরাট করছে, যারা প্রায় ৪০০ পরিবার।’ এখানে বাড়ি বানানোর কথাও তিনি জানান। তার বক্তব্য, স্থানীয় মেম্বারের নির্দেশেই এ কাজ হচ্ছে। জানা যায়, মেম্বারের ভাই সবাইকে ভিটায় উঠাচ্ছে। প্রত্যেককে চার-পাঁচ হাজার টাকা খরচাপাতির সাথে প্রশাসনকে ‘কিছু’ দিতে হয় বলে জানা গেছে।
২০১৫ সালে সড়কমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা ওবায়দুল কাদেরের প্রচেষ্টায় স্থানীয় নদীতে বাঁধ দেয়া হয়। ফলে প্রায় ৭০০ একর নতুন চর জেগে ওঠে এবং বন বিভাগ সেখানে বৃক্ষ রোপণ করে। তবে এ মন্ত্রী চরে ‘পর্যটন এলাকা’ গড়ার ঘোষণা দিলে সে গাছ সরিয়ে নেয়া হয়েছে। সেখানেই ভুয়া ভূমিহীনের মাধ্যমে ৬০০ একর আবাদযোগ্য ও অনাবাদি খাসজমি এখন দখল করা হচ্ছে। সেখানে একেকটি ভিটা এক একর আয়তনের। ভিটাপ্রতি দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত নেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত ইউপি মেম্বার বলেছেন, ‘টুকটাক কিছু ঘর তৈরি করা হয়েছে। আরো বানানোর চেষ্টা চলছে। এ বিষয়ে ইউএনওকে জানিয়েছি। কিন্তু কী করা যাবে? সামনের সপ্তাহে উচ্ছেদ অভিযান হতে পারে।’ অপর দিকে স্থানীয় প্রশাসন তাকে ‘কারণ দর্শাও’ নোটিশ দিয়েছে এবং তিনি ‘জবাব’ দিয়েছেন। বাঁধটি ফেনী জেলায় পড়েছে বলে তার দাবি। ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, ইউএনও সব কিছু জানেন এবং তিনিই আমাদের অভিভাবক। উপরিউক্ত মেম্বার এ ব্যাপারে জড়িত নন। খোদ ইউএনও বলেন, তিনবার উচ্ছেদ অভিযানের পরও অবৈধ ঘর তৈরি করা হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। হামলার শিকার ব্যক্তি মামলায় আগ্রহীরা নন বলে জানি। আমরা দখলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি। নোয়াখালী জেলা প্রশাসক বলেছেন, কাউকে জবরদখল করতে দেয়া হবে না।
আমাদের দাবি, প্রশাসনকে এসব দখলদারির বিরুদ্ধে শক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে। তারা নির্বিকার থাকলে ভূমিদুর্বৃত্তরা উৎসাহ পায় অবৈধ তৎপরতায়
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা