ফেরি রুটটির প্রতি বিমাতাসুলভ আচরণ কেন?
- ২৭ এপ্রিল ২০২২, ০০:০০
নয়া দিগন্তের রাজবাড়ী প্রতিনিধির পাঠানো এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ফেরি রুটে সরকারের আয় পাঁচ গুণ হলেও বিগত পাঁচ বছরে এখানে ফেরি বেড়েছে মাত্র দু’টি। কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে উদাসীন থাকায় পরিস্থিতি আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে চরমে পৌঁছাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তখন মানুষের ভোগান্তির সীমা-পরিসীমা থাকবে না।
জানা যায়, যমুনা ও পদ্মার সম্মিলনস্থলের আরিচা (পাটুরিয়া)-দৌলতদিয়া ফেরি রুটটি দেশের ফেরি রুটগুলোর মধ্যে খুব গুরুত্বপূর্ণ বলে পরিগণিত। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বেশ কয়েকটি জেলার মানুষ এর ওপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল। এই রুটে পাঁচ বছর আগে দিনে দুই থেকে আড়াই হাজার ছোটবড় যানবাহন পারাপার করা হতো। তখন ছিল ফেরি ১৭টি। এখন যানবাহনের চাপ অনেক বাড়ছে; কর্তৃপক্ষের আয় তাই বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় পাঁচ গুণ; তবে কার্যত ফেরি বাড়েনি। তবে মাত্র দু’টি বাড়ানোর কথা জানা গেলেও ‘যান্ত্রিক ত্রুটি’র দরুন দু’টি ফেরি অকার্যকর হয়ে রয়েছে। সেগুলো পাটুরিয়ায় ‘মধুমতি’ নামের ভাসমান কারখানায় এখন মেরামত করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। তাই ১৭টি ফেরি দিয়ে এই সদাব্যস্ত ফেরি রুটে কোনো মতে কাজ চালাতে হয়। ফেরির অপর্যাপ্ততার দরুন প্রত্যহই ফেরিঘাটে দেখা যায়, গাড়ি দীর্ঘ সারিতে দাঁড়িয়ে আছে। বর্তমানে এই রুট দিয়ে সাড়ে পাঁচ হাজারেরও বেশি যাত্রী দিনে পারাপার হচ্ছেন। ফলে টোল আদায় বেড়ে দাঁড়িয়েছে দিনে অর্ধ কোটি টাকার মতো। তবুও কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ, বড় কোনো ফেরি এখানে বৃদ্ধি করার ব্যাপারে কোনো আগ্রহ নেই তাদের। এ দিকে যানচালক ও যাত্রীদের দুর্ভোগ সীমা ছাড়িয়ে গেছে এই ফেরি রুটে। বিরূপ আবহাওয়ার দরুন তাদের ভোগান্তি কয়েকগুণ বেড়ে যায়। ঠিক সে সময়েই একশ্রেণীর দালালের দৌরাত্ম্য চোখে পড়ে। তারা এ অবস্থায় বিভিন্ন অজুহাতে ফেরি নোঙর করে রাখে ঘাটেই। এর ফলে যানজটের প্রচণ্ডতা ও জনদুর্ভোগ আরো বাড়ে। এবার ঈদের সময়ে ফেরিঘাটে যানের সারি বহুগুণ বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশেষত সাপ্তাহিক ছুটি দু’দিন হওয়ায় ফেরিতে যানবাহনের চাপ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।
রাজবাড়ী জেলার দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় নদী পারাপারের জন্য প্রতীক্ষায় আটকে থাকে পাঁচ শতাধিক যানবাহন। এই ফেরিঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে মহাসড়কের গোয়ালন্দ বাজার পর্যন্ত ছয় কিলোমিটার-জুড়ে ঈদের কয়েক দিন আগেই যানজট এবার সৃষ্টি হয়ে গেছে। ফেরির দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ হলো, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থা বা বিআইডব্লিউটিসি। তাদের স্থানীয় সূত্র দাবি করেছে, পচনশীল পণ্যবাহী যান, যাত্রীবাহী যান ও জরুরি যানবাহনকে তারা আগে পার হতে দিচ্ছেন। তবে এ পথে রাতে মাত্র ১০টা থেকে ১২টা ফেরি চালু থাকাকে ওয়াকিবহাল মহল অপ্রতুল মনে করছে। এতে ফেরি চলাচল ব্যাহত হয়ে অধিক অচলাবস্থা সৃষ্টি হয় বলে দাবি করা হচ্ছে। সপ্তাহে দু’দিনের নিয়মিত ছুটি, দীর্ঘ দিন ফেরির অভাব এবং ক্রমবর্ধমান যানের চাপ মিলে জট দুঃসহ হয়ে উঠছে। তবে কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, যানবাহন ‘নিয়ম মোতাবেক’ পার করা হচ্ছে। রাজধানীগামী গাড়ির চাপ ক্রমেই বেশি বলে তারাও স্বীকার করেছেন। ফলে প্রতিদিনই এখানে যানজট। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে অন্তত পাঁচটি ফেরি বাড়ানো প্রয়োজন বলে অভিমত দেয়া হচ্ছে।
আমাদের প্রত্যাশা, জনগণের অসুবিধা বিবেচনাপূর্বক এই অতীব গুরুত্ববহ ফেরি রুটের প্রতি সবধরনের বিমাতাসুলভ আচরণের অবিলম্বে অবসান ঘটবে। তা হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জনসেবার দায়িত্ব পালনে উদ্বুদ্ধ হবে সহজেই।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা