সারা দেশে টিকাদান কর্মসূচি নিন
- ১৬ এপ্রিল ২০২২, ০০:০০
রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েই চলেছে। একসময় দেশে কলেরা বা ডায়রিয়া মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ত। এই রোগ নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ এখন বিশ্বব্যাপী নন্দিত। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ডায়রিয়া বা কলেরায় মৃত্যু নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে এবার আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা হঠাৎ করে বেড়েছে। ডাইরেক্টরেট জেনারেল অব হেলথ সার্ভিসেস (ডিজিএইচএস) এবং আইসিডিডিআর,বির তথ্যমতে, গত ছয় সপ্তাহে সারা দেশে কমপক্ষে ৩৪ জন ডায়রিয়ায় মারা গেছেন। আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নেন প্রায় দুই লাখ আক্রান্ত। শুধু আইসিডিডিআর,বির মহাখালী কলেরা হাসপাতালে হাজারও রোগী ভর্তি হচ্ছে। সারা দেশের হাসপাতালগুলোতেও ডায়রিয়া রোগীর চাপ বাড়ছে।
প্রতি বছর গরম এলেই ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ে। গরমে শহরাঞ্চলে পানির স্বল্পতা দেখা দেয়। সাধারণত পানিবাহিত জীবাণুর মাধ্যমে ডায়রিয়া হয়। গরমের সময় রাস্তাঘাটে, হাট-বাজারে, যানবাহনে দূষিত পানি ও শরবত পানের প্রবণতা বাড়ে। লক্ষণীয়, এবার চৈত্রের শুরু থেকেই সারা দেশে প্রচণ্ড গরম পড়েছে। এতে বেড়ে গেছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। এ ছাড়া এবার করোনার প্রকোপ কমায় মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, বিশেষ করে হাত ধোয়ায় অনীহা ডায়রিয়া বেড়ে যাওয়ার একটি কারণ। আইসিডিডিআর,বি বলছে, এবার ডায়রিয়ার অন্যতম কারণ দূষিত পানি। দূষিত পানি ও খাবারের মাধ্যমে এ জীবাণু ছড়ায়। অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ, মাছি, হোটেল-রেস্তোরাঁয় খাবার প্রস্তুত ও পরিবেশনে অপরিচ্ছন্নতা ডায়রিয়া প্রাদুর্ভাবের জন্য দায়ী।
সাবধানতা অবলম্বনের পরও এ বছর অনেকে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন। তবে ডায়রিয়া হলে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এতে আক্রান্ত হলে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হয়, বারবার খাবার স্যালাইন খেতে হয়। সাথে অন্যান্য তরল যেমন পানি, ডাবের পানি, চিঁড়ার পানি ইত্যাদি খেতে হয়। পানিশূন্যতা যেন না হয়, সে দিকে নজর দেয়া অতীব জরুরি, বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধদের ক্ষেত্রে। চিকিৎসকদের মতে, ডায়রিয়ার সময় স্বাভাবিক খাবার গ্রহণ করতে হবে। সহজপাচ্য ও পরিচ্ছন্ন খাবার খেতে হবে। শিশুদের মায়ের বুকের দুধ বন্ধ করা যাবে না। সবধরনের পুষ্টিগুণসম্পন্ন খাবার গ্রহণ করতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধ সেবন করা সমীচীন নয়।
ডায়রিয়া সাধারণত এমনিতে সেরে যায়। শুধু পানিশূন্যতা রোধে যথেষ্ট পরিমাণে স্যালাইন ও তরল খেলেই হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কোনো ওষুধ লাগে না। তবে কয়েকটি কারণে রোগীকে চিকিৎসক অথবা হাসপাতালে নিতে হতে পারে। যেমন পানিশূন্যতার পাশাপাশি বারবার বমি, জ্বর, পেটে ব্যথা, পেট ফুলে যাওয়া ও পায়খানার সাথে রক্ত গেলে। বিশেষ করে শিশুদের বিষয়ে সতর্ক হওয়া জরুরি।
ডায়রিয়া যেহেতু খাবার ও পানীয়ের মাধ্যমে ছড়ায়, তাই অবশ্যই বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। বাইরের পানি ও খাবার পরিহার করতে হবে। রাস্তার ধারের সব ধরনের খাবার ও বাসি খাবার বর্জন করতে হবে। পানি ফুটিয়ে পান করা সবচেয়ে নিরাপদ। খাওয়ার আগে ও টয়লেট ব্যবহারের পর সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে। একই সাথে ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা খুব জরুরি।
এবার ডায়রিয়া বেড়ে যাওয়ায় তা নিয়ন্ত্রণে আনতে কিছু উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এরই মধ্যে রাজধানীতে কলেরা ও ডায়রিয়ার পাঁচটি ঝুঁকিপূর্ণ স্থান চিহ্নিত করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। এসব স্থানে জনগণকে ২৩ লাখ ডোজ টিকা দেয়া হবে। দুই ডোজের টিকা কর্মসূচির প্রথম ডোজ দেয়া হবে মে মাসে। জুনে দেয়া হবে দ্বিতীয় ডোজ। তবে আমরা মনে করি, শুধু ঢাকা নয়; সারা দেশে যেসব স্থানে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে সেসব স্থান চিহ্নিত করে দ্রুত টিকাদান কর্মসূচির আওতায় আনতে হবে। কেবল তাহলেই সম্ভব অল্প সময়ে সারা দেশে ডায়রিয়ার প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে আনা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা