চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন
- ৩০ এপ্রিল ২০২২, ০০:০০
প্রতি বছরের মতো এবারো বেশ কিছু দিন ধরে ঈদ সামনে রেখে জাল টাকার কারবারিরা তৎপরতা চালাচ্ছে। গোয়েন্দা পুলিশের সূত্র দাবি করছে, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় এমন ১০-১২টি চক্র সক্রিয়।
১২ এপ্রিল রাজধানীর পুরান ঢাকার লালবাগে একটি জাল মুদ্রা তৈরির কারখানায় অভিযান চালায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ সময় প্রায় ২০ লাখ জাল টাকার নোট ও দেড় লাখ জাল ভারতীয় মুদ্রা রুপি জব্দ করা হয়। গ্রেফতার করা হয় চারজনকে। তাদের কাছে জাল টাকা ও রুপি তৈরির ব্যবহৃত বিভিন্ন উপকরণ জব্দ করা হয়। ডিবি পুলিশের এক প্রতিবেদন মতে, ২০১০-২১ সাল পর্যন্ত ২৮৮ জনকে জালনোট কারবারে শনাক্ত করা হয়। এ সময় ৩০৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এর মধ্যে মামলা হয় ১৪৫টি। ১২৪টির অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে। চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়া হয় একটির। তদন্ত চলছে ২০টি মামলার। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, জাল রুপি আসছে বিদেশ থেকে সমুদ্রপথে পণ্যের মোড়কেও। এ চক্রের সাথে জড়িত দেশী-বিদেশী অন্তত ৩০ জন। গত ছয় বছরে ভারতীয় জাল মুদ্রাসহ ২০ জনকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। তাদের মধ্যে ছিল ছয়জন বিদেশী।
একটি আন্তর্জাতিক সংঘবদ্ধ ভারতীয় জাল মুদ্রা পাচারকারী চক্রের দু’জনকে গত বছর ২৬ নভেম্বর গ্রেফতার করে রাজধানীর খিলক্ষেত থানা পুলিশ। ১০ বছর আগে ২০১০ সালের ১৮ জানুয়ারি ডিবি পুলিশের হাতে ১০ লাখ জাল ভারতীয় রুপিসহ গ্রেফতার হয় দেশী-বিদেশী কয়েকজন। এর সাথে জড়িতের শতকরা ৯৯ জনই জামিনে বেরিয়ে ফের একই ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। এবারের ঈদুল ফিতর সামনে রেখে রাজধানীর একাধিক স্থানে বাসা ভাড়া নিয়ে গোপনে চালানো হচ্ছে জাল নোট তৈরির কাজ। এই জাল মুদ্রার নিরাপত্তা সুতা জোড়া লাগানো হয় আইকা বা অন্যান্য গাম দিয়ে। ছবি মূল টাকা থেকে স্ক্যান করে পেনড্রাইভে নিয়ে রাখা হয়। নিরাপত্তা সুতা তৈরির জন্য ডায়াস কিনে আনে প্রতারকরা। জলছাপ দেয়া হলে দু’টি বিশেষ ধরনের কাগজ একসাথে জোড়া দিয়ে শুকিয়ে এরপর টাকা ছাপাতে দেয়া হয়। প্রতি লাখ জাল নোট ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়। জাল মুদ্রার নোট কিনে প্রতারকেরা তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকা লাভে বিক্রি করে। নওগাঁ, নাটোর, বগুড়াসহ দেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের অনেকের মাধ্যমে এসব সরবরাহ করা হয়। শহরের ব্যস্ততম এলাকায় রেস্টুরেন্ট, ভোজ্যসামগ্রী, প্রসাধন, পরিধেয় বস্ত্র ইত্যাদি কেনাবেচার সময় ভালো টাকার মাঝে জাল নোট ঢুকিয়ে দেয়া হয়।
ডিবি পুলিশের সূত্র মতে, আট জেলায় জাল টাকা সরবরাহ করা হয়। আর জাল রুপি সরবরাহ করা হয় তিন জেলায়। এ ছাড়া তিন ধরনের জাল নোটের খোঁজ মিলেছে। ঢাকার মানুষ তুলনামূলকভাবে সচেতন। তাই রাজধানীর বাইরে জাল নোটের কারবার করছে ওই চক্রের সদস্যরা। ডিবির অনুসন্ধানে জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, কুড়িগ্রাম, শরীয়তপুর, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, নারায়ণগঞ্জ, খুলনা ও সিরাজগঞ্জে জাল টাকার কারবার করা হয়। আর চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ ও লালমনিরহাটে হয় জাল রুপির কারবার।
বিশ্বমন্দায় দেশের অর্থনীতিতেও এমনিতেই নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এতে করে বেশির ভাগ মানুষের জীবন চালানোই দায় হয়ে উঠেছে। এমন বাস্তবতায় মানুষজন প্রতিনিয়ত নানা কায়দায় প্রতারিত হচ্ছেন। আর ঈদে প্রতি বছরই উপদ্রব হিসেবে দেখা দেয় জাল মুদ্রার কারবারিদের তৎপরতা। এর ফলে অনেকে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন। অথচ প্রতি বছর পুলিশের তরফ থেকে বলা হয় এ চক্রকে সায়েস্তা করতে কোনো ছাড় দেয়া হবে না। আশা করা যায়, পুলিশ জাল মুদ্রা তৈরির চক্র ভাঙতে কঠোর পদক্ষেপ নেবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা