২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
আলীকদমে খাবার পানির তীব্র সঙ্কট

যথাসময়ে প্রকল্প নিতে হবে

-

প্রতি বছরের মতো এবারো খাবার পানির তীব্র সঙ্কট চলছে বান্দরবানের আলীকদমে। উপজেলায় স্থাপিত বেশির ভাগ রিংওয়েল ও টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। এতদিন যেসব রিংওয়েল, কূপ কিংবা ঝিরি-ছড়া থেকে খাবার পানি পাওয়া যেত, এখন সেগুলোতে পানি আসছে না। ফলে দুর্ভোগে পড়েছে মানুষজন। দুর্গম এলাকার অবস্থা আরো ভয়াবহ। অন্য দিকে প্রতি গ্রীষ্মে পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয় বহু মানুষ। প্রতি বছর শুষ্ক মৌসুমে এ উপজেলায় পানীয় জলের সঙ্কট দেখা দিলেও সমাধানের কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।
এখানকার বেশির ভাগ পরিবার ঝিরি-ছড়া, খাল ও নদীর পানি ব্যবহার করে। তীব্র গরমে এসব উৎসের পানি দূষিত হয়ে পড়ে। আবার বেশির ভাগ ঝিরিই শুকিয়ে যায়। এ সঙ্কট নিরসনে বিভিন্ন সময় সরকারি-বেসরকারিভাবে রিংওয়েল ও টিউবওয়েল বসানো হয়। কিন্তু সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার অভাবে বেশির ভাগই অকার্যকর হয়ে পড়ে থাকে। বিশেষ করে গ্রীষ্মে বেশির ভাগ রিংওয়েল অকেজো থাকে। ফলে খাবার পানির দুর্ভোগ কাটে না পাহাড়ের মানুষের।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, গত ২০ বছরে এই জনপদের ভূপৃষ্ঠ থেকে দুই মিটার উচ্চতায় বায়ুর গড় তাপমাত্রা শূন্য দশমিক ৫ থেকে ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বেড়েছে। বিশেষ করে গত সাত বছরে তাপমাত্রা বেড়েছে দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াস। বায়ুর তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় মাটির তাপমাত্রাও বেড়েছে। মাটির উপরিভাগের পানি বাষ্প হয়ে যাচ্ছে শুকিয়ে। শুষ্ক মৌসুমে নদী ও ছড়াগুলোতে পানিপ্রবাহ কমে যাচ্ছে। অনেক ঝিরিতে বইছে সামান্য পানি। কোনোটি একেবারে শুকিয়ে গেছে। খাবার পানির সঙ্কট মেটাতে ঝিরির পাশে ছোট ছোট কূপ করে কলসি ভরে নিয়ে ওই পানি ব্যবহার করছেন স্থানীয়রা। তবে বিশুদ্ধ না হওয়ায় ওই পানি পান করে অনেকেই ডায়রিয়া, টাইফয়েডসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। কোনোমতে চলছে গোসলসহ দৈনন্দিন কাজ।
প্রাকৃতিক বৈরিতার কারণে টিউবওয়েল বসালেও অতিরিক্ত আয়রনযুক্ত পানি ওঠায় তা খাওয়া বা ব্যবহারের অনুপযোগী। এ কারণে বেশ কিছু টিউবওয়েল থাকলেও বেশির ভাগই অকেজো। বর্ষা মৌসুমে রিংওয়েলগুলো স্থাপন করা হয়। তখন বৃষ্টির পানিতে পাহাড় ভেজা থাকায় কম গভীরতায় পানি পাওয়া যায়; কিন্তু গ্রীষ্মে পানির স্তর নিচে নেমে যায়। ফলে রিংওয়েলগুলো অকেজো হয়ে পড়ে।
বাস্তবে এলজিইডি কিংবা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর থেকে যেসব প্রকল্প নেয়া হয় তা উপজেলা সদরকেন্দ্রিক। অন্য দিকে উপজেলার কয়েক শতাধিক পাহাড়ি গ্রামে অন্তত ১৫ হাজার পরিবার বসবাস করে। সেখানে নিরাপদ পানির উৎস নেই। সরকারি বরাদ্দে সেখানে কোনো রিংওয়েল কিংবা টিউবওয়েল স্থাপন করা হয়নি। ফলে গ্রীষ্ম মৌসুম আসতে না আসতে বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট দেখা দেয়। কৌতূহলোদ্দীপক হলো, এ দু’টি সরকারি প্রতিষ্ঠান পানির উৎস সৃষ্টির প্রকল্প হাতে নিলেও তা বাস্তবায়ন করে বৃষ্টি শুরুর পর, যাতে ৩০-৪০ ফুট মাটির গভীরে গেলেই পানি পাওয়া যায়। চলতি অর্থবছরে আলীকদম এলজিইডি থেকে উপজেলা সদরে পাঁচটি রিংওয়েল স্থাপনে ২২ এপ্রিল বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে। প্রকল্পগুলো স্থাপনে দরপত্র খোলার তারিখ দেখানো হয়েছে ৬ মে। প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়সীমা ধরা হয়েছে ৪৫ দিন। সে হিসাবে এটা স্পষ্ট, প্রকল্প বাস্তবায়নে চলতি অর্থবছরের জুন মাসও শেষ হয়ে যাবে! তখন শুরু হবে বর্ষা।
আমরা মনে করি, আলীকদমে শুষ্ক মৌসুমে পানীয় জলের সঙ্কটের স্থায়ী সমাধান করতে হবে। এ জন্য উপজেলা সদরে পানি শোধনাগার নির্মাণ করে তা চালু করতে হবে। একই সাথে দুর্গম এলাকায় যেসব প্রকল্প বর্ষা মৌসুমে নেয়া হয় তা আগেই নিতে হবে। পাশাপাশি প্রাকৃতিক জলাধারগুলো যথাযথভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। তাতে পানির উৎসগুলো বহমান থাকবে। এতে অনেকাংশেই এ অঞ্চলে পানির অভাব মোটানো সম্ভব হবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
আইনজীবী হত্যায় উত্তাল চট্টগ্রাম জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে : ড. ইউনূস বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে বিভক্ত না হতে মাহাথিরের আহ্বান ইসরাইল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর তিন মাস পার হলেই সব ঋণ খেলাপি মিয়ানমারের জেনারেল মিন অংয়ের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা চাইলেন আইসিসির প্রসিকিউটর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালাস পেলেন খালেদা জিয়া কিছু মানুষ জাতিকে বিভাজনের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন : ফখরুল আইনজীবীর হত্যাকারী ‘বঙ্গবন্ধু সৈনিক’ শুভ কান্তি দাস কে? এশিয়া ডেমোক্র্যাসি অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস অ্যাওয়ার্ড পেল অধিকার চিন্ময় ইস্যুতে ভারতের বিবৃতি দেয়া অনধিকার চর্চা : উপদেষ্টা নাহিদ

সকল