২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
খামার ও কৃষির নীরব বিপ্লব

সাফল্যের শিখরে নিতে হবে

-

নয়া দিগন্তের বেড়া সংবাদদাতার এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘পদ্মা-যমুনার চরে নীরব বিপ্লব ঘটিয়ে চলেছেন নদীভাঙা মানুষরা। একসময় যে নদী ছিল তাদের দুঃখের কারণ, সে নদীর বুকে জেগে ওঠা চরই বদলে দিয়েছে তাদের ভাগ্য। ভাঙনকবলিত মানুষ অক্লান্ত পরিশ্রমে অসম্ভবকে সম্ভব করে তুলছেন। নদীর পলিভরা চরে তারা ফলিয়েছেন বাদাম, সরিষা, তিল, তিসি, শাকসবজি, কলা ও কুলসহ বিভিন্ন ফসল। গড়ে তুলেছেন ছোট ছোট গো-খামার। এসব খামারের দুধ-গোশত ও কৃষিপণ্য বদলে দিচ্ছে তাদের ভাগ্য।’
পাবনা সদর, ঈশ্বরদী, সুজানগর ও বেড়া উপজেলা এবং সিরাজগঞ্জ জেলার সদর, কাজীপুর, চৌহালী ও শাহজাদপুর উপজেলায় যমুনা ও পদ্মার বুকে জেগে ওঠা বহু চরে ভাঙনকবলিত মানুষের গড়া গো-খামারগুলো থেকে প্রতিদিন প্রায় দেড় লাখ লিটার দুধ উৎপন্ন হচ্ছে। এই দুধ চরবাসীর চাহিদা মিটিয়ে জেলা ও উপজেলার হাটবাজারেও দেদার বিক্রি হচ্ছে। সরবরাহ করা হচ্ছে সরকারি ও বেসরকারি দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতকরণ নানা প্রতিষ্ঠানে। নদীভাঙনে নিঃস্ব পরিবারগুলোর ভিটাও ছিল না। তাই বাধ্য হয়ে তারা এসব উপজেলায় দু’নদীর চরে বসত গড়ে তোলে। কেউ কেউ পরের জমিতে কামলা খেটে এবং বর্গাচাষ করে কোনোমতে পরিবার চালাতেন। হয়তো দু’বেলা তাদের খাবারও জুটত না। এমন একজন হলেন আলিম, যার একবেলা খাবার জুটলে আরেক বেলায় জুটত না মাত্র ১৫ বছর আগেও। আজ তার বাড়িঘর ও জমিজমা আছে। তিনি বর্তমানে সচ্ছল। কারণ অন্তত ১০ লাখ টাকার সম্পদ আছে তার। জাদুর প্রদীপ নয়, গরুই তার ভাগ্য পরিবর্তনের হোতা। তিনি জানান, এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে দু’টি বকনা বাছুর কিনেছিলেন। এখন তার গোয়ালে অর্ধডজন গাভী। দিনে পান এগুলো থেকে দেড় মণ দুধ। গরুর লালনপালন করাই তার কাজ। তার মতো অনেকের অবস্থা ফিরেছে যমুনা ও পদ্মার চরাঞ্চলে।
পাবনার বেড়ার নাকালিয়া বাজার দুই জেলার তিন উপজেলার কমপক্ষে ৪০টি চরের প্রধান ব্যবসায় কেন্দ্র। এটা যমুনা তীরবর্তী। এখানে জনৈক শিক্ষক জানালেন, আগে স্থানীয় চরে এত বেশি গরু ছিল না এবং গুটিকয়েক পরিবার পালন করত উন্নত গাভী। ভালো আয় এবং ব্যাপক লাভ দেখে অনেকেই গরু পালন ও মোটাতাজাকরণে উৎসাহী হয়ে ওঠেন। এখন চরের সব বাড়িতে গরুর খামার। এভাবে ২৫টি চরে গরু বিপ্লব ঘটিয়ে দিয়েছে।
পাবনা জেলার বেড়া, সাঁথিয়া, ফরিদপুর, ভাঙ্গুড়া এবং পাশের সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর ও উল্লাপাড়া উপজেলায় বাংলাদেশের দুগ্ধ উৎপাদক ও গোপালন প্রধান এলাকা। এখানে খামার প্রতিষ্ঠাকারী এবং গরু পালনকারী এত বাড়ছে যা বিস্ময়কর। এর বড় কারণ, এখানে এজন্য ব্যয় কম, লাভ বেশি। অথচ বছরজুড়ে গরুকে কিনে খাওয়াতে হয়। কারণ গরুর তুলনায় কাঁচা ঘাস কম। তবে এখানকার চরাঞ্চলে বছরের আট মাসই মেলে কাঁচা ঘাস প্রায় বিনামূল্যে। কাঁচা ঘাস খেলে গরু দুধ দেয় বেশি। এখন ঢালারচরসহ এখানকার বহু চরই গরু পালন করার আদর্শ স্থান। বেড়া উপজেলায় সবচরই এর জন্য আদর্শ জায়গা। চরগুলোতে মোট লোকসংখ্যা প্রায় ৮০ হাজার। স্থানীয় হাটবাজারসহ সংশ্লিষ্ট কারখানা ও দোকানেও প্রচুর দুধ সরবরাহ করা হয় চর থেকেই। সরকারের প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারাও বিস্মিত গরু পালনের সাফল্য দেখে।
এ সাফল্য শিখরে পৌঁছার অনুকূল পরিবেশ অবিলম্বে করে দেয়া হবে বলে আমরা আশাবাদী। তা হলেই চরবাসীর পরিশ্রম সার্থক হবে।


আরো সংবাদ



premium cement
আইনজীবী হত্যায় উত্তাল চট্টগ্রাম জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে : ড. ইউনূস বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে বিভক্ত না হতে মাহাথিরের আহ্বান ইসরাইল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর তিন মাস পার হলেই সব ঋণ খেলাপি মিয়ানমারের জেনারেল মিন অংয়ের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা চাইলেন আইসিসির প্রসিকিউটর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালাস পেলেন খালেদা জিয়া কিছু মানুষ জাতিকে বিভাজনের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন : ফখরুল আইনজীবীর হত্যাকারী ‘বঙ্গবন্ধু সৈনিক’ শুভ কান্তি দাস কে? এশিয়া ডেমোক্র্যাসি অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস অ্যাওয়ার্ড পেল অধিকার চিন্ময় ইস্যুতে ভারতের বিবৃতি দেয়া অনধিকার চর্চা : উপদেষ্টা নাহিদ

সকল